কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ফাইল চিত্র
আসানসোল পুরবোর্ড গঠন ও হাওড়া পুরসভার ভোট নিয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারলেন না পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শনিবার কলকাতায় পুরসভায় এই দুই পুরসভা নিয়েই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। আসানসোল পুরবোর্ড গঠন নিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘‘আসানসোল পুরসভার নেতৃত্বের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। আশা করছি, দ্রুতই এ বিষয়ে কিছু করা সম্ভব হবে।’’ তারপরেই হাওড়া পুর নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে যা বলার রাজ্যপাল বলতে পারবেন।’’
প্রসঙ্গত, ভোট শেষে মেয়র পদে শপথগ্রহণের পরেও কেটে গিয়েছে প্রায় তিন মাস। কিন্তু এখনও আসানসোলে পুরবোর্ড গঠন হয়নি। কবে হবে সেই উত্তর দিতে পারছেন না আসানসোলের মেয়র থেকে শুরু করে খোদ পুরমন্ত্রীও। এ ব্যাপারে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। পাল্টা রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কোর্টে বল ঠেলেছে শাসক তৃণমূল। বোর্ড গঠন না হলে পুর পরিষেবায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। গত ২ ফেব্রুয়ারি পুরভোট হয় আসানসোলে। ১০৬টি ওয়ার্ড বিশিষ্ট আসানসোলে ৯১টি আসনে জয় পায় তৃণমূল। মেয়র বাছাই করতেও হিমসিম খেতে হয় তাঁদের। শেষ পর্যন্ত ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করা বারাবনির তৃণমূল বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়কে মেয়র করার সিদ্ধান্ত হয়। সঙ্গে ওয়াসিমুল হক ও অভিজিৎ ঘটককে করা হয় ডেপুটি মেয়র। কিন্তু আসানসোলের পুরসভায় জোড়া ডেপুটি মেয়র আইনসম্মত নয়। সেই বিষয়টি নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিধানসভায় বিল পাশ করা হয়েছিল। কিন্তু বিলটি নিয়ে রাজ্যপাল কিছু প্রশ্নের জবাব চেয়েছেন রাজ্য সরকারের কাছে। ফলে বিষয়টি আটকে রাজভবন-নবান্নের দড়ি টানাটানিতেই।
অন্যদিকে, ২৫ ফেব্রুয়ারি আসানসোলের মহানাগরিক হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন বিধান। একই দিনে চেয়ারম্যান পদে শপথ নেন অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু তার পর কেটে গিয়েছে সাড়ে তিন মাস। এখনও বোর্ড গঠন হয়নি । এর ফলে ঠিকমতো পুর পরিষেবা দিতে পারছে না পুরসভা, এমনটাই অভিযোগ বিজেপি-সহ অন্য বিরোধীদেরও। এ ব্যাপারে ফয়সালা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বিজেপি কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারি। তিনি আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির স্ত্রী। আগামী ৯ জুন ওই মামলার শুনানি হবে কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে।
অন্যদিকে, বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে পাশ হল ‘দ্য হাওড়া মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (সংশোধনী) বিল, ২০২১’। এর ফলে হাওড়া পুরসভার ওয়ার্ডের সংখ্যা ৬৬ থেকে কমে ফের ৫০-এ দাঁড়ায়। বালিকে হাওড়া থেকে আলাদা করে দেওয়ার পরে হাওড়া পুরসভার যে অংশ পড়ে রইল, তার পুনর্বিন্যাস করেই ৫০টি ওয়ার্ড হয়। হাওড়া পুরসভায় আগে ৫০টি ওয়ার্ডই ছিল। ২০১৫ সালে ৩৫টি ওয়ার্ডের বালি পুরসভাকে ১৬টি ওয়ার্ডে পরিণত করে হাওড়ার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। তখন হাওড়ার ওয়ার্ডের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৬৬টি। কিন্তু এখন হাওড়া ও বালি দু'টি পৃথক পুরসভা। এবং দু'টি পুরসভাতেই ভোট বকেয়া পড়ে আছে।
রাজ্য সরকার চেয়েছিল চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বিধাননগর, আসানসোল ও শিলিগুড়ি পুরসভার সঙ্গে হাওড়ার ভোট করাতে। পরে রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার সঙ্গে বালি পুরসভার ভোট হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল। নভেম্বর মাসে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশেনে হাওড়া-বালি পুরসভার বিভাজন প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়ে যায়। পরে হাওড়াকে পৃথক পুরসভা করতে সংশোধনী বিল পাশ করে রাজ্য সরকার। বিলটি রাজ্যপালের সইয়ের জন্য পাঠানো হয় রাজভবনে। কিন্তু রাজ্যপাল অভিযোগ করেছিলেন, তিনি বারবার চাওয়া সত্ত্বেও বিলটি সবিস্তার তাঁকে জানানো হয়নি। ফলে তাঁর পক্ষে সই করা সম্ভব হচ্ছে না। হাওড়া ও বালি পুরসভার ভোট কবে হবে, তা নিয়ে রাজ্য সরকারও কোনও পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy