Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
BJP

বুথ স্তরে দুর্বল, তহবিলে গরমিল, চর্চা বিজেপিতে

বিজেপি সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় ভাবে ঠিক হওয়া ‘বুথ সশক্তিকরণ অভিযানে’ রাজ্যের বিভিন্ন বুথে কমিটি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দেখা গিয়েছে, বহু ক্ষেত্রেই বুথ কমিটিতে নাম থাকা লোকজনের বাস্তবে অস্তিত্বই ছিল না অথবা তাঁদের অনেকেই সক্রিয় ছিলেন না!

bjp

—প্রতীকী ছবি।

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪ ০৭:৫৯
Share: Save:

লোকসভা ভোটে রাজ্যে বিজেপির আশানুরূপ ফল হয়নি। বিজেপির জেলাভিত্তিক পর্যালোচনায় এমন ফলাফলের নেপথ্যে মূলত দু’টি কারণ উঠে আসছে। দলীয় নেতৃত্বের একাংশ জানাচ্ছেন, খাতায়-কলমে বুথ কমিটি থাকলেও, বাস্তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তার কার্যত অস্তিত্ব ছিল না। সেই সঙ্গে, নির্বাচনী টাকা দলের তৃণমূল স্তরে অনেক জায়গাতেই সে ভাবে পৌঁছয়নি বলেই দাবি।

বিজেপি সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় ভাবে ঠিক হওয়া ‘বুথ সশক্তিকরণ অভিযানে’ রাজ্যের বিভিন্ন বুথে কমিটি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দেখা গিয়েছে, বহু ক্ষেত্রেই বুথ কমিটিতে নাম থাকা লোকজনের বাস্তবে অস্তিত্বই ছিল না অথবা তাঁদের অনেকেই সক্রিয় ছিলেন না! এমনকি, রাজ্য স্তর থেকে ফোন করতেই দেখা গিয়েছে, খোদ বুথ সভাপতি বলছেন, তাঁর নাম কী ভাবে কমিটিতে এল, তা জানেন না। রাজ্যের প্রায় ৮০ হাজার বুথের ৭০% ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতি ছিল বলে সূত্রের দাবি।

এমন সাংগঠনিক অবস্থার ‘ছাপ’ পড়েছিল ভোটের দিনে। দেখা যায়, অনেক জায়গাতেই বুথে বিজেপির এজেন্ট নেই। কোথাও বা সাধারণ মানুষকে ‘পারিশ্রমিক’ দিয়ে বুথের কাজ করানো হয়েছে। ফলে, বুথ স্তর থেকে ফলাফল কী হতে পারে, সেই সংক্রান্ত প্রকৃত তথ্য জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে ছিল না। এক বিজেপি নেতা বলছেন, “যখনই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তথ্য চেয়েছেন, একই তথ্য বিভিন্ন ভাবে পেশ করে খাতার পাতা ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের মেনে নিতে হবে, বুথ স্তরে দলের কোনও সংগঠন ছিল না।”

সেই সঙ্গে, নির্বাচনী খরচ সংক্রান্ত বিষয়টিও বিজেপির জেলা স্তরের আলোচনায় উঠে আসছে। কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়, বসিরহাটের রেখা পাত্রেরা প্রকাশ্যেই নির্বাচনের জন্য বরাদ্দ অর্থ খরচে ‘অনিয়ম’ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বুথ সভাপতিদের একাংশও জানাচ্ছেন, সাংগঠনিক কারণে যে টাকা তাঁদের পাওয়ার কথা ছিল, তার থেকে অনেক কম টাকা দিয়েছেন মণ্ডল সভাপতিরা। এমনকি, এ-ও বলা হয়েছে, ফলাফলের পরে বিজয় মিছিল কিংবা ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে টাকা লাগবে। বিজেপির জেতা একটি লোকসভা কেন্দ্রের এক রাজ্য নেতার বক্তব্য, “বহু জায়গাতেই তলার স্তর পর্যন্ত টাকা পৌঁছয়নি। পর্যাপ্ত টাকা ছাড়া নির্বাচন লড়া যায় না।”

এ ছাড়াও, পুরনো কর্মীদের বড় অংশের ‘নিষ্ক্রিয়’ থাকা, বাড়ি-বাড়ি প্রচারে খামতি, কেন্দ্রীয় নেতাদের ঘন ঘন বৈঠকের চাপে নির্বাচনের দৈনন্দিন কাজ ঠিক মতো না করতে পারার মতো বিভিন্ন কারণও উঠে আসছে জেলা স্তরের পর্যালোচনা বৈঠকে। সূত্রের খবর, জেলা ও ‘ক্লাস্টার’ স্তরের পর্যালোচনা রিপোর্ট রাজ্যে পাঠানো হবে। তা নিয়ে রাজ্য স্তরের চূড়ান্ত পর্যালোচনা বৈঠকে কথা হতে পারে।

যদিও এই সব কারণ নিয়ে রাজ্য বিজেপি প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, “আমরা এখন রাজ্য জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ত্রাস থেকে দলের কর্মীদের রক্ষা করতে ব্যস্ত। এখনও রাজ্য স্তরে ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনা হয়নি। তা হওয়ার পরে ফলাফলের কারণ ব্যাখ্যা করা যাবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

BJP West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy