মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্নের অভিযোগ এবং লোকসভা থেকে তাঁকে বহিষ্কার সংক্রান্ত বিতর্কে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্রের পাশে দাঁড়ানোকে ঘিরে অস্বস্তি বাড়ছে সিপিএমের অন্দরে। একে তো তৃণমূল কংগ্রসের সঙ্গে সর্বভারতীয় স্তরে ‘ইন্ডিয়া’ জোটে থাকা এবং এখন মহুয়া-প্রশ্নে দলের অবস্থানের দৌলতে জনমানসে ‘বিভ্রান্তি’ বেড়ে চলেছে বলে মনে করছেন সিপিএমের জেলা নেতৃত্বের একাংশ। দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি গত নভেম্বরে হাওড়ায় সিপিএমের রাজ্য কমিটির বিশেষ বর্ধিত অধিবেশনে ‘ইন্ডিয়া’ ঘিরে সবিস্তার ব্যাখ্যা দেওয়ার পরেও তাঁর সামনেই ওই বিরোধী জোট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন জেলার প্রতিনিধিরা। এ বার পূর্ব বর্ধমানে তার পাশাপাশিই প্রশ্ন উঠল মহুয়া-কাণ্ডে দলের অবস্থান নিয়ে। জেলা ও স্থানীয় নেতাদের ওই অংশের মতে, এই ঘটনাপ্রবাহে প্রচার চালাতে সুবিধা হচ্ছে বিজেপির।
দলীয় সূত্রের খবর, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’য় তৃণমূলের সঙ্গে এক মঞ্চে থাকা এবং মহুয়াকে সাংসদ-পদ থেকে বহিষ্কারের সময়ে দলের অবস্থান, এ সব মিলিয়েই প্রশ্ন উঠেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির বর্ধিত বৈঠকে। বর্ধমানে দলের জেলা কার্যালয়ে সোমবার থেকে ওই বৈঠক ছিল, উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। জেলা কমিটির সদস্যেরা ছাড়াও ২৭টি এরিয়া কমিটির নেতাদের ওই বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। সিপিএম সূত্রের খবর, জেলা ও এরিয়া কমিটির কিছু প্রতিনিধি বৈঠকে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজেপি-বিরোধী অবস্থানে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রয়োজনীয়তা তাঁরা বুঝছেন। কিন্তু বিজেপি নানা জায়গায় ইতিমধ্যে প্রচার শুরু করেছে, দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূলের সঙ্গে এক আসনে রয়েছে বামেরাও। ওই সদস্যদের আশঙ্কা, পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যা লড়াই দেওয়া গিয়েছিল, এর ফলে জেলায় আবার না পিছিয়ে পড়তে হয়। বৈঠকে প্রশ্ন ওঠে মহুয়ার বিষয়ে দলের ভূমিকা নিয়েও। সূত্রের খবর, কিছু প্রতিনিধির বক্তব্য, সংসদীয় গণতন্ত্রে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে এক জন সাংসদকে বহিষ্কার করা নিয়ে আপত্তির যথেষ্ট কারণ আছে। কিন্তু দুর্নীতির প্রশ্নেও যে দল সরব, তা এ ক্ষেত্রে সে ভাবে স্পষ্ট করা হয়নি।
অধিবেশনের মাঝেই মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জোট সংক্রান্ত প্রশ্নে সেলিম অবশ্য বলেন, ‘‘রাজ্য, দেশ, সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিকে বাঁচাতে জোটের প্রয়োজন। এই জোট (‘ইন্ডিয়া’) নির্বাচনী জোট নয়। সাম্প্রতিক রাজ্যগুলিতে যে ভোট হয়েছে, সেখানে কি জোট হয়েছে? আর তৃণমূলের বিরুদ্ধে তো আমরাই রাস্তায় আছি।’’ আলিমুদ্দিনে আগামী ২৭-২৮ ডিসেম্বর রাজ্য কমিটির বৈঠকেও জোট, তৃণমূল এবং মহুয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে বলে সিপিএম রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন। পরিস্থিতি বুঝে এ দিনই মহুয়াকে বাংলো ছাড়ার নোটিস প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তমলুকে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘সাংসদ-পদ না থাকলে বাংলো তো ছাড়তে বলা হবেই। টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন অবশ্যই গুরুতর অপরাধ। দিল্লি সেটা প্রমাণ করতে পারলে কথা উঠতো না। তথ্য-প্রমাণ দেওয়া হয়নি বলেই আমরা প্রশ্ন তুলেছি। আদানির বিরুদ্ধে প্রশ্ন করা হয়েছে বলেই বিজেপির এমন সক্রিয়তা, এটা স্পষ্ট এবং সেটাই আমরা বলছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy