বুধবার কাশীপুর বেলগাছিয়া সিপিএমের জোনাল পার্টি অফিস ও স্টলে গিয়ে পুষ্পস্তবক দিয়ে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়ে এলেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। নিজস্ব চিত্র।
শারদোৎসবের দিনগুলিতেও তৃণমূল ও সিপিএমের মধ্যে বজায় ছিল রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব। দক্ষিণ কলকাতায় সিপিএমের বুক স্টলে তৃণমূল ও পুলিশের যৌথ হামলার অভিযোগে সরব হয়েছিল সিপিএম। আর বিজয়া দশমীর দিনেই দেখা সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। উত্তর কলকাতায় সৌজন্য বিনিময়ের চিত্র ধরা পড়ল তৃণমূল ও সিপিএমের মধ্যে। বুধবার সকালে কাশীপুর-বেলগাছিয়া এলাকার সিপিএম জোনাল কমিটির অফিসে ও গণশক্তির বুক স্টলে গিয়ে সিপিএম নেতা কর্মীদের ফুল দিয়ে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানালেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন।
দক্ষিণ কলকাতায় বুক স্টল নিয়ে সিপিএম-তৃণমূলের মধ্যে দ্বন্দ্বের পরিবেশ কাটাতেই কি তিনি সিপিএম নেতৃত্বকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে সাংসদ শান্তনু বলেন, ‘‘তেমন কিছু ব্যাপার নয়। আমি সিপিএম জমানায় কাশীপুর-বেলগাছিয়াকে বহুবার সিপিএমের সন্ত্রাসের কারণে উত্তপ্ত হতে দেখেছি। নিজেও নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে সিপিএমের হাতে আক্রান্ত হয়েছি, মার খেয়েছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এখন আর কাশীপুর-বেলগাছিয়ার মানুষকে সন্ত্রাস দেখতে হয় না। সব রাজনৈতিক দলই এখানে মুক্তমনে রাজনীতি করতে পারে। আমি বিজয়ার দিন এলাকায় এলাকায় শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলাম। সেই তালিকাতেই ছিল, সিপিএমের অফিস ও স্টল।’’
সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদার অবশ্য তৃণমূল সাংসদের এই উদ্যোগকে নাটক বলেই আক্রমণ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘শান্তনুবাবু ভাল নাটক করতে পারেন। আমরা ওঁকে ভাল করে চিনি। আর ওঁর নাটকের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত। ২০১১ সালে বামফ্রন্ট সরকার চলে যাওয়ার পর চিড়িয়ামোড়ে একটি মিছিলে বিমান বসু এসেছিলেন। সেখানে শান্তনু সেন এসে দেখা করে যাওয়ার পরেই তাঁর ছেলেরা ইট মেরে বিমানবাবুর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলেন। তাই বিজয়ার সৌজন্যের যে নাটক উনি করেছেন, তা আমাদের কাছে আগেই ধরা পড়ে গিয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, রাসবিহারীর প্রতাপাদিত্য রোডে সিপিএমের বিপণিতে সপ্তমীর রাতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগের তির ছিল ‘তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী’দের দিকে। অভিযোগ, ওই বইয়ের বিপণিতে ‘চোর ধরো, জেল ভরো’র পোস্টার দেখেই শাসকদলের আপত্তির সূত্রপাত। কলকাতায় বইয়ের বিপণি ভাঙচুরের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে অষ্টমীর সন্ধ্যায় গ্রেফতার হন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় এবং সিপিএম নেতারা। পুলিশ জানিয়েছিল, বইয়ের বিপণি ও প্রতিবাদ সভা ঘিরে গন্ডগোল এড়াতেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বিষয়ে শাসকদল তৃণমূল প্রশ্ন তুলেছিল, পুজো কমিটির সুবিধা-অসুবিধা না দেখে বইয়ের স্টল খুলে বসতে হবে কেন? এতে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছিল সিপিএমও। দক্ষিণ কলকাতায় সপ্তমী থেকে নবমী— পরস্পরের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে যে বিতর্কের সূত্রপাত, বিজয়ার দিনে সেই বিতর্কের কি ‘হ্যাপি এন্ডিং’ হল উত্তর কলকাতায়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy