মিহির গোস্বামীকে শোকজ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। নিজস্ব চিত্র
দলত্যাগী বিধায়কদের শোকজের নোটিস ধরাল তৃণমূল। চলতি মাসের ৬ তারিখে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া ১২ বিধায়ককে এই নোটিস পাঠানো হয়। তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিধায়কদের ওই চিঠি পাঠিয়ে তাঁদের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থান প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আপনি তৃণমূলের প্রতীকে বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে আপনি যে সব মন্তব্য করছেন তাতে আপনার অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। তাই আপনারা নৈতিকতার খাতিরে আগামী সাত দিনের মধ্যে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করুন’।
শোকজের সেই চিঠি পাওয়ার পর ‘নৈতিকতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তৃণমূল মহাসচিবকে পাল্টা চিঠি দিয়েছেন কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী। গত ২৭ নভেম্বর তৃণমূল ছেড়ে তিনি দিল্লিতে গিয়ে বিজেপি-তে যোগ দেন। বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার আগে এবং পরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখও খুলে ছিলেন তিনি। বিজেপি-তে যাওয়ার আগে তৃণমূলের সমস্ত পদ থেকেও তিনি ইস্তফা দিয়েছিলেন। ঘোষণা করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইলে তিনি বিধায়ক পদও ছে়ড়ে দেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিধায়ক পদ ছাড়েননি মিহির।
বুধবার শোকজের চিঠি প্রসঙ্গে মিহির বলেন, ‘‘পার্থবাবু একটি চিঠি পাঠিয়েছেন আমার অবস্থান জানার জন্য। আমার বিধায়ক পদের কী হবে, তা-ও জানতে চেয়েছেন। জবাবে জানিয়েছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে বা চিঠির মাধ্যমে ইস্তফা চাইলে সেই দিনই এই ইস্তফা দেব। পার্থবাবুর চিঠিতে পরিষদীয় প্রতীক নেই বলে এই চিঠি অফিসিয়াল হিসেবে গ্রহণ করতে পারছি না। এই চিঠির আইনগত বৈধতা আছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।’’
এর পরেই নৈতিকতার প্রশ্নে তৃণমূলকে বিঁধে তিনি আরও বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছরের তৃণমূল শাসনকালে বেশ কিছু বিধায়ক কংগ্রেস ও বাম দল থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন৷ তাঁদের কেউ কেউ পরে সাংসদ পদে প্রমোশন পেয়েছেন, কেউ আবার পুরনো দলে ফিরে গিয়েছেন৷ যদি ভুল না বলে থাকি তাঁদের মধ্যে এখনও ১৯ জন বিধায়ক রয়ে গিয়েছেন ৷’’ পাল্টা চিঠিতে ওই ১৯ জন কংগ্রেস ও বাম বিধায়কের নাম উল্লেখও করেছেন মিহির।
নৈতিকতার প্রশ্ন তুলে কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক জানিয়েছেন, ওই বিধায়করা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তার পর থেকে তাঁরা তাঁদের পুরনো দলের বিরোধী বিবৃতি দিয়েছেন ও কাজকর্ম করছেন৷ মিহিরের কথায়, ‘‘পুরনো দলগুলির তরফে তাঁদের বিধায়ক পদ থাকা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে স্পিকারের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে, যার কোনও নিস্পত্তি আজ পর্যন্ত হয়নি৷ দল পরিবর্তন করার পরেও তারাও সবাই বিধায়ক পদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন৷’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘তাঁরা কি কেউ দল পরিবর্তন করার পর তাঁদের পুরনো দল থেকে নির্বাচিত বিধায়ক পদটি ত্যাগ করেছেন? যদি তাঁরা তা না-ই করে থাকেন, তবে আমার দল পরিবর্তন করার পর সেই প্রশ্ন উঠছে কেন? আইনের কথা যদি বলেন তবে তা সবার জন্য সমান নয় কি?’’ তবে মিহিরের এই প্রশ্ন নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব কোনও মন্তব্য করেননি।
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়া ১২ জন বিধায়ককে এই চিঠি দেওয়া হলেও, মিহির ছাড়া কেউই এখনও তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে পাল্টা জবাব পাঠাননি। নন্দীগ্রামের বিধায়ক পদ ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। তাই তাঁকে আর এই বয়ানে চিঠি পাঠানো হয়নি বলেই তৃণমূল সূত্রে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy