Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Partha Chatterjee

ক্যাম্পাসে ক্লাস শুরু কবে, উত্তরে এখনও ধোঁয়াশা

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত মার্চ থেকে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় একটানা বন্ধ রয়েছে।

—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২১ ০১:৫৯
Share: Save:

রাজ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই গেল। এমনই ইঙ্গিত মিলেছে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শনিবারের বক্তব্যে। মন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকার সময় মতো এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবে। অতএব, যতই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে দাবি তীব্র হোক, নিশ্চিত সেই সময়টা এখনও জানা গেল না।

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত মার্চ থেকে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় একটানা বন্ধ রয়েছে। এক দিকে স্কুল খোলার দাবি যেমন উঠছে, অন্য দিকে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিও জোরালো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এসএফআই-সহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এই দাবি নিয়ে পথে নেমেছে। প্রেসিডেন্সির এসএফআই ইউনিট পথ অবরোধ, রাতভর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের বাইরে অবস্থানও করেছে। যাদবপুর এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই-এর পক্ষ থেকেও একই দাবি তোলা হয়েছে। তাদের সকলের যুক্তি, অনলাইন ক্লাসের সুবিধা থেকে বহু পড়ুয়াই বঞ্চিত থাকছেন। বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও অন্তত প্র্যাক্টিকাল ক্লাস চালু করতে চাইছে। কেউ কেউ চালু করতে চলেছেও। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (কুটা) উপাচার্যকে জানিয়েছিল, মার্চে প্রথম এবং তৃতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা। এ দিকে অনলাইন পঠনপাঠনের ফলে পড়ুয়াদের কোনও প্র্যাক্টিকাল ক্লাস নেওয়া যাচ্ছে না। অথচ এই ক্লাস পড়ুয়াদের জন্য খুবই জরুরি। এর পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় প্রধানদের নির্দেশ দেন, ইচ্ছুক পড়ুয়াদের নিয়ে প্রতিটি বিভাগ করোনা স্বাস্থ্য-বিধি মেনে প্র্যাক্টিকাল ক্লাস নিতে পারে। এ দিকে হস্টেল বন্ধ। ফলে দূরে যে সব পড়ুয়া থাকেন, তাঁরা কী ভাবে ওই প্র্যাক্টিকাল ক্লাস করবেন, সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ওই ক্লাস যদি কিছু পড়ুয়া না করতে পারেন, তা হলে তো পড়ুয়াদের মধ্যেই স্পষ্ট বিভাজন দেখা দেবে। আবার এই নির্দেশ শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলিকে দেওয়া হয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ যে সব কলেজে স্নাতকোত্তর পঠনপাঠন চলে, তাদের দেওয়া হয়নি। তাই ইতিমধ্যেই লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার উচ্চশিক্ষা দফতরের কাছে এই বিষয়ে সম্মতি চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। অধ্যক্ষা জানিয়েছেন, চিঠির উত্তর না এলে তিনি প্র্যাক্টিকাল ক্লাস জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু করে দেবেন।

কলেজে স্নাতক স্তরে প্র্যাক্টিকাল ক্লাস করাতেও অনেক কর্তৃপক্ষ আগ্রহী। তাঁরা চাইছেন, স্বাস্থ্য-বিধি মেনে প্র্যাক্টিকাল ক্লাস কলেজে শুরু হোক। অনেক কলেজ নিজেদের মতো ওই ক্লাস শুরু করার তোড়জোড় চালাচ্ছে। এ জে সি বসু কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতি আগেই জানান, তিনি ছোট ছোট ব্যাচে প্র্যাক্টিকাল ক্লাস করাবেন। এ ছাড়াও বেশ কিছু কলেজ এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে।

শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পক্ষকে নিয়ে উপাচার্য ক্যাম্পাসে পঠনপাঠন চালুর বিষয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। কারণ, সেখানেও পড়ুয়াদের তরফ থেকে ক্যাম্পাসে পঠনপাঠন চালুর দাবি উঠেছে। সঙ্গে হস্টেল চালুর দাবিও রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, জুটা আগেই ধাপে ধাপে ক্লাস শুরুর বিষয়ে তাদের মতামত কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিল। এ দিনও জানায়। শোনা হয় পড়ুয়াদের বক্তব্যও। বৈঠকে সকলে একমত এই বিষয়ে যে ক্যাম্পাস যখনই খুলুক, করোনা স্বাস্থ্য-বিধি মেনেই ধাপে ধাপে পঠনপাঠন চালু হবে। বৈঠক শেষে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন, “রাজ্য সরকার কবে ক্যাম্পাস খোলার অনুমতি দেবে, সে দিকেই তাকিয়ে আছি। আজকের বৈঠকে ক্যাম্পাস খোলার আগে কী প্রস্তুতি নিতে হবে, কী ভাবে এগোতে হবে― তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

তবে ক্যাম্পাস খোলার বিষয় যে এখনও অনিশ্চিত, তা শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্যেই স্পষ্ট। এ দিন তিনি বলেন, “সরকার সময় মতো এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে।” এখন প্রশ্ন, সেই সময়টা কবে আসবে?

অন্য বিষয়গুলি:

Partha Chatterjee presidency university
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy