(বাঁ দিকে) শিলিগুড়ি থেকে ধৃত বিহারের বাসিন্দা। ইসলামপুর থেকে ধৃত অপর অভিযুক্ত (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
ট্যাব-কাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা আরও বাড়ল। এ বার গ্রেফতার করা হল বিহারের এক বাসিন্দাকে। শিলিগুড়ি থেকে বৃহস্পতিবার তাঁকে গ্রেফতার করেছে বর্ধমান সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। অন্য দিকে, বনগাঁ থানার পুলিশ বুধবার রাতে ট্যাব-চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে উত্তর দিনাজপুর থেকে এক জনকে গ্রেফতার করেছে।
৩৪ বছরের রবীন্দ্রপ্রসাদ সিংহ বিহারের কিশানগঞ্জের বাসিন্দা। তাঁকে ধরতে শিলিগুড়িতে গিয়েছিল বর্ধমান থানার একটি দল। গ্রেফতারির পর যুবককে শিলিগুড়ি আদালতে হাজির করানো হয়। সেখান থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে বর্ধমানে নিয়ে আসা হয় তাঁকে।
বর্ধমান সাইবার থানায় গত ৩১ অক্টোবর ট্যাব নিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। তার ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। পাওয়া যায় শিলিগুড়ি যোগ। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার পুলিশের একটি দল পৌঁছে গিয়েছিল শিলিগুড়িতে। প্রধাননগর থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে দেবীডাঙা থেকে গ্রেফতার করা হয় রবীন্দ্রপ্রসাদকে।
এর আগে বুধবার রাতেই ইসলামপুর থেকে ট্যাব-কাণ্ডে এক যুবককে গ্রেফতার করে বনগাঁ থানার পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ট্যাব দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ছাত্রদের ট্যাবের টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়।
বনগাঁর স্কুলে ট্যাবের টাকা না ঢোকার অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। জানা যায়, উত্তর দিনাজপুরের এক যুবকের অ্যাকাউন্টে ওই টাকা ঢুকেছে। টাকা সেই অ্যাকাউন্ট থেকে তুলেও নেওয়া হয়েছে রাতারাতি। এর পরেই বনগাঁ থানা থেকে পুলিশের একটি দল বুধবার উত্তর দিনাজপুরে যায়। তাদের জালে ধরা পড়েন ১৯ বছরের মহম্মদ বাহাউদ্দিন। তিনি ইসলামপুরের বাসিন্দা। রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার নিয়ে আসা হয় বনগাঁয়। পরে ধৃতকে বনগাঁ মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়েছে। বনগাঁ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘গত ৯ তারিখ বনগাঁর দু’টি স্কুলের তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, কয়েক জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। সেই তদন্তে নেমে ইসলামপুর থেকে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে আট দিনের পুলিশ হেফাজতে পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত চলছে। তাঁকে জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে, এই ঘটনার সঙ্গে আর কারা যুক্ত।’’
ট্যাব সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্য জুড়ে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতারির সংখ্যা ২০-র বেশি। মোট ১৪০টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ফ্রিজ় করা হয়েছে ৭৯৭টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট।
ট্যাব-কাণ্ডে বার বার উঠে এসেছে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার নাম। একাধিক অভিযুক্তকে সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের অনুমান, গোটা চক্রের মূল রয়েছে চোপড়াতেই। সেখান থেকেই ট্যাবের টাকা হাতানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে শিলিগুড়ি থেকেও একাধিক গ্রেফতার হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক স্কুলশিক্ষকও।
রাজ্য সরকারি স্কুলগুলির একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়াশোনার সুবিধার্থে ট্যাব কেনার জন্য সরকার ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্প চালু করেছিল। এই প্রকল্পের অধীনে এককালীন ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় পড়ুয়াদের। আবেদনকারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি সেই টাকা ঢুকে যায়। স্কুলের মাধ্যমেই করা হয় আবেদন। কিন্তু অভিযোগ, এ বছর রাজ্যের অনেক পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢোকেনি। বরং তা চলে গিয়েছে অন্য কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। টাকা ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে এটিএম থেকে সেই টাকা তুলেও নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ট্যাব-কাণ্ডেই আরও দু’জন ধরা পড়লেন পুলিশের জালে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy