Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Visva Bharati

বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বিরুদ্ধে নেতাজিকে অসম্মানের অভিযোগ

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বইটির বিভিন্ন জায়গায় নেতাজির দেশ এবং দুনিয়া জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিপুল কর্মকাণ্ড নিয়ে বিদ্যুৎ যে পর্যালোচনা করেছেন তা ‘অসম্মানজনক’।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:০১
Share: Save:

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে তিন দশক আগে তিনি একটি বই লিখেছিলেন। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর লেখা সেই বই-ই এ বার বিতর্কের মুখে। ওই বইয়ে নেতাজি সম্পর্কে যে মূল্যায়ন করা হয়েছে তা ‘অত্যন্ত অবমাননাকর’ বলে অভিযোগ তুলেছেন অনেকে। বিদ্যুৎ যদিও এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

১৯৯০ সালে ‘লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স আন্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স’ থেকে প্রকাশিত হয়েছিল ‘সুভাষচন্দ্র বোস আন্ড মিডলক্লাস র‍্যাডিক্যালিজম’ নামে বিদ্যুতের লেখা ওই বইটি। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বইটির বিভিন্ন জায়গায় নেতাজির দেশ এবং দুনিয়া জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিপুল কর্মকাণ্ড নিয়ে বিদ্যুৎ যে পর্যালোচনা করেছেন তা ‘অসম্মানজনক’। এ নিয়ে বইটির বিভিন্ন জায়গা থেকে একাধিক উদাহরণও তুলে ধরছেন জয়দীপ।

ওই আইনজীবীর মতে, বইয়ের ৪৯ নম্বর পাতায় নেতাজিকে ‘সেকেলে’ বা ‘পশ্চাৎমুখী’ ব্যক্তি হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে নীরদচন্দ্র চৌধুরীর পর্যবেক্ষণ ‘সঠিক’, এমনটা বইতে লেখা বলে দাবি জয়দীপের৷ তাঁর বক্তব্য, ‘‘বইয়ে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় ও প্রাদেশিক স্তরে নেতা হিসাবে নেতাজি সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছিলেন’৷ ‘নেতাজির আদর্শ নিহিত তাঁর সন্ত্রাসবাদী মনোভাবের মধ্যে’, এমন কথাও লেখা হয়েছে।’’

জয়দীপ আরও বলছেন, ‘‘ওই বইয়ের ৬৬ নম্বর পাতায় লেখা হয়েছে, ‘নেতাজি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিভেদকামী নীতির বিরুদ্ধে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেননি। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি হিন্দু এবং মুসলমানকে এক ছাতার তলায় আনতে ব্যর্থ হয়েছিলেন’। কিন্তু, সুভাষচন্দ্র বসুর মতো এই মাপের মানুষ সম্পর্কে এ সব বলা ঠিক নয়।’’

জয়দীপ আরও উদাহরণ দিচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বইয়ের ১০০ নম্বর পাতায় বিদ্যুৎবাবু বাংলায় স্বাধীনতা সংগ্রামে শ্রমিক শ্রেণিকে যুক্ত করতে না পারার জন্য নেতাজিকে দোষারোপ করেছেন৷ আবার ১৬০ নম্বর পাতায় লিখেছেন, ‘টিসকো-য় হরতালের সময় নেতাজি দেশীয় পুঁজিপতিদের স্বার্থরক্ষা করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ব্রিটিশের স্বার্থরক্ষা করেননি। আবার বইয়ের ১৬১ নম্বর পাতায় ‘নেতাজি এক জন মধ্যবিত্ত নেতা, যিনি উপর থেকে কর্তৃত্ব পছন্দ করতেন’, কিংবা তাঁকে ‘বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় খুব একটা মেনে পারেননি’— নেতাজি সম্পর্কে এ সব কথা অপমানজনক।’’

কিন্তু ৩০ বছর আগে প্রকাশিত একটি বই নিয়ে ‘প্রতিবাদ’ জানাতে এত দেরি কেন? জয়দীপের উত্তর, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার গঠিত নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকীর উদ‌্‌যাপন কমিটির সদস্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। অথচ দুর্ভাগ্যের বিষয়, তাঁর নিজেরই নেতাজি সম্পর্কে মূল্যায়ন এমন। তিনি এই কমিটিতে এলেন কী ভাবে? নেতাজিকে নিয়ে এমন রুচিহীন মন্তব্যের চূড়ান্ত নিন্দা করছি।’’

জয়দীপের অভিযোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানার জন্য বিদ্যুতের সঙ্গে নানা ভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। বুধবার তিনি এসএমএস করে জানিয়েছেন, ‘দয়া করে বইটি পড়ুন এবং নিজেই পর্যালোচনা করুন’। এর বেশি কিছু বলতে নারাজ তিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy