—প্রতীকী ছবি।
ভূত চতুর্দশীর রাতে শব্দবাজির ভূত যেন অনেকটাই স্তিমিত দক্ষিণবঙ্গে। যদিও উত্তরে কয়েকটি এলাকায় বাজি ফাটার শব্দ ভাল মতোই পাওয়া গিয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। কেন হঠাৎ এমন ভোলবদল? সূত্রের দাবি, দক্ষিণবঙ্গে নদিয়া-মুর্শিদাবাদের মতো কয়েকটি জায়গায় আতশবাজি বা সবুজ বাজির চাহিদা কম থাকায় অনেক ব্যবসায়ী এ বছর বাজি ব্যবসা থেকে মুখ ফিরিয়েছেন। জেলা প্রশাসনগুলি বাজির বাজার নির্দিষ্ট করে দিলেও, সেখানে ব্যবসায়ীদের দেখা মিলেছে তুলনায় অনেকটা কম। পাশাপাশি, বহু ক্ষেত্রেই পুলিশ-প্রশাসনকে তৎপর হতে দেখা গিয়েছে।
শনিবার রাত পর্যন্ত দুই মেদিনীপুরে শব্দবাজির বিক্রি এবং বাজি ফাটানো রোধে জেলা জুড়ে কড়া নজরদারি চালিয়েছে পুলিশ। রাত পর্যন্ত রেলশহর খড়্গপুরের কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে শব্দবাজির আওয়াজ কানে এলেও, মেদিনীপুর শহর-সহ জেলায় সে ভাবে শব্দবাজি সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ আসেনি। তমলুক-সহ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্তেও বিক্ষিপ্ত ভাবে শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগ সামনে এসেছে। তবে ঝাড়গ্রাম জেলায় শনিবার রাত পর্যন্ত শব্দবাজি ফাটানোর আওয়াজ সে ভাবে মেলেনি।
পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত শব্দবাজির উপদ্রব নেই। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজি নিয়ে এখনও কোনও অভিযোগ মেলেনি। বীরভূমেও রাজনগর থেকে রাজগ্রাম, বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এ বার কালীপুজোর আগের সন্ধ্যায় শব্দবাজির দাপট অনেকটা কম। বিশেষ করে জেলার ছ’টি পুর এলাকায় শব্দবাজির আওয়াজ সন্ধ্যা নামার পরেও শোনা যায়নি বললেই চলে। রামপুরহাটে সন্ধ্যায় মাঝেমধ্যে একটা-দুটো শব্দবাজির আওয়াজ শোনা গিয়েছে। মুরারই এলাকায় কিছুটা পাওয়া গেলেও আগের মতো সেই দাপট নেই।
শব্দবাজির চেনা দাপট নেই বারাসত ১, আমডাঙা ও দেগঙ্গা ব্লক এলাকাতেও। মনে করা হচ্ছে, দত্তপুকুরের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের প্রভাব এই এলাকাগুলিতে পড়েছে। যে এলাকায় কালীপুজো উপলক্ষে আকাশ ঝলসে উঠত বাজির আলো ও শব্দে, মোমবাতি এবং প্রদীপের সঙ্গে বিক্রি হত বাজি, সেখানে এ বারের ছবিটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। পুলিশের ধরপাকড়ের জেরে কোনও ব্যবসায়ী বাজি বিক্রি করছেন না। যদিও, নানা সূত্রে খবর, দত্তপুকুর থানার জালশুখা ও নীলগঞ্জ এলাকায় বেশ কিছু বাড়িতে তৈরি হচ্ছে বাজি। বারাসত পুলিশ জেলার সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘বাজির তল্লাশি অভিযান চলছে। ইতিমধ্যে কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
সন্ধ্যা ৬টার পরে কাকদ্বীপ মহকুমা এলাকার কিছু জায়গায় শব্দবাজির শব্দ শোনা গেলেও তা গত বছরের থেকে অনেকটাই কম বলে দাবি এলাকার বাসিন্দাদের। তবে শনিবার ক্যানিংয়ে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শব্দবাজির আওয়াজ বাড়তে থাকে। হুগলির শ্রীরামপুর, চন্দননগর, চুঁচুড়াতে বাজি ফেটেছে। ব্যবসায়ীদের কয়েক জনের দাবি, পুলিশের কড়াকড়িতে এ বার বিক্রি কম। শুক্রবার রাতে বৈঁচির পিরতলা থেকে ৪৫ কিলোগ্রাম নিষিদ্ধ বাজি-সহ এক বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে পান্ডুয়া থানার পুলিশ। গ্রামীণ হাওড়ায় শনিবার বাজির আওয়াজ তেমন শোনা যায়নি। বাসন্তী ও গোসাবা এলাকায় সে ভাবে শব্দবাজি ফাটতে শোনা যায়নি। হাসনাবাদ, সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ এলাকাতেও বিভিন্ন বাজারে বাজির দেখা নেই। শব্দবাজি একেবারে অমিল। সন্ধ্যার সময় বাজির শব্দও শোনা গেল না।
তবে উত্তরবঙ্গের ছবি অন্য রকম। চতুর্দশীর রাতেই শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে ইতিউতি পুড়ল শব্দবাজি। পুলিশের তৎপরতা সত্ত্বেও শহর লাগোয়া বিভিন্ন খুচরো দোকানে নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ। দীপাবলির আগে শিলিগুড়ির বিভিন্ন জায়গায় এখনও দেদার বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে নিষিদ্ধ বাজি। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের তরফে নানা জায়গায় অভিযান চালিয়ে লক্ষাধিক টাকার নিষিদ্ধ বাজি ও শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও বিভিন্ন এলাকায় যে ভাবে শব্দবাজি বিক্রি হচ্ছে, তাতে এ বছরও কালীপুজোর রাতে ও দেওয়ালিতে শহরে শব্দদানবের তাণ্ডব থাকবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy