প্রাক্তন স্ত্রী খুন হয়েছেন আত্মীয়াদের হাতে! ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয়েছে তাঁকে। হত্যার পর টুকরোও করা হয়েছে মহিলার দেহ! এই ঘটনার কথা শুনে হতবাক ট্রলি-কাণ্ডে নিহত সুমিতা ঘোষের প্রাক্তন স্বামী সুদীপ্ত ঘোষ। বললেন, ‘‘খারাপ লাগছে। সুমিতাই তো আমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে চলে গিয়েছিল। এখন আমার আর কী করার আছে? কী-ই বা বলার আছে?’’
সুদীপ্ত পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাট কালীতলার বাসিন্দা। জানান, মঙ্গলবারই টেলিভিশনের খবরে প্রাক্তন স্ত্রী সুমিতার খুন হওয়ার কথা জেনে শিউরে উঠেছেন তিনি। তার পর থেকে তাঁর মন ভারাক্রান্ত। সুদীপ্ত বলেন, ‘‘সুমিতা ঘোষের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু সংসার টিকল না! ২০১৭-১৮ সালে আমাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছিল।’’
কিন্তু কী কারণে বিচ্ছেদ? এই প্রশ্নের জবাব দিতে চাননি সুদীপ্ত। তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, পারিবারিক অশান্তির কারণেই দু’জনের সম্পর্ক ভেঙেছিল। এক সময়ে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন সুদীপ্ত। তখন গ্রামের বাড়িতে কমই থাকতেন। বিবাহবিচ্ছেদের পর থেকে আর চাকরি করেন না সুদীপ্ত। এখন গ্রামে চাষ করেন। সুমিতার পরিণতিতে স্তম্ভিত গ্রামবাসীরাও। সুদীপ্তের এক পড়শি বলেন, ‘‘সুমিতা এক সময়ে এই গ্রামেরই বৌ ছিল। টিভিতে দেখার পর থেকে ভীষণ খারাপ লাগছে।’’
মঙ্গলবার কলকাতার কুমোরটুলি ঘাটে একটি ট্রলি ব্যাগ থেকে সুমিতার টুকরো দেহ উদ্ধার হয়। ওই ট্রলি ব্যাগটি গঙ্গায় ফেলতে এসেছিলেন দুই মহিলা। তাঁদের নাম ফাল্গুনী ঘোষ এবং আরতি ঘোষ। তাঁরা সম্পর্কে মা এবং মেয়ে। তাঁদের হাতে থাকা ট্রলি ব্যাগ থেকে রক্ত চুঁইয়ে পড়তে দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। পরে স্থানীয়েরাই তালা ভেঙে ট্রলি ব্যাগ খুলে সুমিতার দেহ উদ্ধার করেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার শিকড় মধ্যমগ্রামে। মধ্যমগ্রামের দক্ষিণ বীরেশপল্লির বাসন্তী মন্দির এলাকায় ফাল্গুনীদের বাড়িতে থাকতে গিয়েছিলেন পিসিশাশুড়ি সুমিতা। পুলিশ সূত্রে খবর, সম্পত্তি নিয়ে বিবাদে সেখানেই সুমিতাকে খুন করা হয়। ফাল্গুনী এবং আরতিকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে।