বন্দে ভারতে ইট মারার ঘটনায় সিআইডি তদন্ত চাইলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার। নিজস্ব ছবি।
পর পর দু’দিন বন্দে ভারতে ইট ছোড়া নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোর অব্যাহত। শাসকদল এবং বিরোধী শিবির আঙুল তুলছে পরস্পরের দিকে। এনআইনএ তদন্তের দাবি তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। এ বার তার ‘উল্টো পথে’ হেঁটে কে বা কারা ইট ছুড়েছেন, তা খুঁজে বার করার দায়িত্বভার সিআইডিকে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার। তাঁর বক্তব্য, রাজ্য পুলিশ যথেষ্ট দক্ষ। তারাই তদন্ত করতে পারবে। কোনও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পরিবর্তে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষের রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থার উপর ‘ভরসা’ রাখা নিয়ে পাল্টা কটাক্ষ করতে শুরু করেছে শাসকদল তৃণমূলও।
সোমবার মালদহের পর মঙ্গলবার দুপুরে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ঢোকার মুখে পাথরের আঘাতে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের দু’টি জানলার কাচ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। যাত্রীরা আহত না হলেও পর পর দু’দিন একই ধরনের ঘটনায় ট্রেনটির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সোমের ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে আরপিএফ এবং রেলপুলিশ। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার মালদহে শুভেন্দু বলেন, ‘‘বন্দে ভারতে ইট মারার ঘটনায় এনআইএ তদন্ত হওয়া উচিত।’’ তার পরেই বুধবার বাঁকুড়ার সাংসদ অফিসে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ বলেন, ‘‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে দ্বিতীয় দিনেও পরিকল্পিত ভাবে হামলা হল। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার কোনও উচ্চবাচ্যই করছে না। কেন্দ্রের উন্নয়নকে কি রাজ্য সরকার সহ্য করতে পারছে না? যদি তা-ই হয়ে থাকে, তা হলে তা রাজ্যবাসীকে স্পষ্ট জানাক রাজ্য সরকার। যদি সেই রকম না হয়, তা হলে আমি চাইব, মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনায় সিআইডি তদন্তের ঘোষণা করুন।’’
বন্দে ভারতে ইট মারার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের বিষয়টি একেবারেই অবশ্য বাদ দিচ্ছেন না সুভাষ। বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদের কথায়, ‘‘এটা আমি বলছি না যে, সিবিআই তদন্তের কোনও দরকার নেই। আমার বক্তব্য, রাজ্য পুলিশ যথেষ্টই দক্ষ। সিআইডিকে দিয়ে তদন্ত করে খুঁজে বার করা হোক, কোন এলাকা থেকে ঢিল ছোড়া হয়েছে, কারা ঢিল ছুড়েছে, তা চিহ্নিত করা হোক। এ ক্ষেত্রে যেন পক্ষপাতের রাজনীতি না হয়। রাজ্য পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে অভিযোগ করে তদন্ত শুরু করুক। আর যেন দেরি না হয়।’’
ইট ছোড়ার ঘটনায় কারা তদন্ত করবে, তা নিয়ে বিরোধী দলনেতা এবং বিজেপি সাংসদের মধ্যে এই ‘মতপার্থক্য’ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজ্য-রাজনীতিতে। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের অবশ্য বক্তব্য, এর মধ্যে সংঘাতের কোনও ব্যাপার নেই। দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘দু’জনেই নিজের ব্যক্তিগত মত দিয়েছে। এর মধ্যে সংঘাত খোঁজার কোনও মানে হয় না।’’ রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘আমি শুধু চাই, ঢিল মারা বন্ধ হোক।’’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সিআইডি তদন্তের দাবি তোলায় তা নিয়ে কটাক্ষ করে বাঁকুড়ার তালড্যাংরার তৃণমূল বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সারা দেশে একের পর এক ঘটনার তদন্তে ব্যর্থ হয়েছে সিবিআই। তাই, সিবিআইয়ের উপর ভরসা নেই মন্ত্রীর। উনি বুঝতে পারছেন, রাজ্য পুলিশ এবং সিআইডি অনেক বেশি সফল। তাই, উনি সিআইডি তদন্ত চাইছেন।’’
সুভাষ অবশ্য তাঁর বক্তব্যেই সিআইডি তদন্ত চাওয়ার কারণ স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘সব কিছুতেই সিবিআই তদন্তের দাবি করা উচিত নয়। রাজ্য পুলিশ ব্যর্থ হলে সে ক্ষেত্রে সিবিআই আসবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy