Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪

দল পাল্টে গাড়ির স্বপ্নে বিভোর তুষার

বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্যের বড় ইচ্ছা চার চাকায় ঘোরার! বিধায়ক হওয়ার পরে প্রথম বার বিধানসভায় এসে কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতা আব্দুল মান্নানের কাছে মনের কথাটি তিনি গোপন করেননি।

অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য

অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য

প্রসূন আচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৬ ০৪:৩৭
Share: Save:

বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্যের বড় ইচ্ছা চার চাকায় ঘোরার!

বিধায়ক হওয়ার পরে প্রথম বার বিধানসভায় এসে কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতা আব্দুল মান্নানের কাছে মনের কথাটি তিনি গোপন করেননি। বলেছিলেন, ‘‘আমার এলাকা এত বড়, গাড়ি না হলে মানুষের কাছে যাব কী করে?’’ মান্নান তেমন গুরুত্ব দেননি বিষ্ণুপুরের এই প্রবীণ কংগ্রেস নেতার কথায়। তিনি নিজে রোজ শেওড়াফুলি থেকে লোকাল ট্রেনে হাওড়া স্টেশন, তার পর লঞ্চে করে বাবুঘাট, সেখান থেকে হেঁটে বিধানসভায় আসেন। অতীতে ১৫ বছর বিধায়ক থাকার সময়েও নিজের গাড়ি ছিল না। সুতরাং তুষারবাবুর কথাটা এক রকম উড়িয়েই দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। দীর্ঘ দিনের কংগ্রেস কাউন্সিলর তুষারবাবুও এত কাল মোটরবাইকের পিছনে বসেই ঘুরতেন। তাতে অসুবিধা হচ্ছিল? তুষারবাবুর উত্তর, ‘‘এক জন বাইক চালায়। পিছনে আমার দেহরক্ষী। মাঝখানে স্যান্ডউইচ হয়ে আমাকে ঘুরতে হয়।’’ এই স্যান্ডউইচ দশা থেকে মুক্তি পেতেই তাঁর মতো বয়স্ক মানুষ একটি গাড়ি চাইছেন বলে তুষারবাবুর দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘বিষ্ণুপুর পুরসভার চেয়ারম্যান শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সারা দিন গাড়ি নিয়ে শহরেই ঘোরেন। আরও অনেকেই ঘোরে। কিন্তু বিধায়ক হিসাবে আমাকে গ্রামের মানুষের কাছেও যেতে হবে। গাড়ি না পেলে কী করে মানুষের দরজায় যাব?’’ ২১ জুলাই দল বদল করে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে অবধিও তুষারবাবু ভেবেছিলেন হয়ত কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটা চার চাকার প্রস্তাব আসবে তাঁর কাছে। আসেনি! বরং ঘনিষ্ঠ মহলে তুষারবাবুর এই ইচ্ছা নিয়ে রীতিমতো হাসাহাসি করেছিলেন মান্নান। ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছিলেন, ‘‘গাড়ির সঙ্গে চালক, তার পর তেলের খরচ…..তুষারের আব্দার তো দিন দিন বাড়তেই থাকবে! মেটাবে কে?’’

দল বদলের পরে এখন তুষারবাবু আশায় আছেন, তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁর জন্য নিশ্চয়ই একটি গাড়ি বরাদ্দ করবেন। যদিও মনের কথাটি এখনও স্পষ্ট করে তিনি কাউকে বলেননি। কাকে বলবেন, সে কথাই ভাবছেন। জেলা নেতৃত্ব? সাংসদ মুকুল রায়, নাকি পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়— কার কাছে পাড়বেন মনের কথাটি!

তা হলে কি গাড়ির জন্যই দল পাল্টালেন? তুষারবাবুর জবাব, ‘‘সেটা ভাবলে ভুল হবে। এসেছি বিষ্ণপুরের উন্নয়নের জন্য।’’ রাজ্যে যে দল ক্ষমতায় আছে, সেই দলের বিধায়ক হলে তবেই পুর বা পঞ্চায়েত এলাকায় উন্নয়ন সম্ভব হবে বলে তুষারবাবুর উপলব্ধি। তাঁর দাবি, ১৯৮৬ সাল থেকে চার বছর বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান থেকে নিজের অভিজ্ঞতায় তিনি দেখেছেন, জেলায় সিপিএমের হাতে থাকা পুরসভা টাকা পেত, বিষ্ণুপুর পেত না। কিন্তু এখন পুর-প্রধান তো শ্যামাবাবু! আপনার প্রতিপক্ষ! আপনি কী করে উন্নয়ন করবেন? তুষারবাবুর জবাব, ‘‘মানুষের কথা শুনব। তৃণমূল নেতৃত্ব, মন্ত্রীদের কাছে তা তুলে ধরব। এত ঘোরার জন্য তো একটা গাড়ি দরকার, তাই না?’’

অন্য বিষয়গুলি:

tushar kanti bhattacharya TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy