—প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েতের তিন স্তরে দলের নির্বাচিতদের একটা বড় অংশকে এ বার বাদ দেওয়ায় অসন্তোষ রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসে। সেই অসন্তোষ যে-দিকে গড়াচ্ছে, তাতে অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না দলীয় নেতৃত্বের একাংশ। সে ক্ষেত্রে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর মতো সরকারের প্রকল্পের সুফল শাসক দলের পক্ষে আসবে কি না, সংশয় তৈরি হয়েছে তা নিয়েও। প্রচারে জেলায় পাঠানো দলীয় নেতাদেরও তা ‘মেরামতি’র চেষ্টা করতে বলা হয়েছে।
দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তীব্র হয়ে ওঠায় এ বার মুখ বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৃণমূল। প্রাথমিক ভাবে প্রায় ৬০-৭০% প্রার্থী বদলের কথাও ভাবা হয়েছিল। দলীয় সূত্রে খবর, ততটা না হলেও এ বার প্রায় সব জেলাতেই বহু নতুন মুখ আনা হয়েছে। তাতেই ‘বিদায়ী’দের একটা অংশে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ভোটে এই অংশের ভূমিকা কী হবে, তা নিয়েই জেলায় জেলায় খোঁজ করছে দলের পরামর্শদাতা সংস্থা। আর রাজ্য স্তরের যে-নেতারা জেলায় জেলায় প্রচারে যাচ্ছেন, বিষয়টি তাঁদেরও দেখতে বলা হয়েছে।
নতুন মুখ আনার লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাইয়ে ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা করেছিল তৃণমূল। এই ব্যবস্থায় সংগঠনের নীচের তলার মতকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পরে তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্নের মুখে পড়েছেন দলের জেলার নেতারা। বহু ক্ষেত্রেই এই প্রক্রিয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের জেলা স্তরের পদাধিকারী ও বিধায়কেরাও। সেই প্রশ্নেই দুশ্চিন্তার কথা স্বীকার করে রাজ্য দলের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘কয়েকটি জেলায় এই পরিস্থিতি আছে। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁরা ভোট ঘুরিয়ে দিতে পারবেন বলে মনে হয় না।’’ এই অসন্তুষ্টেরা কিছু জায়গায় দলের নির্দেশ উপেক্ষা করে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন বা দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করছেন। ওই নেতার কথায়, ‘‘ক্ষোভ মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে। দল নজর রাখছে।’’
প্রকাশ্যে অবশ্য এই সমস্যা মানতে নারাজ তৃণমূল। রাজ্য দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘ক্ষোভ-বিক্ষোভ যা আছে, আমরা তা মিটিয়েই এগোচ্ছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এই ক্ষোভ-বিক্ষোভে প্রমাণ হয়, তৃণমূল জিতবে বলেই সকলে প্রার্থী হতে চাইছেন।’’
পুরোদস্তুর প্রচার শুরুর পরে নীচের তলায় বিরোধী দলগুলির ‘বোঝাপড়া’ও নজরে এসেছে তৃণমূল নেতৃত্বের। উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ির পাশাপাশি দুই দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও হুগলিতে এই বিক্ষুব্ধেরা চিন্তায় রেখেছে শাসক দলকে। এই সব জায়গায় তারা বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃণমূলকে চাপে ফেলতে চাইতে পারে, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না দলের নেতারা। এই তালিকায় পূর্ব মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম রয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কাজ করা নিয়ে শীর্ষ স্তর থেকে বারবার শাস্তির কথা বলা হলেও তা সর্বত্র এই বিক্ষুব্ধদের নিরস্ত করতে পারেনি। যেমন, প্রার্থী নিয়ে মুর্শিদাবাদের বিক্ষুব্ধ চার বিধায়কের ক্ষোভ প্রশমনে শেষ বেলায় উদ্যোগী হয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
এ ছাড়াও, তৃণমূল স্তরে সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপির সম্মিলিত বিরোধিতা দলের জন্য ভোটের লড়াইকে কঠিন করে তুলতে পারে বলে মনে করছেন একাধিক জেলার নেতৃত্ব। সে ক্ষেত্রে শাসক দলের বিরুদ্ধে বিরোধীরা তাদের মধ্যে সব থেকে শক্তিশালীকেই যদি কার্যকর প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরে, তা হলে একের বিরুদ্ধে এক হয়ে যাওয়াও অসম্ভব নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। এই ‘জোড়া বিপদে’ নজর রাখছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy