Advertisement
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
R G Kar Hospital Incident

চাপমুক্ত হতে তৃণমূল কাজে লাগাতে চায় ‘বিজয়া সম্মিলনী’

তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় নাগরিক সমাজের আন্দোলনে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে শাসক দল। দলের তরফে এই রকম কর্মসূচি নেওয়া হলেও তা খুব বেশি সাড়া ফেলতে পারেনি।

Representative Image

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

রবিশঙ্কর দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৪৫
Share: Save:

আর জি কর-অভিঘাত থেকে বেরিয়ে এসে বিজয়া সম্মিলনীতে দলকে পুরোদস্তুর জনসংযোগে নামাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। পাশাপাশি এই পরিস্থিতিতে স্থগিত রদবদলও নতুন করে শুরু করতে চলেছেন দলীয় নেতৃত্ব। জেলা থেকে শুরু করে ব্লক পর্যন্ত এই সম্মেলনে ‘সেরা কর্মী’ বেছে নিয়ে সম্মানিত করবে তারা। লোকসভা নির্বাচনের পরে সাংগঠনিক বিষয়ে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠক হয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় নাগরিক সমাজের আন্দোলনে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে শাসক দল। দলের তরফে এই রকম কর্মসূচি নেওয়া হলেও তা খুব বেশি সাড়া ফেলতে পারেনি। বরং, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘উৎসবে ফেরা’র আহ্বান জানানোর পরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিল। এই প্রেক্ষাপটে রাজ্য জুড়ে ‘বিজয়া সম্মিলনী’র মঞ্চে জনসংযোগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলা স্তরে, ব্লক-টাউন ও অঞ্চল স্তরে এই মঞ্চে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে এই ‘উৎসব’ পালন করতে সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে বার্তা যাচ্ছে। দলীয় সূত্রে খবর, এই মঞ্চেই জনসমর্থনের প্রমাণ দিতে দলে যোগদানের ব্যবস্থাও রাখার কথা ভাবা হয়েছে। দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘বিজয়া সম্মিলনী’ নতুন কিছু নয়। প্রতি বছরই হয়। এ বার সেই মঞ্চে যোগদানের কথা ভাবা হয়েছে। নির্বাচনের পর থেকে বহু মানুষ যোগদানের ইচ্ছা জানিয়েছেন। বাছাই করে দলে নেওয়া হবে।’’

দলীয় সূত্রে খবর, আর জি কর-পরিস্থিতির মধ্যে দলের রদবদল কর্মসূচিতে রাশ টেনেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা নিয়ে আলোচনা সেরে পুজোর পরেই এই রদবদলের কাজে হাত দিতে চলেছে তৃণমূল। এই পর্বে পরামর্শদাতা সংস্থার সমীক্ষা ও দলের মূল্যায়নের ভিত্তিতে একাধিক জেলায় সভাপতি ও চেয়ারম্যান পদে নতুন মুখ আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই প্রক্রিয়া শেষ হলে ব্লক স্তরেও সভাপতি বদল করা হবে। একই ভাবে পুরসভায় পুর-প্রধান, উপ-পুরপ্রধান এবং পঞ্চায়েতে প্রধানের মতো পদেও রদবদলের কাজ শুরু করতে চলেছে তারা।

তৃণমূল মনে করছে, ক্ষমতায় আসার পরে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল দলের বিরুদ্ধে। কিন্তু আর জি কর-কাণ্ডের অভিঘাত তার থেকে বেশি। এই অবস্থায় উৎসবের পরে রাজ্যের ৬টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন হবে। দিনক্ষণ ঠিক না হলেও আর জি করের ঘটনা তাতে কী প্রভাব ফেলে, তাও দলের পর্যালোচনায় রয়েছে। পাশাপাশি, এ ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বন্যা-পরিস্থিতি মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা তৃণমূলের জন্য ‘ইতিবাচক’ হয়েছে বলে মনে করছে তৃণমূল।

আর জি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলন যে ভাবে সংগঠিত হয়েছে, তার রাজনৈতিক মূল্যায়ন করেছে তৃণমূলের পরামর্শদাতা সংস্থা। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্বাচনী লড়াইয়ে ‘শূন্য’ হলেও এই আন্দোলনের পিছনে সিপিএমের ভূমিকাই ছিল বেশি। তারাই বিভিন্ন সামাজিক ও গণ-সংগঠনকে সামনে রেখে সরকার-বিরোধী জনমত তৈরির চেষ্টা করেছে। পাশাপাশি, ভোটের অঙ্কে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি এই পরিস্থিতি তেমন কোনও রাজনৈতিক সুবিধা নিতে পারেনি বলেও সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে দলীয় নেতৃত্বকে। তবে পরবর্তী সময়ে এই বিন্যাস ভোট পর্যন্ত এই রকমই থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ও রয়েছে তাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

R G Kar Hospital Durga Puja 2024 TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE