অস্বাভাবিক এই মৃত্যুর ঘটনাকে কুণাল ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করে তদন্তের দাবিও তুলেছেন। — ফাইল ছবি।
সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বগটুইকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত লালন শেখের। এ নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ কারও নাম না করে জবাবদিহি চেয়েছেন বিরোধী বিজেপির কাছে। অস্বাভাবিক এই মৃত্যুর ঘটনাকে তিনি ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করে তদন্তের দাবিও তুলেছেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ইদানীং যে ‘১২ ডিসেম্বর’-মন্তব্য করছিলেন, তার সঙ্গে এর যোগ রয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন কুণাল।
লালনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসার পর সোমবার সন্ধ্যায় কুণালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘খবর পেয়েছি সিবিআই হেফাজতে একটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তাৎপর্যপূর্ণ মৃত্যু। বগটুইয়ে যেখানে তাঁর নাম এবং একটি বিশেষ ভূমিকার নাম শোনা যাচ্ছিল, সেখানে তিনি সিবিআই হেফাজতে মারা গিয়েছেন। কী করে মারা গেলেন? এটা কি স্বাভাবিক মৃত্যু? সিবিআই কী ভাবে সাততাড়াতাড়ি একে আত্মহত্যা বলছে? পুরোটাই তদন্তসাপেক্ষ।’’
তদন্তের দাবি তোলার পাশাপাশি কুণাল বিরোধী দলের জবাবদিহিও চেয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এই মৃত্যুর তদন্ত হওয়া দরকার। যাঁরা কথায় কথায় পুলিশ নিয়ে কথা বলেন, তাঁদের এ বার সিবিআই নিয়েও কথার জবাব দিতে হবে।’’ এর পর সিবিআইয়ের উপর আস্থা প্রকাশ করেও তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কুণাল। অভিযোগ তুলেছেন, সিবিআইকে ব্যবহার করছে বিজেপি। তিনি বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের উপর আস্থা রাখি। আধিকারিকদের উপর আস্থা রাখি। অনেক যোগ্য অফিসার রয়েছেন। কিন্তু সিবিআইকে যখন বিজেপি ব্যবহার করে, তখন প্রশ্ন তো উঠবেই। বিজেপি যখন বলছে সিবিআই অমুক জায়গায় যাবে, অমুককে ধরে আনবে, তখন বলতেই হয়, আধিকারিকরা নন, বিজেপি চালাচ্ছে তদন্ত।’’
শুভেন্দুর সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রসঙ্গও তুলেছেন কুণাল। তিনি বলেন, ‘‘শুভেন্দু বলেছিলেন, দেখবেন ১২ তারিখ (ডিসেম্বর) কী হয়! আমাদের কৌতূহল, ১২ তারিখের সঙ্গে এই মৃত্যুর কোনও যোগ রয়েছে কি না! অর্থাৎ সিবিআই পাঠিয়ে হচ্ছে না। সিবিআই হেফাজতে মৃত্যু ডেকে এনে ভীতির আবহ তৈরি করা হচ্ছে কি না, আমরা তার পুরোদস্তুর তদন্ত চাই।’’ কুণাল দাবি করেন, ‘‘এ নিয়ে শুভেন্দুকে হেফাজতে ডেকে জেরা করা প্রয়োজন।’’
বিজেপি যদিও অভিযোগ করেছে, বড় কোনও তৃণমূল নেতাকে আড়াল করতেই লালনের ‘মৃত্যু’। বিজেপির সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কুণালের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘বিজেপি কি জানে না, সিবিআই হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে? এই নিয়ে কারও সন্দেহ হয়ে থাকলে তার জবাব বিজেপি এবং সিবিআইকেই দিতে হবে। রাজ্য পুলিশ বা রাজ্য সরকার দেবে কী করে?’’ কুণাল এ-ও অভিযোগ করেন যে, লালন বেঁচে থাকলে বিজেপির সমস্যা হতে পারত।
সোমবার সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরের শৌচালয়ে লাল রঙের গামছা গলায় জড়ানো অবস্থায় লালনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, সোমবার বিকেল ৪টে ৫০ মিনিট রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে জেরা চলাকালীন মৃত্যু হয় লালনের। এর পর দেহ পাঠানো হয় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে। খবর পেয়ে হাসপাতালের সামনে পৌঁছয় লালনের পরিবার। অন্য দিকে, উত্তেজনা প্রশমিত করতে সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরের সামনে পৌঁছন বীরভূম জেলা পুলিশের আধিকারিকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy