শুক্রবার কালীঘাটে নিজের বাড়িতেই বৈঠক ডেকেছিলেন মমতা। সেখানে সাংসদ, বিধায়কদের পাশাপাশি জেলার নেতাদেরও ডাকা হয়েছিল। — ফাইল চিত্র।
অশনি সঙ্কেত দেখা গিয়েছে সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফলে। তৃণমূল যে চিন্তিত ইতিমধ্যেই তা স্পষ্ট। চিন্তিত স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাগারদিঘি হারানোর কারণ খুঁজতে আগেই কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন তিনি। এ বার দলের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতিও বদলে দিলেন। এত দিন এই পদে ছিলেন হাড়োয়ার বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলাম। তাঁর জায়গায় মমতা নিয়ে এলেন দলের যুব নেতা তথা ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেন। মোশারফ উত্তর দিনাজপুর জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতিও। হাজি নুরুলকে সভাপতি পদ থেকে সরানো হলেও তাঁকে ওই সেলের চেয়ারম্যান করা হয়েছে। সেই পদে এত দিন ছিলেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। সিদ্দিকুল্লাকেও অন্যতম গুরুদায়িত্ব দিলেন মমতা। মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলার সংগঠন দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গ্রন্থাগার মন্ত্রীকে। যদিও দলের সংখ্যালঘু ভোট কমেছে বলে মানতে নারাজ মমতা। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবারের বৈঠকে মমতা বলেন, ‘‘সংখ্যালঘুরা আমাদের সঙ্গে আছে, সংখ্যালঘু ভোট কমেনি। সাগরদিঘিতে হার হয়েছে নিজেদের দুর্বলতার কারণে।’’
শুক্রবার কালীঘাটে নিজের বাড়িতেই বৈঠক ডেকেছিলেন মমতা। সেখান সাংসদ, বিধায়কদের পাশাপাশি জেলার নেতাদেরও ডাকা হয়েছিল। এই বৈঠক সংগঠনে কিছু রদবদল ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বড় বদল সংখ্যালঘু সেলে। সাগরদিঘিতে হারের পরেই দলে গুরুত্ব বাড়ে সিদ্দিকুল্লার। তাঁকে মাথায় রেখেই কমিটি গড়েন মমতা। রিপোর্টও জমা দিতে বলেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, সেই রিপোর্ট জমা পড়ার পরেই এই রদবদল। প্রসঙ্গত, রাজ্যে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলার মধ্যে অন্যতম মুর্শিবাদ ও মালদহ। ওই দুই জেলার সংগঠনে পর্যবেক্ষণ চালাবেন সিদ্দিকুল্লা। তবে ঘোষিত ভাবে তাঁকে পর্যবেক্ষক করা হয়নি। একই সঙ্গে সিদ্দিকুল্লাকে সহযোগিতা করতে দলের আরও দুই মুসলিম নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মোথাবাড়ির বিধায়ক তথা রাজ্যের সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন এবং রাজ্যসভার সাংসদ নাদিমুল হক সিদ্দিকুল্লার সঙ্গে থাকবেন। হাজি নুরুলকে সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি থেকে চেয়ারম্যান করার পাশাপাশি বসিরহাট জেলার তৃণমূলের চেয়ারম্যানের পদে রাখা হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, কালীঘাটের বৈঠকে মমতা নিজেই এই দায়িত্ব ঘোষণা করেন।
সাগরদিঘি নিয়ে তৃণমূলের আশঙ্কার কারণ, ভোট অনেকটা কমে যাওয়া। ২ বছরে ভোটপ্রাপ্তির হার ৫০.৯৫ থেকে ৩৪.৯৩ শতাংশে নেমে আসাকে যে তিনি সহজ চোখে দেখছেন না, সেটা বুঝিয়েই বাংলার সংখ্যালঘু মনের খোঁজে সংখ্যালঘু নেতা-মন্ত্রীদের নিয়ে কমিটি তৈরি করেছেন মমতা। তার পরে ফুরফুরা শরিফের দায়িত্ব ফিরহাদ হাকিমের থেকে নিয়ে বিধায়ক তপন দাশগুপ্তকে দিয়েছেন। সবই হয়েছে সাগরদিঘির ফল প্রকাশের পরে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে ৫০,২০৬ ভোটে তৃণমূল জিতেছিল সাগরদিঘিতে। সেখানে তারা এ বার হেরেছে ২২ হাজারের বেশি ভোটে। সেখানে বাম-কংগ্রেস জোটের সঙ্গে বিজেপিও হাত মিলিয়েছিল বলে অভিযোগ তোলেন মমতা। শুক্রবার দলীয় বৈঠকে এই পরিস্থিতিতে তিন দলের বিরুদ্ধেই তৃণমূলের লড়াই বলে জানিয়েছেন মমতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy