Advertisement
E-Paper

ক্ষমতার যুদ্ধে পরাজিত হয়ে জেলাত্যাগী দাঁতাল

বন দফতর সূত্রে খবর, মাস দেড়েক আগে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ৪৫টি হাতি বিষ্ণুপুর হয়ে বড়জোড়ার পাবয়া-ডাকাইসিনির জঙ্গলে আসে। তখন মস্ত একটি আবাসিক হাতি ও তার এক সঙ্গী ওই দলে ঢোকে।

এই হচ্ছে সেই রামলাল। দুমাস আগে বিষ্ণুপুর থেকে বড়জোড়া যাওয়ার পথে। বিষ্ণুপুরের বেলশুলিয়া গ্রামের কাছে।

এই হচ্ছে সেই রামলাল। দুমাস আগে বিষ্ণুপুর থেকে বড়জোড়া যাওয়ার পথে। বিষ্ণুপুরের বেলশুলিয়া গ্রামের কাছে। —নিজস্ব চিত্র।

তারাশঙ্কর গুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৫
Share
Save

বড়জোড়ার জঙ্গলে এক জনের বহু দিনের বাস। অন্য জন, রামলাল, সবে দলবল নিয়ে সেখানে এসেছে। দু’জনেই দলপতি হতে চায়। সুতরাং, দুই দাঁতালের তুমুল লড়াই। শেষে রামলালের কাছে হেরে অভিমানে দীর্ঘদিনের ডেরা ছেড়ে বৃহস্পতিবার রাতে সটান পশ্চিম মেদিনীপুরের রূপনারায়ণ ডিভিশনের জঙ্গল চলে গেল পুরনো আবাসিক (রেসিডেন্ট) হাতিটি।

সম্প্রতি হাতিদের দলপতি হওয়ার লড়াই তাঁদের নজরে এসেছে বলে জানান ডিএফও (বাঁকুড়া উত্তর) উমর ইমাম। তিনি বলেন, ‘‘রামলালের কাছে হেরে এক রাতেই আবাসিক হাতিটি রূপনারায়ণ ডিভিশনের জঙ্গলে চলে গিয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এমন লড়াই হাতিদের মধ্যে অস্বাভাবিক নয়।’’

বন দফতর সূত্রে খবর, মাস দেড়েক আগে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ৪৫টি হাতি বিষ্ণুপুর হয়ে বড়জোড়ার পাবয়া-ডাকাইসিনির জঙ্গলে আসে। তখন মস্ত একটি আবাসিক হাতি ও তার এক সঙ্গী ওই দলে ঢোকে। ওই আবাসিক দাঁতালই দলনেতা হয়ে ওঠে। কিছু দিন পরে রামলাল নামে আর এক দাঁতাল ২২টি হাতি নিয়ে ওই জঙ্গলে ঢোকে। তখনই সমস্যা তৈরি হয়। আবাসিক হাতিটি দু’দলেরই নেতা হওয়ার চেষ্টা করলে রামলালের সঙ্গে বিরোধ বাধে।

পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের জঙ্গলে দীর্ঘ দিন বিচরণ রামলালের। মাঝেমধ্যে ঝাড়খণ্ড পর্যন্ত চলে যায়। জাতীয় সড়কে লরি আটকে হামেশাই এটা-সেটা খায়। এমনিতে ঠান্ডা। মেজাজ হারায় লোকজন পিছু নিলে। এক বার এক জনকে প্রাণেও মেরেছিল। বনকর্মীরা জানান, কয়েক দিন আগে পাবয়া ও ডাকাইসিনি জঙ্গলের মাঝামাঝি জায়গায় দু’জনের লড়াই বাধে। তবে বেশিক্ষণ চলেনি। হাতিদের দু’টি দলই রামলালের পাশে ভিড় করায় আবাসিক দাঁতালটি হার মানতে বাধ্য হয়।

ডিএফও (বাঁকুড়া উত্তর) উমর বলেন, ‘‘আবাসিক দাঁতালটি অন্যদের থেকে প্রায় তিন ফুট উঁচু। রামলালের থেকেও উচ্চতা বেশি। হারার পরে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে বলে সব রেঞ্জকে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু শান্ত ভাবেই সে রাতারাতি বাঁকুড়া ছাড়ে।’’ বর্তমানে দু’টি দলেরই দলপতি একা রামলাল। ওই দাঁতালের সঙ্গী এক আবাসিক হাতি ও একটি নতুন হাতিকে নিয়ম না মানায় দল থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে। ডিএফও মনে করালেন, ‘‘হাতিরা সমাজবদ্ধ জীব। নিয়মের বাইরে গেলেই দলছুট হতে হয়।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Elephant borjora

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}