সব্যসাচী দত্ত (বাঁ দিকে) ও তাপস চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
বিধাননগরের মেয়রের পদ থেকে যে সব্যসাচী দত্তকে সরানো হচ্ছেই, কাউন্সিলরদের নিয়ে ফিরহাদ হাকিমের বৈঠক শেষ হওয়ার পরই তা ক্রমশ স্পষ্ট হতে শুরু করল। দলীয় সূত্রে খবর, আপাতত মেয়র সব্যসাচী দত্তর পরিবর্তে পৌর নিগমের কাজ দেখভাল করবেন ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়। যদিও তৃণমূলের কেউ এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বৈঠক সেরে বেরনোর সময় ফিরহাদ হাকিমও সিদ্ধান্তের বিষয়ে মন্তব্য এড়িয়ে যান। যা জানানোর তিনি দলনেত্রীকেই জানাবেন, বলেন ফিরহাদ। তবে তৃণমূলের একটি অংশ দাবি করছে, বৈঠক থেকেই সব্যসাচীকে ফোন করে ফিরহাদ হাকিম জানিয়ে দিয়েছেন যে, তাঁর আপাতত পুরসভায় ঢোকার দরকার নেই।
ভোটের আগে মুকুল রায়কে বাড়িতে ডেকে লুচি আলুর দম খাইয়েছেন। ভোটের পরও বার বার বিতর্কিত মন্তব্য করে দলকে অস্বস্তিতে ফেলছিলেন বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত। এর পর শনিবার বিদ্যুৎ ভবনে বিক্ষোভে দলকে কার্যত হুঁশিয়ারি দেন। বলেন, ‘‘দলবিরোধী কথা বলছি মনে হলে আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হোক।’’ এই মন্তব্য করে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে কার্যত খোলাখুলিই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন সব্যসাচী দত্ত। রাজনৈতিক শিবিরের পর্যবেক্ষণ, এর পর সব্যসাচীর ডানা ছাঁটা কার্যত অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছিল।
এই পরিস্থিতিতেই রবিবার বিধাননগর পুরসভার কাউন্সিলরদের নিয়ে তৃণমূল ভবনে বৈঠকে বসেন ফিরহাদ হাকিম। যদিও সেই বৈঠকে ডাকাই হয়নি সব্যসাচীকে। তখনই কার্যত বোঝা গিয়েছিল, সব্যসাচীর ভূমিকায় দল প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। তৃণমূলের একটি অংশের মতে, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে কার্যত দলের শৃঙ্খলাই নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। অন্য অনেক নেতা-নেত্রীই একই ভাবে এই পন্থা নিতে পারত।
রবিবারের বৈঠকে অধিকাংশ কাউন্সিলররই উপস্থিত থাকলেও সব্যসাচী অনুগামী বেশ কয়েক জন আসেননি। বৈঠকে ফিরহাদ হাকিম কাউন্সিলরদের মতামত জানতে চান। তৃণমূল ভবন সূত্রে খবর, অধিকাংশ কাউন্সিলরই সব্যসাচীর বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেন। বৈঠকে হাজির একাধিক কাউন্সিলরের সূত্রে খবর, তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিধাননগর পুরসভার যাবতীয় কাজ আপাতত মেয়র সব্যসাচী দত্তর পরিবর্তে দেখভাল করবেন ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়। এমনকী, মেয়র পারিষদদের বৈঠকও ডাকবেন তিনিই। তাপস ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামিকাল সোমবার অথবা বুধবার তিনি মেয়র পারিষদদের বৈঠকও ডাকতে পারেন।
তৃণমূল ভবনে বৈঠকে ঢুকছেন বিধাননগর পুরসভার কাউন্সিলররা। —নিজস্ব চিত্র
আরও পডু়ন: কাটমানির অভিযোগের জের, সেই প্রোমোটারের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা ঠুকলেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন
আরও পডু়ন: ফিরল রবিনসন স্ট্রিটের স্মৃতি, সরশুনার ফ্ল্যাটে তিনদিন ধরে বৃদ্ধার মৃতদেহ আগলে বাবা-মেয়ে
তৃণমূল ভবনের একটি সূত্রে খবর, বৈঠক চলাকালীনই সব্যসাচীকে ফোন করেন ফিরহাদ। সেই সময়ই ফিরহাদ সব্যসাচীকে বলে দেন, তাঁর আর বিধাননগর পুরসভায় ঢোকার দরকার নেই। অর্থাৎ সব্যসাচীকে অপসারণের সিদ্ধান্তও প্রায় চূড়ান্ত।
যদিও বৈঠক থেকে বেরিয়ে ফিরহাদ কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু জানান, ‘‘কাউন্সিলরদের মতামত জানলাম। এর পর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাউন্সিলরদের মতামত বিস্তারিত ভাবে জানাব।’’ তবে সব্যসাচী যে দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছেন, তাও স্পষ্ট ফিরহাদের কথায়। তিনি বলেন, ‘‘কেউ শৃঙ্খলাভঙ্গ করলে দল তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। আর বৈঠকের বিষয়ে কিছু মন্তব্য করলে আমার বিরুদ্ধেও সব্যসাচীর মতোই শৃঙ্খলাভঙ্গের বৈঠক ডাকতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy