Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

নরেনকে শ্রদ্ধা তৃণমূলের, জঙ্গলমহলে শুরু জল্পনা

শনিবার ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত প্রাক্তন বিধায়ক নরেন হাঁসদার জন্মদিনে তাঁর মূর্তিতে মালা দিলেন তৃণমূলের নেতারা।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিনপুর শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:২৫
Share: Save:

এক সময় মূর্তিতে কালি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল যাঁদের বিরুদ্ধে, জন্মদিনে তাঁরাই এসে মূর্তিতে মালা দিলেন।

শনিবার ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত প্রাক্তন বিধায়ক নরেন হাঁসদার জন্মদিনে তাঁর মূর্তিতে মালা দিলেন তৃণমূলের নেতারা। দুপুরে বিনপুরের মাগুরায় নরেনের মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিনপুর-১ ব্লক যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি জলধর পণ্ডা, জেলা তৃণমূলের নেতা তথা ঝাড়গ্রামের প্রাক্তন পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেব প্রমুখ। তখন সেখানে হাজির জন্মদিনের অনুষষ্ঠানের প্রধান আয়োজক নরেনের স্ত্রী তথা বিনপুরের প্রাক্তন বিধায়ক ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর সভানেত্রী চুনিবালা হাঁসদা, নরেনের মেয়ে সাঁওতালি চলচ্চিত্রাভিনেত্রী বিরবাহা হাঁসদা। বিনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধান রতন মুদিও নরেনের মূর্তিতে মালা দেন। নরেনের মূর্তিতে মালা দিয়ে জলধর ও দুর্গেশ বলেন, ‘‘বাম বিরোধী নেতা নরেনবাবুর নাম চিরকাল উজ্জ্বল থাকবে।’’

রাজ্যে ক্ষমতার পালা বদলের পরে ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর বেশ কিছু কর্মী তৃণমূলে যোগ দেন। তখন চুনিবালার সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব তৈরি হয়। ২০১৩ সালে নরেনের মূর্তিতে কালি মাখানোর অভিযোগ উঠেছিল জলধরের অনুগামীদের বিরুদ্ধেই। বছর দু’য়েক আগে আবার চুনিবালার সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক ভাল হয়। গত বছর ঝাড়গ্রামে আদিবাসী দিবসের সরকারি অনুষ্ঠানে নরেন কন্যা অভিনেত্রী বিরবাহাকে সংবর্ধনাও দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চুনিবালা ও বিরবাহাকে নবান্নে ডেকে পাঠিয়ে কথা বলেছিলেন মমতা। জল্পনা ছিল, নরেনের মেয়েকে লোকসভায় প্রার্থী করতে চলেছে তৃণমূল। পরে অবশ্য আদিবাসী নেতা রবিন টুডুর স্ত্রী বিরবাহা সরেন ঝাড়গ্রাম লোকসভায় ঘাসফুলের প্রার্থী হন। অভিনেত্রী বিরবাহাও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর প্রার্থী হন।

এ দিন নরেনের জন্মদিনে তৃণমূল নেতারা শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে হাজির হয়ে যাওয়ায় রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। জলধর পণ্ডা অবশ্য বলছেন, ‘‘নরেন হাঁসদা জঙ্গলমহলে বাম বিরোধী আন্দোলনের রূপকার ছিলেন। দু’দফায় তিনি বিনপুরের বিধায়কও ছিলেন। তাই তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলাম। এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই।’’ ৬ বছর আগে নরেনের মূর্তিতে কালি মাখানোর ঘটনায় তৃণমূলের কেউ জড়িত ছিলেন না বলেও দাবি করেছেন জলধর। আর দুর্গেশ বলছেন, ‘‘আশি-নব্বইয়ের দশকে জঙ্গলমহলে সিপিএমের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াইয়ের পুরোভাগে ছিলেন নরেন হাঁসদা। তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্যে রাজনীতি খোঁজা অর্থহীন।’’

এতে রাজনীতি নেই বলে দাবি চুনিবালারও। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতারা স্বেচ্ছায় এসেছিলেন। বিজেপি-র স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানও মালা দিয়েছেন।’’ বিরবাহা মানছেন, ‘‘বাবাকে তৃণমূলের নেতারা শ্রদ্ধা জানাতে আসায় আমাদের ভাল লেগেছে।’’

নরেন হাঁসদার স্মৃতিতে শুক্র ও শনিবার মাগুরা ফুটবল মাঠে চুনিবালা ও বিরবাহা হাঁসদার উদ্যোগে ও স্থানীয় পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু মেমোরিয়াল ক্লাবের সহযোগিতায় দু’দিনের ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। শনিবার সন্ধ্যায় পুরস্কার বিতরণ হয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy