Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Councillor

দু’বারের কাউন্সিলর সংসার চালান ভ্যান চালিয়ে, এই রাজ্যেই

বহু মানুষকে সরকারি সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন। সরকারি প্রকল্পে বাড়ির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এলাকার নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতির জন্য পাকা ড্রেন করেছেন, পিচের রাস্তা করেছিলেন। মানুষকে সরকারি প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দিলেও তিনি নিজে সরকারি ঘর নেননি।

ভ্যান নিয়ে ব্যস্ত বাবু দাস। ছবি: সুজিত দুয়ারি।

ভ্যান নিয়ে ব্যস্ত বাবু দাস। ছবি: সুজিত দুয়ারি।

সীমান্ত মৈত্র
গোবরডাঙা  শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৪:৫৩
Share: Save:

একসময়ে গোবরডাঙা পুরসভার কাউন্সিলর ছিলেন তিনি। এখন ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে তাঁকে।

‘‘সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ভ্যান চালিয়ে যা উপার্জন হয় তাই দিয়েই সংসার চলে’’—বলেন বছর আটষট্টির গোবরডাঙা পুরসভার সিপিএমের প্রাক্তন কাউন্সিলর বাবু দাস। ২০০০ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বাম কাউন্সিলর ছিলেন। সারা জীবন বামপন্থী আর্দশে বিশ্বাসী মানুষটি অবশ্য মানুষের জন্য কাজ করেছেন বলে দাবি এলাকাবাসীর।

বহু মানুষকে সরকারি সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন। সরকারি প্রকল্পে বাড়ির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এলাকার নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতির জন্য পাকা ড্রেন করেছেন, পিচের রাস্তা করেছিলেন। মানুষকে সরকারি প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দিলেও তিনি নিজে সরকারি ঘর নেননি। মানুষের বিপদে আপদে এখনও ছুটে যান জনপ্রতিনিধি না হয়েও।

পরিচিত লোকজনের বক্তব্য, ‘‘অনেক জনপ্রতিনিধি ফুলে ফেঁপে উঠেছেন। বাবুকে এই বয়সেও ভ্যান টানতে হচ্ছে।’’

তিন কাঠা জমি কিনে বাড়ি করেছিলেন। যদিও বাড়ির দেওয়াল প্লাস্টার করতে পারেননি। মেঝেও কাঁচা। তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। জমি কিনে বাড়ি করতে এবং মেয়েদের বিয়ে দিতে প্রচুর ধার দেনা হয়েছে।

বাধ্য হয়ে নিজের বসত বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন। যাঁর কাছে বিক্রি করেছেন তাঁকে অনুরোধ করে এক বছর থাকার সুযোগ মিলেছে মাত্র। প্রথমে ছিলেন মুদি দোকানি। ২০১১ সাল নাগাদ তিনি দমদমে ডেকরের্টসের কাজ নেন। বাঁশ বাঁধা কাপড় লাগানোর কাজ করতেন। পরবর্তী সময়ে গোবরডাঙাতে একই কাজ করেছেন। কিন্তু বয়সের কারণে ওই কাজ এখন করতে পারেন না। তাই বাধ্য হয়ে ইঞ্জিন ভ্যান কিনে ভাড়া খাটছেন। বাড়িতে স্ত্রী জ্যোৎস্না নারকেল পাতা কেটে শলা বের করে বিক্রি করেন। ইঞ্জিন ভ্যান চালাচ্ছেন বলে বাবুর অবশ্য কোনও আক্ষেপ নেই।

তাঁর কথায়, ‘‘যখন কাউন্সিলর ছিলাম, মানুষের জন্য কাজ করেছি, পরিষেবা দিয়েছি। নিজের কথা ভাবিনি। এখন ভ্যান চালাচ্ছি। মান সম্মানের কথা ভাবি না। ভ্যানটাই আমার রুজি রুটির ব্যবস্থা করে।’’

তবে কাউন্সিলর হিসেবে বাবুর সুনাম রয়েছে। এলাকার মানুষের কথায়, ‘‘বাবু কাউন্সিলর থাকার সময় কোনও দল দেখতেন না। তিনি রাজনৈতিক রঙ না দেখে সেবা করতেন।’’

পুরপ্রধান তৃণমূলের সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘বাবু একজন সৎ মানুষ। তিনি গুছিয়ে নেওয়ার মানসিকতার মানুষ নন। ওঁকে আমরা সব রকমের সহযোগিতা করছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Gobardanga Babu Das Councillor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy