প্রতীকী ছবি।
চলতি শিক্ষাবর্ষে রাজ্যের ১৭,৯৯৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পঞ্চম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ উঠছে, পরিকাঠামোর অভাব থাকায় পঞ্চম শ্রেণি যুক্ত হওয়া বেশ কিছু প্রাথমিক স্কুলে না-গিয়ে ছেলেমেয়েরা এলাকার হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হচ্ছে। শিক্ষক শিবিরের একাংশের পর্যবেক্ষণ, যথাযথ পরিকাঠামোর বন্দোবস্ত ছাড়াই তাড়াহুড়ো করে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পঞ্চম শ্রেণি চালু করায় এই বিপত্তি।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মাসখানেক আগে জানিয়েছিলেন, যে-সব প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির পঠনপাঠন চালানোর পরিকাঠামো আছে, চলতি শিক্ষাবর্ষেই সেখানে ওই শ্রেণির পঠনপাঠন শুরু হবে। শিক্ষা শিবিরের খবর, রাজ্যে মোট ৫৮ হাজার প্রাথমিক স্কুলের মধ্যে পঞ্চম শ্রেণি রয়েছে দু’হাজার স্কুলে। পঞ্চম শ্রেণির পঠনপাঠন নিয়ে স্কুলশিক্ষা দফতরের সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ৫৬ হাজার প্রাথমিক স্কুলের পরিকাঠামো পাল্টাতে হবে। স্কুলগুলিতে সমীক্ষা চালিয়ে পর্যায়ক্রমে এই পরিবর্তনের কাজকর্ম শুরু হয়েছে।
শিক্ষা শিবিরের প্রশ্ন, কতটা সমীক্ষা করে প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে? পশ্চিম মেদিনীপুরের একটি স্কুলের এক শিক্ষক শ্রীকান্ত জানা জানান, তাঁদের ব্লকে বেশ কয়েকটি প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি চালু করা হয়েছে। কিছু প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু বেশ কয়েকটি স্কুলে ওই শ্রেণিতে পড়ুয়ার সংখ্যা খুব কম। চতুর্থ শ্রেণি পাশ করে অধিকাংশ পড়ুয়াই চলে গিয়েছে নিকটবর্তী হাইস্কুলে। শ্রীকান্তবাবু বলেন, ‘‘আমাদের জেলায় একটি প্রাথমিক স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে ১৭ জন পড়ুয়া ছিল। ওই স্কুলে ক্লাসঘর দু’টি। পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস কোথায় হবে? তাই অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েদের পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করাননি।’’
আরও পড়ুন: বৃদ্ধের শুশ্রূষা, বসা হল না পরীক্ষায়
একই অভিযোগ নদিয়ার স্কুলের শিক্ষকদের একাংশের। কল্যাণীর বিদ্যামন্দির প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষক জানান, তাঁদের স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে ৩৬ জন পড়ুয়া ছিল। তাদের মধ্যে মাত্র ন’জন তাঁদের স্কুলে নতুন যুক্ত হওয়া পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। বাকিরা ভর্তি হয়েছে নিকটবর্তী হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে।
পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতি সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকার বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত শিক্ষক ও পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষের ব্যবস্থা না-করে প্রাথমিকে পঞ্চম শ্রেণি অন্তর্ভুক্ত করা হলে শিক্ষার মান খারাপ হবে।’’ শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর বক্তব্য, পরিকাঠামো ঠিক না-করে প্রাথমিকে পঞ্চম শ্রেণি চাপিয়ে দিলে আখেরে ক্ষতি হবে পড়ুয়াদেরই। অভিভাবকেরা তাই বেসরকারি বিদ্যালয়ের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হবেন। কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির পরিকাঠামো ভাল নয় বলেই অনেক অভিভাবক হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে ছেলেমেয়েদের ভর্তি
করিয়ে দিচ্ছেন।’’
শিক্ষা দফতরের এক কর্তার আশ্বাস, ‘‘এ বছর পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে কিছু অসুবিধা হয়ে থাকতে পারে। তবে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এই অসুবিধা আর থাকবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy