লংমার্চ। সোমবার দুর্গাপুরে। ছবি: বিকাশ মশান
একসঙ্গে পা চালাতে অসুবিধা নেই। একে অপরের প্রতীকে ভোট দিতেও আপত্তি নেই। কিন্তু পতাকা পাশাপাশি রাখতে এখনও দ্বিধা!
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণের প্রতিবাদে এবং কর্মসংস্থানের দাবিতে একসঙ্গেই দীর্ঘ পথ হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাম ও কংগ্রেস। কিন্তু সেই ‘লং মার্চ’-এর গোড়ার দিকেই দু’পক্ষের মধ্যে টানাপড়েন বাধল দলের পতাকা রাখাকে কেন্দ্র করে। সমস্যা মেটাতে হস্তক্ষেপ করতে হল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রকে।
চিত্তরঞ্জন থেকে কলকাতা পর্যন্ত ২৮৩ কিলোমিটারের ‘লং মার্চ’ চলছে সিটু, আইএনটিইউসি, এইচএমএস-সহ কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকে। বামেদের সব গণসংগঠন ওই পদযাত্রায় যোগ দিচ্ছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেনবাবুও বামেদের অনুরোধ মেনে তাঁর দলের সব সংগঠনকে পথের সঙ্গী হতে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে দলের নেতা-কর্মীদের তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন কংগ্রেসের পতাকা নিয়েই পদযাত্রায় যেতে। আর সেটা করতে গিয়েই সমস্যা বাধে পশ্চিম বর্ধমান জেলায়। কংগ্রেস কর্মীদের দলীয় পতাকা ছেড়ে পদযাত্রায় আসতে অনুরোধ করেন জেলার সিপিএম নেতারা।
আরও পড়ুন: স্কুল বাদ, জমিতে আলুর বীজ বোনে ভাতারের খুদেরা
পশ্চিম বর্ধমান জেলা কংগ্রেস সভাপতি তরুণ রায় সতীর্থদের নিয়ে গিয়েছিলেন চিত্তরঞ্জনে ‘লং মার্চ’-এর সূচনায়। তাঁদের যে কংগ্রেসের পতাকা ছাড়া পদযাত্রায় সামিল হতে বলা হয়েছে, সোমেনবাবু সেই খবর পান শিলিগুড়িতে দলের কার্যকরী সভাপতি তথা বিধায়ক শঙ্কর মালাকারের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে। বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি-র নেতা গৌরব গগৈও সেখানে ছিলেন। দলের নেতাদের বক্তব্য শুনে সোমেনবাবু যোগাযোগ করেন সূর্যবাবুর সঙ্গে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তখন ফিরছিলেন ঘাটালে দলীয় কর্মসূচি সেরে। আগে থেকে আলোচনা হওয়া সত্ত্বেও কেন এমন পরিস্থিতি হচ্ছে, তা নিয়ে সূর্যবাবুর সঙ্গে কথা বলার পরে সোমেনবাবু আবার পশ্চিম বর্ধমানের জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছেন, এর জেরে তাঁরা যেন পদযাত্রা থেকে সরে না দাঁড়ান।
তরুণবাবুর বক্তব্য, ‘‘প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আমাদের বলেছিলেন পতাকা নিয়েই পদযাত্রায় যেতে। সেখানে গিয়ে পতাকা রাখা যাবে না শুনে অবাক হয়েছিলাম। খানিকটা বেহায়ার মতোই দলের কিছু পতাকা রেখেও দিয়েছিলাম!’’ সোমেন-সূর্য কথার পরে সোমবার রানিগঞ্জ থেকে দুর্গাপুরের পথে তরুণবাবুরা আবার ‘লং মার্চ’-এ সামিলও হয়েছিলেন।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের ব্যাখ্যা, ‘‘এই পদযাত্রা হচ্ছে গণসংগঠনের পতাকা নিয়ে। যে কারণে ‘লং মার্চ’ শেষে আগামী ১১ ডিসেম্বর কলকাতার সমাবেশেও সূর্যদা বা সোমেনবাবু বক্তা নন। শ্রমিক নেতৃত্বই সেখানে বক্তা। যুব কংগ্রেস বা আইএনটিইউসি-র পতাকা অবশ্যই থাকতে পারে। সরাসরি দলের পতাকা কেউই রাখছে না।’’ সিপিএমের সুবিধা, সিটু বা কৃষক সভার পতাকায় দলের প্রতীক আছে। কিন্তু আইএনটিইউসি বা যুব কংগ্রেসের পতাকায় কংগ্রেসের প্রতীক নেই। তবে টানাপড়েন সত্ত্বেও প্রদেশ যুব কংগ্রেসের সভাপতি শাদাব খান সতীর্থদের নিয়ে ডিওয়াইএফআইয়ের সায়নদীপ মিত্রদের সঙ্গে পথ নেমেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy