মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার ‘পরামর্শ’ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ। কথা কি বলবেন মুখ্যমন্ত্রী? প্রশ্ন শুনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, কথা আগেও বলেছেন, দরকারে ভবিষ্যতেও বলবেন, তবে আপাতত আবার ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের জন্য তৈরি হচ্ছেন তাঁরা। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে দিল্লি পুলিশের কাছে আবেদনও জানানো হয়েছে। তবে কর্মসূচির দিনক্ষণের বিষয়ে কিছু জানাননি মমতা।
১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকার দাবিতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বহু দিন ধরেই সরব রয়েছে তৃণমূল। গত অক্টোবরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দিল্লি অভিযান করেছিল বাংলার শাসকদল। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে তৃণমূল যে ফের দিল্লিতে যাবে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চাইবে, তা গত ২৪ নভেম্বর দলের বিশেষ অধিবেশনেই ঘোষণা করেছিলেন মমতা। সেই সঙ্গে মমতা এ-ও বলেছিলেন, ‘‘সময় দিলে ভাল। না দিলে রাস্তাই আমাদের রাস্তা দেখাবে।’’ আগের বার রামলীলা ময়দান চেয়ে পায়নি তৃণমূল। এ বার আগেভাগে দিল্লি পুলিশের অনুমতি চাইছে তারা। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে হঠাৎই চলে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ। বসে পড়েন সুদীপের পাশে। দেখা যায় দু’জনে কথা বলছেন। পরে সুদীপ জানিয়েছিলেন, গিরিরাজ তাঁকে বলেছেন, ‘‘আপনাদের মুখ্যমন্ত্রীকে বলুন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এসে দেখা করতে। বকেয়া টাকা দেওয়া আমার এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। প্রধানমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে নির্দেশ দিতে হবে।’’
বুধবার মমতা উত্তরবঙ্গ রওনা হওয়ার আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘আমি শুনেছি গিরিরাজ সিংহ কী পরামর্শ দিয়েছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিন বার দেখা করেছি। আবার দেখা করতে অসুবিধা নেই। আমাদের আবার দিল্লি চলো হবে।’’ ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে এর আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা ছাড়াও একাধিক চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। গিরিরাজকেও একাধিক চিঠি লিখেছেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তৃণমূলের দাবি, গোটা প্রকল্পের টাকা বন্ধ করার পাশাপাশি, কাজ করানোর পরও মজুরির টাকা আটকে রাখা হয়েছে। তার অঙ্ক সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা বলে দাবি নবান্নের।
চলতি অধিবেশনে তৃণমূল সাংসদ দেব কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে লিখিত ভাবে বলেছিলেন, সারা দেশে কত ভুয়ো জব কার্ড বাতিল হয়েছে, তার রাজ্যওয়াড়ি তালিকা দেওয়া হোক। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি দেবের প্রশ্নের লিখিত জবাব দেন। তাতে দেখা যাচ্ছে— গত দু’টি অর্থবর্ষে ভুয়ো জব কার্ড বাতিলে শীর্ষে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। কেন্দ্রের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে সারা দেশে ভুয়ো জবকার্ড বাতিল হয়েছে ১০ লক্ষ ৫০ হাজার ৪০১টি। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভুয়ো কার্ড বাতিল হয়েছে উত্তরপ্রদেশে—তিন লক্ষ ৬৪ হাজার ৪০১টি। তার পরেই রয়েছে ওড়িশা— এক লক্ষ ৬৫ হাজার ১৫০টি। এর পর যথাক্রমে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ এবং বিহার। দু’টি রাজ্যেই দু’বছরে এক লক্ষের বেশি ভুয়ো জব কার্ড বাতিল করা হয়েছে। সেখানে বাংলা? দেখা যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যে গত দু’বছরে বাতিল হওয়া ভুয়ো জব কার্ডের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৬৫১টি। বাংলার উপরে রয়েছে ঝাড়খণ্ড, রাজস্থানও। ঝাড়খণ্ডে বাতিল হওয়া জব কার্ডের সংখ্যা ৯৪ হাজার ২০১টি। রাজস্থানে ৬০ হাজার ৪২৮টি। সেই প্রসঙ্গ তুলে মমতা বুধবার বলেন, ‘‘সবচেয়ে বেশি ভুয়ো কার্ড তো উত্তরপ্রদেশে। কই, সেখানে কি টাকা বন্ধ করেছে?’’ সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘‘শুধু তো ১০০ দিনের কাজের টাকা নয়। আবাস যোজনা, সড়ক যোজনা— সব কিছুর টাকা বন্ধ করে দিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy