Advertisement
E-Paper

এনআইএ অভিযানে ছিল রাজ্য পুলিশও, প্রশাসনিক আঙুল বিজেপির প্রচারের দিকে, শুরু ‘কাঁথি-রাজনীতি’

রাজ্য পুলিশের দাবি, এনআইএ একক ভাবে অভিযান চালায়নি। রাজ্য পুলিশও সহযোগিতা করেছে। এনআইএ এবং রাজ্য পুলিশের যৌথ অভিযানেই গ্রেফতার হয়েছেন দুই অভিযুক্ত।

কাঁথিতে গ্রেফতারি নিয়ে রাজনৈতিক টানাপড়েন।

কাঁথিতে গ্রেফতারি নিয়ে রাজনৈতিক টানাপড়েন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:২৫
Share
Save

বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম ক্যাফেতে বিস্ফোরণের ঘটনায় রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থেকে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ। এই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গকে দুষ্কৃতীদের ‘স্বর্গরাজ্য’ বলে কটাক্ষ করে শাসকদল তৃণমূল তথা রাজ্য প্রশাসনকে বিঁধতে শুরু করেছে বিজেপি। সেই আবহে রাজ্য পুলিশ দাবি করল, ওই অভিযান এনআইএর একার ছিল না। রাজ্য পুলিশও তাতে সহযোগিতা করেছে। এনআইএ এবং রাজ্য পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেফতার হয়েছেন দুই অভিযুক্ত। অন্য দিকে, শাসকদলও কাঁথি থেকে দুই অভিযুক্তের গ্রেফতারির প্রসঙ্গ টেনে বিজেপিকে বিঁধতে ছাড়ছে না। প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তথা গোটা অধিকারী পরিবারেরই ‘গড়’ বলে পরিচিত কাঁথি। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘সবাই জানে সেখানে কোন পরিবার দুষ্কৃতীদের আনে, আশ্রয় দেয়। এ সবে তাদের ভূমিকার তদন্ত হোক।’’

কাঁথির অদূরে ভূপতিনগরে দু’বছর আগে একটি বিস্ফোরণের ঘটনায় লোকসভা ভোটের আবহে আবার ‘সক্রিয়’ হয়েছে এনআইএ। সম্প্রতি ভূপতিনগর থেকে দু’জন তৃণমূল নেতাকে তারা গ্রেফতারও করেছে। তা নিয়ে রাজনৈতিক টানাপড়েন অব্যাহত রাজ্যে। সেই আবহে কাঁথি থেকে বেঙ্গালুরুর বিস্ফোরণকাণ্ডে দুই অভিযুক্ত মুসাভির হুসেন শাজ়িব এবং আবদুল মাঠিন আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই শাসকদলকে বিঁধতে শুরু করেছে বিজেপি। শুভেন্দু বলেন, ‘‘সকালেই খবর পেয়েছি। আমরা তো প্রথম থেকেই বলে আসছি, জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে রাজ্যটা।’’ একই মর্মে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলের পোস্টে লেখেন, ‘‘দুর্ভাগ্যবশত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে পশ্চিমবঙ্গ সন্ত্রাসবাদীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে।’’

এই পরিস্থিতিতে রাজ্য পুলিশের তরফে দাবি করা হয়, রাজ্য পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে যৌথ অভিযান চালিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে রামেশ্বরম ক্যাফে বিস্ফোরণকাণ্ডের দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সে কথা কেন্দ্রীয় সংস্থাই সরকারি ভাবে জানিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অ্যাকাউন্ট থেকে এক্স হ্যান্ডলের পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘‘মিথ্যাচার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে! পশ্চিমবঙ্গ কখনওই সন্ত্রাসবাদীদের স্বর্গরাজ্য ছিল না। বেআইনি কার্যকলাপ রুখতে সদা তৎপর রাজ্য পুলিশ।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে ওই অভিযান চালানো হয়েছে। এর পরেই শাসকদল আসরে নামে। কুণালের দাবি, এনআইএ তো নিজেই স্বীকার করেছে যে, রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই অভিযান চালিয়েছে তারা। এক্স হ্যান্ডলের পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘এনআইএকেও মানতে হল রাজ্য পুলিশের সক্রিয় সহযোগিতার কথা। বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণে জড়িত বলে যে গ্রেফতার তারা করেছে, তাতে তাদের প্রেস রিলিজ়েও রাজ্য পুলিশের সহযোগিতার উল্লেখ রয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কোচবিহারের দিনহাটার সভা থেকে এই গ্রেফতারি প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘লুকিয়ে ছিল। দু’ঘণ্টার মধ্যে ধরে দিয়েছি আমরা।’’

পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্যও বলেন, ‘‘রাতে আমাদের কাছে খবর আসে। খবর আসার সঙ্গে সঙ্গেই সব পরিকল্পনা করে ফেলি। দু’ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার করা হয় দুই অভিযুক্তকে। আবারও বলছি, রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যৌথ ভাবে এই অভিযান চালিয়েছে। তদন্ত সংক্রান্ত বাকি তথ্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাই দিতে পারবে। ’’

কাঁথি থেকে দুই অভিযুক্তের গ্রেফতারি নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে তৃণমূল। কুণাল এক্সের পোস্টে লেখেন, ‘‘আর কোথা থেকে ধরেছে? কাঁথি। সবাই জানে সেখানে কোন পরিবার দুষ্কৃতীদের আনে, আশ্রয় দেয়। এ সবে তাদের ভূমিকার তদন্ত হোক। বাংলার পুলিশ দেশবিরোধী অশুভ শক্তিকে দমন করতে অবিচল এবং অন্য এজেন্সিকে সহযোগিতা করতেও প্রস্তুত, আবার প্রমাণিত।’’

গত ১ মার্চ বেঙ্গালুরুর ক্যাফেতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। তাতে ১০ জন আহত হয়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য আইইডি ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু সেই বিস্ফোরকের মাত্রা খুব বেশি না থাকায় অভিঘাত তেমন জোরালো হয়নি। ৩ মার্চ ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় এনআইএ। কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, ওই ঘটনার অন্যতম মূল অভিযুক্ত মুজ়াম্মিল। ২৭ দিন পর মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে খুঁজতে কর্নাটকের ১২টি এলাকা, তামিলনাড়ুর পাঁচটি এলাকা এবং উত্তরপ্রদেশের এক জায়গায় তল্লাশি চালান এনআইএর আধিকারিকেরা।

মুজ়াম্মিলকে গ্রেফতারের পর থেকেই অন্য দুই সন্দেহভাজনের খোঁজ শুরু করে এনআইএ। তাদের দাবি, মুজ়াম্মিলের সঙ্গে শাজ়িব এবং আবদুল এই ঘটনায় সক্রিয় ভাবে যুক্ত ছিলেন। মুজ়াম্মিলকে বিস্ফোরক সরবরাহ করেছিলেন শাজ়িবই। আর পুরো বিস্ফোরণের ঘটনার ছক কষেছিলেন আবদুল। এনআইএ আবদুলকেই বিস্ফোরণকাণ্ডের মূলচক্রী বলে দাবি করেছে। এনআইএ সূত্রে খবর, শুক্রবার ভোরে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের পাশাপাশি তেলঙ্গানা, কেরল এবং কর্নাটকের পুলিশও ছিল এই অভিযানে। ছদ্মনামে ওই দুই অভিযুক্ত লুকিয়ে ছিলেন বলে দাবি তদন্তকারী অফিসারদের। ঘটনার প্রায় দেড় মাস পর গ্রেফতার হলেন তাঁরা।

Suvendu Adhikari Mamata Banerjee

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।