(বাঁ দিক থেকে) তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার, সুনীল মণ্ডল এবং শান্তনু সেন। ছবি: পিটিআই।
পোশাক বিড়ম্বনায় পড়তে হল বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডলকে। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়াল যে, দিল্লিতেই নতুন কাপড় কিনে জামা বানানোর জন্য দর্জির কাছে গিয়ে মাপ দিয়ে আসতে হয়েছে তাঁকে। তা-ও আবার করতে হয়েছে লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় (নির্দেশে)।
সংসদের বাদল অধিবেশনে রোজই মণিপুর নিয়ে শোরগোল ফেলছেন বিরোধী দলগুলির জোট ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদেরা। বৃহস্পতিবার তাঁরা কালো পোশাক পরে সংসদের ভিতরে-বাইরে বিক্ষোভ দেখান। সেখানেই তাল কেটে যায় সুনীলের পোশাকে। দেখা যায়, তিনি সাদা পাজামা আর আকাশি রঙের পাঞ্জাবি পরে সংসদ চত্বরে পৌঁছেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই সেটা চোখে পড়ে সকলের। তাঁকে অনেকে প্রশ্নও করেন। কিন্তু সুনীল জানান, তাঁর কোনও কালো পোশাক নেই। অগত্যা, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য তৃণমূলের সংসদীয় দলের তরফে তাঁকে একটি কালো ওড়না দেওয়া হয়। দেখা যায়, আকাশি রঙের পাঞ্জাবির উপর ওই কালো ওড়না জড়িয়ে মুষ্ঠিবদ্ধ হাত উপরে তুলে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগানে গলা মেলাচ্ছেন সুনীল। প্রসহ্গত, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সুনীল বিজেপির মঞ্চে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরে তাঁর ‘ঘর ওয়াপসি’ হয়েছিল।
বৃহস্পতিবারের ‘পোশাক বিভ্রাট’ নিয়ে শুক্রবার আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল সুনীলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘আমি কি কখনও কালো পোশাক পরেছি নাকি! বিক্ষোভের আগের দিন (বুধবার) কালো পোশাক পরার কথা বলা হয়েছিল। তখন কোথায় পাব!’’ কিন্তু সুনীলের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল, ভবিষ্যতেও ফের কালো পোশাক পরে বিক্ষোভ কর্মসূচি হতে পারে। তাই তড়িঘড়ি দিল্লিতেই কালো কাপড় কিনে জামা বানাতে দিতে হয়েছে বর্ধমানের সাংসদকে। সুনীল বলেন, ‘‘কালকের পর সুদীপদা (বন্দ্যোপাধ্যায়) আমায় বললেন, একটা কালো পোশাক বানিয়ে রাখতে। তার পরে আমি দিল্লিতেই জামা বানাতে দিয়েছি।’’আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের পরনেও বৃহস্পতিবার একরঙা কালো পোশাক ছিল না। সাদা-কালো ডোরা কাটা লম্বা কুর্তি পরেছিলেন তিনি। রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেনের পরনেও ছিল সাদা-কালো ছাপের সালওয়ার এবং কালো ওড়না। অন্যদিকে শান্তনু সেন, নাদিমুল হকের মতো তৃণমূল সাংসদেরা কালো পাঞ্জাবি পরেছিলেন। আবার কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে কালো পাঞ্জাবি পরার পাশাপাশি মাথায় কালো পাগড়িও বেঁধেছিলেন। কিন্তু সুনীলের পোশাকের কালোর চিহ্নটুকুও ছিল না।
লোকসভা নির্বাচন মেরে-কেটে আর আটমাস বাকি। তবে ২০২৪ সালে সুনীল আদৌ টিকিট পাবেন কি না, তা নিয়ে তাঁর ঘনিষ্ঠদেরও সংশয় রয়েছে। ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তিনিও অমিত শাহের ম়ঞ্চে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তখনও তাঁর সাংসদ পদের মেয়াদের সাড়ে তিন বছর বাকি ছিল। পরে অবশ্য অবস্থা বুঝে তৃণমূলে ফেরেন তিনি। প্রসঙ্গত, শিশির অধিকারী এবং সুনীলের বিরুদ্ধেই দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করার জন্য লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়েছিলেন তৃমমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ। যদিও তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত জোরাল কোনও নাড়াচাড়া হয়নি। তবে তৃণমূলের অনেকে রসিকতা করে বলছেন, লোকসভার দলনেতা সুদীপের কথায় সুনীলের দ্রুত কালো জামা বরাত দেওয়ার পিছনে একটা অলিখিত বার্তাও আছে—আমি তোমাদেরই লোক!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy