মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে রবিবার ব্যারাকপুর গান্ধী ঘাটে আয়োজিত প্রার্থনা সভায় উপস্থিত হয়েও মঞ্চের নীচে বসলেন রাজ্য সরকারের তরফে প্রোটোকল মন্ত্রী হিসাবে উপস্থিত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মঞ্চে তখন উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, রাজ্যের মুখ্য সচিব এইচ কে দ্বিবেদী, ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ প্রমুখ।
মূলত ব্যারাকপুরের সাংসদকে রাজ্যপালের ডান পাশে বসে থাকতে দেখেই জ্যোতিপ্রিয়বাবু দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন, এ কথা নিজেই এ দিন জানিয়েছেন। গান্ধী ঘাটের স্মৃতিসৌধতে পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে চরকা কাটার জায়গা পরিদর্শন করেন রাজ্যপাল। জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত, পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা-সহ অন্য আধিকারিকেরাও ছিলেন এই কর্মসূচিতে। রাজ্যপাল জ্যোতিপ্রিয়বাবুর কাছে জানতে চান কেন দূরত্ব বজায় রাখছেন এই অনুষ্ঠানে। মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘আলাদা করে রাজ্যপাল আমার কাছে জানতে চান কেন তাঁর পাশে গিয়ে আমি বসলাম না? আমি ওঁকে বললাম, পাশে অর্জুনের মতো এক জন ক্রিমিনালকে নিয়ে বসেছিলেন তিনি, তাই রাজ্যের প্রোটোকল মন্ত্রী হিসেবে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তাঁর পাশে বসতে পারিনি।’’ জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘শিল্পাঞ্চলে পুরভোটের আগে হিংসার পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে বিজেপির পক্ষ থেকে, খুন করা হচ্ছে আমাদের কর্মীদের। সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এ সব কথা আমি রাজ্যপালকে জানিয়েছি।’’
অনুষ্ঠানের পরে রাজ্যপাল এ দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘আপনারা সংবিধানের চতুর্থ স্তম্ভ। আপনাদের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমার বার্তা, ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে হিংসার পরিবেশ যেন তৈরি না হয়। লোক বলছে এ রাজ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ল্যাবরেটরিতে পরিণত হয়েছে। রাজ্যপাল হিসাবে এটা মেনে নেওয়া আমার পক্ষে কষ্টকর। কিন্তু রাজ্যের কে কী বলল সেটার জবাব দেওয়ার প্রয়োজন আমি মনে করি না, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নিজেই যখন
রাজ্যের ভিতরে ও বাইরে গিয়ে রাজ্যপাল সম্পর্কে টিপ্পনি কাটেন সেটা উচিত নয়।’’
শিল্পমন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্যপাল বিরোধী রাজনৈতিক নেতার চোখে রাজ্যকে দেখেন। সেই মতো মত দেন। দিনের পর দিন এই আচরণ করে তিনি নিজেকে হাসির খোরাক করছেন তা-ই নয়। রাজ্যপাল পদ ও সংবিধানের অমর্যাদা করছেন। তাই এ নিয়ে কথা না বাড়ানোই ভাল।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘রাজ্যপালের এই আহ্বানকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রী যেন ওঁর সঙ্গে বসেন।’’
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, ‘‘অর্জুন সিংহ এত দিন কোন দলে ছিলেন? বিভিন্ন ভোটে তো জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দলের শ্রীবৃদ্ধি করেছেন ওঁর সাহায্যেই। অর্জুন সিংহ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই মেরে ফেলার ছক কষা হয়েছে।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কথায়, ‘‘এই ধরনের শব্দ এক জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির প্রতি ব্যবহার করা গণতন্ত্রে সমীচীন নয়। মানুষের ভোটে অর্জুন সিংহ সাংসদ হয়েছেন। তার আগে তিনি বিধায়কও ছিলেন। জ্যোতিপ্রিয়বাবু সম্পর্কে যে সব কথা চলে, বর্ডারে রেশনের চাল ধরা পড়লে, তাঁকে নিয়ে যে সব কথা ওঠে, সেগুলো বললে কী হবে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy