Advertisement
E-Paper

আন্দামানের জেলে বিপ্লবী উল্লাসকর, বারীনের মূর্তি হচ্ছে না! সংসদে জানাল কেন্দ্র, ক্ষুব্ধ তৃণমূল

কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক জানিয়েছে, ১৯০৯ থেকে ১৯৩৮ সালের মধ্যে সেলুলার জেলে বন্দি ৫৮৫ জন বিপ্লবীর মধ্যে ৩৯৮ জন, অর্থাৎ ৬৮ শতাংশেরও বেশি ছিলেন অবিভক্ত বাংলার।

আন্দামান জেল।

আন্দামান জেল। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৫ ১৯:১৭
Share
Save

আন্দামানের জেলে বাঙালি বিপ্লবী উল্লাসকর দত্ত এবং বারীন্দ্রকুমার (বারীন) ঘোষের মূর্তি নির্মাণের কোনও পরিকল্পনা নেই কেন্দ্রীয় সরকারের। রাজ্যসভায় বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। তার পরেই ক্ষোভপ্রকাশ করে তৃণমূল। তাদের দাবি, এই সরকার ‘বাঙালি-বিরোধী’। প্রসঙ্গত, তৃণমূলের সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। তার পরেই তিনি ক্ষোভপ্রকাশ করে জানান, এই সরকার বাঙালি বিপ্লবী উল্লাসকর, বারীনদের কী চোখে দেখে, তা প্রমাণিত। আন্দামানের সেলুলার জেলকে কেন এত দিনে জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ বলে ঘোষণা করা হল না, তা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি।

আন্দামানের সেলুলার জেলে বাংলার বিপ্লবী উল্লাসকর এবং বারীনকে বন্দি করে রেখেছিল ব্রিটিশেরা। তাঁদের উপরে অত্যাচারের অভিযোগও উঠেছিল। ওই জেলে দুই বিপ্লবীর কোনও আবক্ষ মূর্তি রয়েছে কি না বা তা তৈরির কোনও পরিকল্পনা কেন্দ্রের রয়েছে কি না, বৃহস্পতিবার সংসদে প্রশ্ন করেছিলেন ঋতব্রত। তাঁর কথায়, ‘‘সরকারের জবাবে বলা হয়েছে, এমন কোনও মূর্তি নেই এবং স্থাপনেরও কোনও পরিকল্পনা নেই।’’ তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত জানিয়েছেন, এটা বাংলার প্রতি চরম অপমান। তিনি দাবি করেছেন, সেলুলার জেলে সবচেয়ে বেশি অত্যাচারিত হয়েছিলেন উল্লাসকর। ব্রিটিশদের নথিতেই সেই উল্লেখ রয়েছে। কী ভাবে সেই অত্যাচার চলেছিল, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘তখন পোর্ট ব্লেয়ারে বিদ্যুৎ ছিল না। কলকাতা থেকে ব্যাটারি এনে উল্লাসকরকে বছরের পর বছর বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়েছিল। ১৯০৯ থেকে ১৯২০ পর্যন্ত অত্যাচার চলেছিল।’’ তিনি বারীনের উপর অত্যাচারের কথাও তুলে ধরেন। ঋতব্রত জানান, ১৯১৫ সালে বারীন সেলুলার জেল থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তার আগে সেলুলার জেল ভেঙে পালানোর ঘটনাকে প্রায় ‘অসম্ভব’ বলে মনে করা হত। ধরা পড়ার পরে তাঁকে পাঁচ বছর নিঃসঙ্গ কারাবাসে থাকতে হয়েছিল। ওড়িশায় বুড়িবালামের তীরে বাঘাযতীনের পাশে থেকে ব্রিটিশদের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন তিনি।

এই দুই বিপ্লবীর আবক্ষ মূর্তি কেন নেই সেলুলার জেলে, সেই প্রশ্নই তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত। সংসদ থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এই সরকার পুরোপুরি বাঙালি-বিরোধী। স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের কোনও ভূমিকা ছিল না। তারা যে বাংলার বিপ্লবীদের, উল্লাসকর, বারীনের মতো সংগ্রামীদের অবদানকে তুচ্ছ করে দেখছে, তা আজ পরিষ্কার হয়ে গেল।’’

এর আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি সংসদে ঋতব্রত জানতে চেয়েছিলেন, ব্রিটিশ আমলে সেলুলার জেলে কত জন বন্দি ছিলেন, তাঁদের মধ্যে কত জন বাঙালি ছিলেন। উত্তরে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক জানিয়েছে, ১৯০৯ থেকে ১৯৩৮ সালের মধ্যে সেলুলার জেলে বন্দি ৫৮৫ জন বিপ্লবীর মধ্যে ৩৯৮ জন, অর্থাৎ ৬৮ শতাংশেরও বেশি ছিলেন অবিভক্ত বাংলার। ১৩ মার্চ তিনি আবার জানতে চেয়েছিলেন যে, আন্দামানের সেলুলার জেল জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ কি না! জবাবে কেন্দ্র জানিয়েছে, এখনও সেলুলার জেলকে সেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ)-এর অধীনেও নয় এই জেল। এই নিয়েও ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন ঋতব্রত। প্রসঙ্গত, মোদী সরকারকে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে ‘বাঙালি-বিরোধী’ বলে কটাক্ষ করেছে এ রাজ্যের শাসকদল। এ বার বাঙালি বিপ্লবীদের মূর্তি তৈরি নিয়ে আবার কেন্দ্রকে কটাক্ষ করলেন তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত।

british Freedom Fighter Rajya Sabha TMC Ritabrata Banerjee

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}