Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Kaliyaganj

পৌঁছলেন ২ এডিজি, নজরে ‘বহিরাগতেরা’

গত সাত দিনে কালিয়াগঞ্জে একের পরে এক ঘটনা উত্তরবঙ্গের পুলিশ কর্তারা ঠিকঠাক সামাল দিতে পারেননি বলে পুলিশের একাংশে চাউর হয়েছে।

এলাকায় শোকের ছায়া। রাধিকাপুর পঞ্চায়েতের চাঁদগাঁও গ্রামে বিয়েবাড়ির মণ্ডপের বাইরে। নিজস্ব চিত্র

এলাকায় শোকের ছায়া। রাধিকাপুর পঞ্চায়েতের চাঁদগাঁও গ্রামে বিয়েবাড়ির মণ্ডপের বাইরে। নিজস্ব চিত্র

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:১৫
Share: Save:

‘বহিরাগতদের’ উস্কানি এবং ‘পরিকল্পনায়’ কালিয়াগঞ্জ উত্তপ্ত হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে বৃহস্পতিবার রাজ্যের দুই পোড় খাওয়া আইপিএস অফিসার জ্ঞানবন্ত সিংহ এবং মনোজ বর্মা উত্তর দিনাজপুরে পৌঁছে এডিজি (উত্তরবঙ্গ) অজয় কুমারের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেই এ বিষয়ে আলোচনা হয় বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। কালিয়াগঞ্জে থানায় হামলা, পুলিশকর্মীদের নির্দিষ্ট এলাকায় কোণঠাসা করে চড়াও হওয়ার মতো একাধিক ঘটনা থেকে পুলিশ কর্তারা এমন ভাবছেন বলে দাবি সূত্রের।

গত সাত দিনে কালিয়াগঞ্জে একের পরে এক ঘটনা উত্তরবঙ্গের পুলিশ কর্তারা ঠিকঠাক সামাল দিতে পারেননি বলে পুলিশের একাংশে চাউর হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যের নির্দেশে দুই এডিজি— জ্ঞানবন্ত এবং মনোজ কালিয়াগঞ্জে গিয়েছেন। সেখানে শিবির করে থাকা অজয় কুমারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে দু’জন কাজ শুরু করেছেন। ছাত্রনেতা আনিস খানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় যে বিশেষ তদন্তকারী দল গড়েছিল রাজ্য, তার মাথায় ছিলেন জ্ঞানবন্ত। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ছিলেন মনোজ। যদিও পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের দাবি, কালিয়াগঞ্জে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পেয়েছেন রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তারা। তাই রাজ্যের গোয়েন্দা প্রধান মনোজ বর্মা, সদ্য এসটিএফ প্রধান থেকে সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্ব নেওয়া জ্ঞানবন্তকে তড়িঘড়ি এলাকায় পাঠানো হয়েছে।

অফিসারদের নিয়ে এ দিন বিকেল থেকে তিন এডিজি কালিয়াগঞ্জ থানায় টানা বৈঠক করেন। সূত্রের দাবি, সেখানে বহিরাগতদের প্রসঙ্গ ওঠে এবং সে বিষয়ে পুরোদমে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ঘটনার পিছনে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার কলকাতায় তিনি দাবি করেন, বিহার থেকে লোক এনে তাণ্ডব চালানো হয়েছে। ঘটনাচক্রে, থানায় আগুন লাগানোর ঘটনায় যে ৩২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে তিন জন ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা বলে পুলিশ আগেই জানিয়েছে। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার মহম্মদ সানা আখতারও দাবি করেন, পরিকল্পনা করে পুলিশের উপরে এবং থানায় হামলা চালানো হয়েছে। এডিজি (উত্তরবঙ্গ) বলেছেন, ‘‘হামলার ঘটনার কিছু তথ্য আমাদের হাতে আসছে। সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, আদিবাসী এবং রাজবংশীদের যৌথ মিছিলে বাইরের রাজ্যের লোক থাকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অফিসারেরা জানাচ্ছেন, কালিয়াগঞ্জ থেকে সহজেই ডালখোলা বা টুঙ্গিদিঘি হয়ে বিহারের পূর্ণিয়া, কিসানগঞ্জ, বারসই এলাকায় যাতায়াত চলে। আর বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা কালিয়াগঞ্জে বেশ কিছু তেল, কাঠের মিলে কাজের সূত্রে বাইরে থেকে লোকজন যাতায়াত করেন। নাবালিকার মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদ-মিছিলের জন্য বাইরে থেকে লোক আগেই মজুত করা হয়েছিল, না স্থানীয় স্তরে তাঁদের শামিল করা হয়েছিল, তা পুলিশ দেখছে। তদন্তকারী অফিসারদের একাংশ জানান, পুলিশকে ঘরে আটকে পেটানো, থানা চত্বরের একাধিক ভবনে আগুন, পুলিশকে ঘিরে ফেলে হামলা করার মতো ঘটনা স্থানীয় আন্দোলনকারীদের পক্ষে চট করে করা সম্ভব নয়। পরিকল্পিত ভাবে বাইরের লোক ঢুকিয়ে তা করা হয়েছে কি না, তা দেখা হচ্ছে। কোথা থেকে তা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে, আপাতত সে সূত্র জোগাড়েই ব্যস্ত পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Kaliyaganj police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy