প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে মল্লিকার্জুন খড়্গে। বিধান ভবনে। নিজস্ব চিত্র।
সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সভাপতি পদে তাঁর জয় নিশ্চিত বলে কলকাতায় এসে দাবি করলেন মল্লিকার্জুন খড়্গে। নতুন সভাপতির দায়িত্ব পেলে উদয়পুরে এআইসিসি-র চিন্তন শিবিরে গৃহীত সিদ্ধান্ত কার্যকর করারই তাঁর সামনে প্রথম চ্যালেঞ্জ হবে বলেও ফের জানিয়ে রাখলেন রাজ্যসভার সাংসদ। উদয়পুরের সিদ্ধান্ত মেনে তরুণ অংশের জন্য সংগঠনে ৫০% জায়গা ছেড়ে দেওয়া এবং ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি কার্যকর করার আশ্বাস কংগ্রেস প্রতিনিধিদের কাছে লিখিত আবেদনেও দিয়ে রেখেছেন তিনি।
কলকাতায় এসে সোমবার বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন খড়্গে। সূত্রের খবর, বৈঠকে তিনি বলেন, কংগ্রেসের স্বার্থেই নির্বাচনের দিন তাঁর পক্ষে প্রতিনিধিদের ১০০% ভোট নিশ্চিত করতে হবে। পরে খড়্গের দাবি, ‘‘কংগ্রেসের মতাদর্শ মেনে ৫৫ বছর ধরে দলটা করছি। দলের স্বার্থেই সভাপতি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। যেখানেই যাচ্ছি, খুব উৎসাহ দেখতে পাচ্ছি। কোনও সন্দেহই নেই যে, আমি নির্বাচিত হব!’’ সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হলে তিনি উদয়পুরের সিদ্ধান্ত কার্যকর করবেন জানাতে গিয়ে খড়্গের বক্তব্য, ‘‘যুবদের উপরে বিশেষ নজর থাকবে। নির্বাচনের প্রার্থী এবং সংগঠনে ৫০% আসন দেওয়া হবে ৫০ বছরের কম বয়সীদের। বিধি মেনে প্রদেশ কংগ্রেস এবং জেলা কংগ্রেসগুলোর নির্বাচন করানো হবে, অথবা সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ উদয়পুরের সিদ্ধান্ত মানবেন বলেই সভাপতি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েই রাজ্যসভায় বিরোধী দলের নেতার পদ যে নিজে ছেড়ে দিয়েছেন তা-ও উল্লেখ করেছেন খড়্গে।
সভাপতি নির্বাচনে যাঁরা ভোট দেবেন, সেই প্রতিনিধিদের উদ্দেশে দু’পাতার একটি লিখিত আবেদন করেছেন কর্নাটকের গুলবর্গা থেকে উঠে আসা এই নেতা। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘‘নিজেকে বিপণন করার নীতিতে আমি বিশ্বাস করি না। আমার পরিষদীয় রেকর্ড, প্রশাসনিক কাজ এবং কংগ্রেস মতাদর্শের প্রতি নিষ্ঠাকে আপনাদের সামনে রাখছি। কংগ্রেসের সভাপতি পদে কার আসা উচিত, তার শ্রেষ্ঠ বিচাকর আপনারাই’। প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হবে কি না, সেই প্রশ্নে সরাসরি মন্তব্য করতে চাননি খড়্গে। শুধু বলেছেন, ‘‘দেশের হিতের জন্য, সংবিধান বাঁচানোর জন্য যা করার, সবাই মিলিত ভাবেই করা হবে। কোন পার্টির সঙ্গে কী জোট হবে, এটা নিয়ে এখন কথা বলার সময় নয়। যখন সময় আসবে, তখন দেখা যাবে।’’
কংগ্রেস সূত্রের খবর, খড়্গে ঘুরে যাওয়ার পরে শহরে আসতে পারেন সর্বভারতীয় সভাপতি নির্বাচনে আর এক প্রার্থী শশী তারুর। প্রথমে ঠিক হয়েছিল, তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদ তারুর সভাপতি নির্বাচনের প্রচারে কলকাতায় আসবেন ১২ অক্টোবর, বুধবার। পরে তিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে জানান, তিনি আজ, মঙ্গলবার আসতে চান। কিন্তু সমাজবাদী পার্টির নেতা মুলায়ম সিংহ যাদবের প্রয়াণে সেই সম্ভাব্য সফরও পিছোচ্ছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারুর কলকাতায় আসতে পারেন ১৪ অক্টোবর। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী তারুরকে নিয়ে প্রশ্নে এ দিন খড়্গের মন্তব্য, ‘‘কংগ্রেসের দুই প্রার্থীর মধ্যে লড়াই বড় কথা নয়। আমরা নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কী ভাবে লড়ব, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’’ আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবুর বক্তব্য, ‘‘খড়্গে নিজেই আসতে চেয়েছিলেন। তারুরের সঙ্গেও আমার দীর্ঘ কথা হয়েছে। সভাপতি পদ-প্রার্থীরা আসতেই পারেন। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মেনে এটা হয়েই থাকে।’’
প্রদেশ কংগ্রেসের প্রতিনিধি হিসেবে এ রাজ্যে ৫৪৩ জন ভোটার রয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি নির্বাচনে। বিধান ভবনেই আগামী ১৭ অক্টোবর গোপন ব্যালটে তাঁদের ভোটদানের ব্যবস্থা হচ্ছে। এ বার ভোটারদের পরিচয়পত্রে বারকোড থাকবে বলে দলীয় সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy