পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পাশ হওয়া ‘অপরাজিতা বিল’-এ অনুমোদনের দাবিতে এ বার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর দ্বারস্থ হল তৃণমূল। দলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বৃহস্পতিবার তিন পাতার চিঠিতে রাষ্ট্রপতির কাছে বিলের গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে অবিলম্বে তা অনুমোদন করার আবেদন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতির কাছে।
আরজি কর-কাণ্ডের পরে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় কড়া পদক্ষেপের উদ্দেশ্যে গত ৩ সেপ্টেম্বর রাজ্য বিধানসভায় সর্বসম্মতিতে পাশ হয়েছিল ‘অপরাজিতা বিল’। তার পোশাকি নাম, ‘অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড (ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল’ অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৪’। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ধর্ষণ রুখতে দেশকে পথ দেখাবে বাংলাই। তাঁর দাবি, কঠোরতম শাস্তি, দ্রুত তদন্ত এবং দ্রুত ন্যায়বিচার— এই তিনের সংমিশ্রণে ঐতিহাসিক বিলের খসড়া তৈরি হয়েছে।
তবে বিধানসভায় পাশ হলেও ‘অপরাজিতা মহিলা ও শিশু (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন সংশোধনী) বিল, ২০২৪’-এ এখনও রাষ্ট্রপতির অনুমোদন মেলেনি। ফলে তা ‘আইন’ হিসাবে কার্যকর করা সম্ভব হয়নি রাজ্য সরকারের পক্ষে। এই আবহে রাজ্যসভা ও লোকসভায় বাংলার শাসকদলের দুই নেতা লিখেছেন, ‘‘বিলে ২১ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে ৩০ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। পকসো আইনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে দ্রুত বিচারের প্রসঙ্গ।”
‘অপরাজিতা’ আইন কার্যকরের মাধ্যমে অপরাধীর দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করা যাবে বলেও সুদীপ, ডেরেকের দাবি। প্রসঙ্গত, গত ৩ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ‘অপরাজিতা বিল’ পাশ হওয়ার পর তা রাজভবনে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, প্রথমে ওই বিলের ‘টেকনিক্যাল রিপোর্ট’ হাতে পাননি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পরবর্তী সময়ে ‘টেকনিক্যাল রিপোর্ট’ পাঠানো হয় রাজ্যের তরফে। সেই রিপোর্ট দেখার পরে রাজ্যপাল সংবিধানের ২০০ নম্বর ধারার তৃতীয় বিকল্প অনুযায়ী নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে অপরাজিতা বিল রাষ্ট্রপতির কাছে বিবেচনার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছেন।