ট্রাক থেকে খাবার সন্ধান চলছে গজরাজের। ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
রাজ্য সড়কের উপর সার দিয়ে গাড়ির লাইন। সাত সকালে প্রকাশ্যে চলছে ‘তোলাবাজি’। ভয়ে কাঁটা হয়ে গাড়িতে বসে রয়েছেন চালক এবং যাত্রীরা। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে ‘তোলাবাজি’র পর, তোলা মনপসন্দ না হওয়ায় রাগের চোটে একটা পিক আপ ভ্যান উল্টে দিয়ে প্রস্থান তোলাবাজের। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন পথচলতি মানুষ।
শুক্রবার সকাল ৬টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে লোধাশুলি-ঝাড়গ্রাম ৫ নম্বর জাতীয় সড়কে। আর অভিযুক্ত ‘তোলাবাজ’ ওই এলাকার জঙ্গলে থাকা একটি দাঁতাল হাতি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গড় শালবনির জঙ্গল থেকে হঠাৎই রাস্তায় উঠে আসে একটি বিশাল দাঁতাল হাতি। রাস্তায় মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়ে সেটি। ফলে মুহূর্তের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় সমস্ত যান চলাচল। একে একে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে যায় সমস্ত গাড়ি। এর পর গজরাজ ধীরে সুস্থে সমীক্ষা শুরু করে, কোন গাড়িতে কী আছে?
এ ভাবেই গজরাজ গিয়ে থামে একটা মালবোঝাই মিনি ট্রাকের সামনে। শুঁড় তুলে টের পায় ওই ট্রাকে রয়েছে চাল-গম জাতীয় কিছু। এর পরেই ‘অ্যাকশন’ শুরু। শুঁড়-দাঁত দিয়ে প্রথমে ট্রাকের দড়ির বাঁধন খুলতে ব্যর্থ হয়ে দাঁত বিঁধিয়ে সটান ট্রাকের ত্রিপল ফুড়ে ফুটো করে দেয়। ফুটো বস্তা থেকে ঝর ঝর করে পড়তে থাকে খাদ্যশস্য। খানিকটা খাওয়ার পর যদিও গজরাজের হাবভাব দেখে বোঝা যায় যে সে খুব একটা ‘সন্তুষ্ট’ নয়।
ওই ট্রাক ছেড়ে আরও কয়েকটা পণ্যবাহী গাড়িতে একই ভাবে হানা দেয় সে। শুঁড় দিয়ে বা দাঁত ফুটিয়ে পরখ করে দেখে ভিতরে কী আছে। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি করেও মনের মতো খাবার না পেয়ে ক্ষেপে যায় সে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, এর পরই সে শুকে দেখে রাস্তার পাশে দাঁড়ানো একটা পিক আপ ভ্যান। ওষুধ বোঝাই ছিল ওই ভ্যানে। ওষুধের গন্ধ পছন্দ না হওয়ায় মেজাজ হারিয়ে শুঁড় দিয়ে এক টান মারে। গোটা গাড়ি নড়ে ওঠে। অবশ্য তার আগেই গাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিলেন চালক এবং খালাসি। গজরাজ ‘তোলা’ না পাওয়ার রাগে এর পর ধাক্কা দিয়ে উল্টেই দেয় ওই পিক আপ ভ্যানকে। তার পর হেলতেদুলতে ফের সেঁধিয়ে যায় জঙ্গলে।
আরও পড়ুন: বিধানসভায় হাতাহাতির উপক্রম, ওয়েলে নেমে পরিস্থিতি সামলালেন মমতা
তত ক্ষণে খবর পেয়ে অবশ্য হাজির বনদফতরের কর্মীরা। তাঁদের দাবি, ওই দাঁতালটি গড় শালবনী জঙ্গলের রেসিডেন্ট হাতি। এ রকম আরও কয়েকটা হাতি রয়েছে ওই জঙ্গলে। বনকর্মীদের মতে, খাবার না পেয়ে পেটের দায়েই রাস্তা আটকে গাড়িতে হানা দিয়েছিল ওই দাঁতাল।
আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর ১৫ মিনিটের পর ‘টাচ ডাউন’, চাঁদের মাটি ছুঁয়ে ল্যান্ডার বিক্রম থেকে আলাদা হবে রোভার
এ ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। ২০০৬-০৭ সালে রাঁচী- জামশেদপুর সড়কে এ রকমই একটি গুন্ডা হাতি নিয়মিত রাস্তায় উঠে গাড়ি থামিয়ে খাবারদাবার লুঠ করত। বহু কষ্টে বন দফতর সেই গুন্ডা দাঁতালকে বাগে আনে এবং জঙ্গলে ফিরিয়ে দেয়। বনকর্মীদের কথায়, ‘‘খাবারের অভাব থেকেই এতটা মরিয়া হয়ে যায় হাতি। আশপাশের লোকালয়ে হানা দেয়। বাড়ি ঘর ভাঙে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy