কবে থেকে চলবে ট্রেন। ফাইল চিত্র।
সকাল ও সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে সীমিত সংখ্যক লোকাল ট্রেন চালানোর কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। ট্রেনের সংখ্যার আনুপাতিক হারে যাত্রী পরিবহণের অনুমতি দেওয়া হতে পারে। শহরতলির লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরু করার বিষয়ে আজ, সোমবার বিকেল ৫টায় নবান্নে রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ।
সাধারণ যাত্রীরা শনিবার হাওড়ায় রেলকর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট ট্রেনে উঠতে চাওয়ায় ব্যাপক গোলমাল হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রেলরক্ষী বাহিনী লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ওই ঘটনার নিন্দা করে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার সুনীত শর্মাকে চিঠি দেন। তাতেই রেলের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছে প্রকাশ করে রাজ্য। সেই অনুযায়ী আজ বৈঠক বসছে। রাজ্যের তরফে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজি (আইনশৃঙ্খলা), কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার, প্রিন্সিপাল চিফ অপারেশন ম্যানেজার এবং অন্যান্য আধিকারিক আলোচনায় থাকবেন।
লোকাল ট্রেন চালু করার দাবি জানিয়ে কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী রবিবার রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে চিঠি দিয়েছেন। হাওড়ায় গোলমালের নিন্দা করে দ্রুত রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় সমস্যার সমাধান খোঁজার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাজি বিক্রি নয়, সিদ্ধান্তে কালিকাপুর বাজিবাজার
রেল ও রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, অতিমারির মধ্যে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করে কী ভাবে সুষ্ঠু উপায়ে লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরু করা যায়, তার উপায় খোঁজাই এ দিনের বৈঠকের মূল আলোচ্য। রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে জানান, মেট্রোর মতো ভার্চুয়াল উপায়ে ভিড় নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যে-সংস্থা মেট্রোয় ই-পাস ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে, বৈঠকে তাদের প্রতিনিধির সঙ্গেও কথা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।
মুম্বইয়ে লোকাল ট্রেনে ভিড় নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা নিয়ে কলকাতা মেট্রোয় ই-পাসের ভারপ্রাপ্ত সংস্থার সঙ্গে রেলের আলোচনা চলছে। ওই শহরে প্রতিদিন অন্তত ৮৫ লক্ষ যাত্রী লোকাল ট্রেনে চড়েন। কলকাতায় প্রাক্-করোনা পরিস্থিতিতে লোকাল ট্রেনে দৈনিক যাত্রী-সংখ্যা ছিল ৩৫ লক্ষের মতো। নতুন ব্যবস্থায় মুম্বইয়ে বিপুল সংখ্যক যাত্রীর মাত্র এক-চতুর্থাংশ যাতায়াতের সুযোগ পেতে পারেন। তাঁদের মধ্যে আছেন জরুরি পরিষেবার সাড়ে ১৩ লক্ষ কর্মী।
পরিকল্পনা কী
• মেট্রোর ধাঁচে ভিড়ে লাগাম দেওয়াই মূল লক্ষ্য।
• সরকার চায় ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে ভিড়-রাশ। সমগ্র ব্যবস্থাপনায় সময় লাগতে পারে বেশ কয়েক দিন।
• প্রাক্-করোনাকালে হাওড়া ও শিয়ালদহে রোজ লোকাল চলত ১৪০০টি। অতিমারিতে ট্রেনের সংখ্যা কমতে পারে এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত।
• প্রাক্-করোনাকালে হাওড়া ও শিয়ালদহে লোকালে দৈনিক যাত্রী-সংখ্যা ছিল ৩৫ লক্ষ। এখন সংখ্যাটা কম রাখতে হবে পরিস্থিতি অনুযায়ী। মুম্বইয়ে দৈনিক যাত্রী ৮৫ লক্ষ থেকে কমিয়ে সাড়ে ২২ লক্ষ করা হচ্ছে।
স্টেশনে ভিড় ও অশান্তি এড়াতে ভার্চুয়াল উপায়ে ভিড় নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে বঙ্গ। সে-ক্ষেত্রে মেট্রোয় গৃহীত ব্যবস্থাপনাই গুরুত্ব পেতে পারে। সামগ্রিক ভাবে ওই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে প্রস্তুতি সারতে বেশ কিছু দিন সময় লাগতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট শিবিরের ধারণা।
শনিবারের গন্ডগোলের প্রেক্ষিতে রেলকর্মীদের জন্য হাওড়া-শিয়ালদহে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। রেলকর্তারা জানান, এক মাস ধরেই রেলকর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট বিশেষ ট্রেনে সাধারণ যাত্রীদের উঠতে চাওয়াকে ঘিরে সমস্যা হচ্ছে। রাজ্যকে সব জানিয়ে আলোচনা চেয়ে ১ সেপ্টেম্বর এবং ১৩ অক্টোবর দু’টি চিঠি পাঠানো হয়েছিল। শনিবারেই তার প্রথম উত্তর এসেছে। ‘‘রাজ্যের পরামর্শের ভিত্তিতেই ট্রেন চালানো হবে,’’ বলেন পূর্ব রেলের এক আধিকারিক।
আরও পড়ুন: এ বার যাত্রী প্রত্যাখ্যানের রোগ বাইক ট্যাক্সিতেও
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রশ্ন, লোকাল ট্রেন চালানোর জন্য রেল-রাজ্য এত দিন বৈঠকে বসেনি কেন? ‘‘এই বিষয়ে কথা বলার জন্য কেন্দ্র বার বার চিঠি লিখেছে। ওদের কানে জল ঢোকেনি! অন্য রাজ্যে যদি লোকাল ট্রেন চলতে পারে, এখানে বাস, ট্রাম, অটো, টোটো চলতে পারে, তাতে যদি সংক্রমণ না-বাড়ে, ট্রেন চললেই বেড়ে যাবে? সাত মাস ধরে মানুষের উপার্জন বন্ধ। বিকল্প ব্যবস্থা কিছু করুন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy