মেহেদি হাসান। —নিজস্ব চিত্র।
আগের সপ্তাহেই দেগঙ্গায় পরপর তিন দিনে তিন জন প্রাণ হারিয়েছেন অজানা জ্বরে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার সেখানে জ্বরে মৃত্যু হল এক যুবক এবং তিন বছরের একটি শিশুর।
দু’-দু’টি সরকারি হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে আনার পরে গুনিনের কাছে তুকতাক চলছিল। সেই ধকল নিতে না-পেরে অনুপ সর্দার নামে ওই শুক্রবার মারা যান। আর বৃহস্পতিবার কলকাতার বিধানচন্দ্র রায় হাসপাতালে মৃত্যু হয় মেহেদি হাসান নামে শিশুটির। তার মৃত্যুর কারণে ‘ডেঙ্গি শক সিন্ড্রোম’ বলে জানিয়েছে ওই হাসপাতাল। দেগঙ্গায় সাত দিনে জ্বরে পাঁচ জনের মৃত্যুতে ক্ষোভ বাড়ছে এলাকায়। মৃতদের মধ্যে চার জনেরই বাড়ি আমুলিয়া পঞ্চায়েতে।
এ দিন আমুলিয়ায় গিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়েন দেগঙ্গার বিধায়ক রহিমা মণ্ডল, বিডিও সুব্রত মল্লিক-সহ আধিকারিকেরা। ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের চিকিৎসক ও প্রতিনিধিদল নিয়মিত দেগঙ্গায় যাচ্ছেন। ওই এলাকার উপরে বিশেষ ভাবে নজর রাখা হচ্ছে,’’ বলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। উত্তর ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রাঘবেশ মজুমদার এবং দেগঙ্গার বিডিও সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতর, জেলা প্রশাসন ও পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চিকিৎসা ও মশা মারার কাজ করছে।’’ একই দাবি আমুলিয়া পঞ্চায়েত প্রধানের।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচ দিন আগে জ্বর হয় আমুলিয়ার মেহেদির। রক্তপরীক্ষার পরে স্থানীয় চিকিৎসক জানান, তার ডেঙ্গি হয়েছে। মঙ্গলবার বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই শিশুটিকে কলকাতায় পাঠিয়ে দেন চিকিৎসক। মৃত্যুর খবর পেয়ে শুক্রবার মুম্বই থেকে বাড়ি ফেরেন মেহেদির বাবা বেল্লাল মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘পরিবারের লোকজন সময়মতো সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু যথাযথ চিকিৎসার অভাবে ছেলেটা মারা গেল।’’
আলিম মণ্ডল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘দু’বছর হয়ে গেল তৃণমূল পঞ্চায়েত গড়েছে। কিন্তু গোষ্ঠী-কাজিয়ার জন্য উপসমিতি গঠন হল কয়েক দিন আগে। জ্বরে মৃত্যুর পরে এখন প্রতিরোধের তৎপরতা শুরু হয়েছে!’’ স্থানীয় তৃণমূল সদস্য হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে, পঞ্চায়েত বা প্রশাসন পর্যাপ্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে পারেনি। কয়েক দিন আগে তৎপরতা শুরু হয়। তবে মাঝখানে ইদের ছুটি এবং বৃষ্টির জন্য কাজ ব্যাহত হয়েছে।’’
জ্বরে আক্রান্ত এক তরুণীর মৃত্যু হয়েছে হাবড়ায়। মঙ্গলবার রাতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গিয়েছেন হাবড়া পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীনগর পূর্ব পালপাড়ার বাসিন্দা সায়নী হালদার (১৯)। চলতি মরসুমে হাবড়া-অশোকনগর এলাকায় জ্বর-ডেঙ্গিতে এই নিয়ে ১৩ জনের মৃত্যু হল। পরিবারের দাবি, সায়নী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। অ্যালাইজা পরীক্ষায় তার প্রমাণও মিলেছিল। তবে তাঁর মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গির উল্লেখ নেই। মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে ‘সেপটিক শক’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy