Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Matua Mahasangha

মতুয়াদের সঙ্গে সম্পর্ক বিশ বছরের, জানালেন মমতা

বনগাঁয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

বনগাঁয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:২২
Share: Save:

বিজেপি-র মতুয়া-রাজনীতির মোকাবিলায় তৎপর হলেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ এবং রানাঘাটের সভায় মঙ্গলবার তিনি উদ্বাস্তুদের স্বার্থে নিজের কর্মকাণ্ড ব্যাখ্যা করেন। পাশাপাশিই মতুয়া সম্প্রদায় এবং তাদের বড়মা বীণাপাণি দেবীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কত নিবিড় এবং পুরনো, তা-ও সবিস্তার জানান। উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটে ওই দুই কেন্দ্রেই হেরেছে তৃণমূল।

মমতা এ দিন প্রথম সভা করেন বনগাঁয়। সেখানে তিনি মনে করিয়ে দেন, মতুয়াদের বড়মা-র সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ২০-২৫ বছর আগেকার। বড়মা যত দিন বেঁচেছিলেন, তত দিন অসুস্থ হলে তিনিই দায়িত্ব নিয়ে তাঁর চিকিৎসার বন্দোবস্ত করেছেন। মতুয়াদের উন্নয়নের দাবিও অনেকাংশেই পূরণ করেছে তাঁর সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘আজ থেকে বিশ বছর আগেকার কথা বলব। তখন আমি বড়মাকে চিনতাম না, মমতাবালা ঠাকুরকেও চিনতাম না, আমাদের এখনকার খাদ্যমন্ত্রী বালু (জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক) তখন আমাকে বলত, দিদি, এক বার বড়মার কাছে যাবে? এক বার মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে যাবে? আমার মনে আছে, আজ থেকে ২০-২৫ বছর আগে ওই যে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে আমি গেলাম, তখন থেকে বড়মার সঙ্গে আমার সম্পর্ক।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বড়মা যত দিন তিনি বেঁচেছিলেন, তখন কেউ তাঁকে দেখেনি। আমি দেখেছি বলে গর্ব করছি না। আপনাদের জানাচ্ছি।’’

মমতা জানান, মতুয়াদের দাবি মেনে স্থানীয় রেলস্টেশনের উন্নয়ন এবং বড়মার অনুরোধে গুরুচাঁদ কলেজ করেছেন তিনি। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ও হচ্ছে। মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদও গড়েছে তাঁর সরকার।

বিজেপির রাজ্য় সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘মতুয়াদের জন্য কে কী করেছেন, তা তাঁরাই সবচেয়ে ভাল জানেন। এক সময়ে তাঁরা সিপিএমকে ভোট দিতেন। তার পর তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। এখন সব দেখেশুনেই তাঁরা বিজেপির দিকে এসেছেন।’’

মতুয়াদের পাশাপাশি অনুকূল ঠাকুরের ভক্তদের সঙ্গেও নিজের গভীর সম্পর্কের কথা এ দিন তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, তাঁদের নতুন আশ্রম গড়ার জন্য মধ্যমগ্রামে সরকারি জমি দেওয়া হয়েছে।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) নিয়ে দেশজোড়া চর্চার প্রেক্ষিতে অনেকেই ভয় পাচ্ছেন, প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে না পারায় তাঁদের নাগরিকত্ব চলে যাবে এবং দেশছাড়া হতে হবে। এই পরিস্থিতিতে মমতা এ দিন বনগাঁ এবং রানাঘাটে জানান, উদ্বাস্তুদের নিঃশর্তে জমির দলিল দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন তিনিই। মুখ্যমন্ত্রী বনগাঁয় বলেন, ‘‘১৯৮৪ সালে আমি যাদবপুরের সাংসদ হয়েছিলাম। যাদবপুর উদ্বাস্তু এলাকা। তখন যাদবপুরের মানুষরা আমায় বলেন, আমরা নিঃশর্তে জমির দলিল চাই। আমি লোকসভায় জিতে গিয়ে দিনের পর দিন লড়াই করে সেটা করিয়ে এনেছিলাম। তাই আজ উদ্বাস্তুরা জমির মালিকানা পেয়েছেন।’’ মমতা আরও জানান, রাজ্য সরকার ৯৪টি কলোনিকে আইনি স্বীকৃতি দিয়েছে। রেল, বন্দরের মতো কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থার জমি বা অন্য কারও জমিতে গড়ে ওঠা উদ্বাস্তু কলোনিকেও আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, সেই সব কলোনির বাসিন্দারাও কোনও না কোনও দিন নিঃশর্তে জমির দলিল পাবেন। মমতা বলেন, ‘‘এগুলো কেন করে দিয়েছি জানেন? যাতে কেউ বলতে না পারে, আইনত তোমার অধিকার নেই। আইনত আপনারা অধিকার পেয়ে গেলেন। আপনাদের কেউ কোনও দিনও এখান থেকে সরাতে পারবে না।’’ রানাঘাটের সভাতেও এই সব তথ্য জানান মুখ্যমন্ত্রী।

অন্য বিষয়গুলি:

Matua Mahasangha TMC BJP Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy