তৃণমূল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
আমপানের ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে লেগে যাওয়া দুর্নীতির কালি মুছতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ভোটে যাতে বিরোধীরা এই বিষয়টিকে বড় হাতিয়ার করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে কোনও রকম শিথিলতায় রাজি নন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতার সর্বদল বৈঠকেই এই আভাস মিলেছিল। বৃহস্পতিবার আরও এক পা এগিয়ে দলের জেলা সভাপতিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সব অভিযোগের তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দিল তৃণমূল ভবন।
লকডাউনের সময় দুর্নীতি ঠেকাতে রেশন ও সরকারি ত্রাণ থেকে দলীয় নেতাদের দূরে রাখতে বলা হয়েছিল। এ বার আমপানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে একই পদক্ষেপ করতে চলেছে শাসক শিবির। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি তালিকায় জায়গা দিতে নতুন করে সমীক্ষা করতে বলা হয়েছে বিডিওদের। প্রয়োজনে অনুমোদিত তালিকা বাতিল করে এই অভিযোগ থেকে দায়মুক্ত হতে চাইছেন তারা। এ দিন দলের জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠকে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী জানিয়ে দিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত নেতা-পদাধিকারীকে শো-কজ করে ঘটনার তদন্ত শেষ করতে হবে। এবং কী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তা জানাতে হবে রাজ্য নেতৃত্বকে। এ ভাবে সাংগঠনিক স্তরে জেলা সভাপতিদের দায়বদ্ধতাও নির্দিষ্ট করতে চাইছেন দলীয় নেতৃত্ব। বৈঠকে ছিলেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
গোড়ায় বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব না- দিলেও জেলা থেকে পাওয়া রিপোর্ট দেখে আশঙ্কিত তৃণমূল নেতৃত্ব। ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোরের টিম-ও এই অভিযোগের বাস্তবতা সম্পর্কে দলের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট দিয়েছে। কোন জেলায় কত অভিযোগ রয়েছে, এ দিনের বৈঠকে তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা রাখতে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত বাছাই করার দায়িত্ব পুরোপুরি দেওয়া হয়েছে বিডিওদের হাতে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্তেরা সাদা কাগজে আবেদন করলেই তা বিবেচনাযোগ্য। এর জন্য কোনও ফর্ম নেই। তা ছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদনে পঞ্চায়েতের পদাধিকারীদের ফোন নম্বর ব্যবহারের বিষয়টিও সরকারি ভাবে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্তদের ফোন না-থাকা বা ব্যবহার না জানার সমস্যা থাকতে পারে। আবার সেই সুযোগে অনিয়মও করা হতে পারে। তাই সব কিছু যাচাই করতে বলা হচ্ছে।
তৃণমূলের একাংশের মতে, ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য বিলিতে যে অনিয়ম হয়েছে তাকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বিরোধীরা। বিধানসভা ভোটের আগে এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সন্তোষজনক ভূমিকা নিতে না-পারলে চার-পাঁচটি জেলায় ধাক্কা আসতে পারে বলেও মনে করছে তারা। প্রসঙ্গত, বুধবারই সর্বদল বৈঠকে ত্রাণে অনিয়ম ও দলবাজির অভিযোগে সরব হয়েছিলেন বিরোধী নেতারা। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ত্রাণ নিয়ে এই অনিয়ম তিনি বরদাস্ত করবেন না। তার পরেই দলীয় নেতাদের এই বার্তাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy