Advertisement
E-Paper

‘রাজনীতির শকুনেরা কাজে লাগাতে চাইছে’! আরজি কর আন্দোলনকে কী চোখে দেখছেন রাজনীতিক দেব?

দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে বিশেষ অনুরোধ করেছেন দেব। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, তাঁর ১১ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এই প্রথম তিনি রাজনৈতিক বিবৃতি দিলেন।

অভিনেতা সাংসদ দেব।

অভিনেতা সাংসদ দেব। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২৪ ২২:৪৯
Share
Save

আরজি কর নিয়ে আন্দোলন ‘গতি হারাচ্ছে’ বলে মন্তব্য করলেন অভিনেতা সাংসদ দেব। একই সঙ্গে কেন এমন হচ্ছে তার ব্যাখ্যাও করলেন ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ। দেব বললেন, ‘‘আমি দেখতে পাচ্ছি আন্দোলনটা গতি হারাচ্ছে, তার কারণ আমরা রাজনৈতিক ভাবে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ছি। কিছু রাজনৈতিক শকুন এই আন্দোলনকে ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে চাইছে।’’

গত ৯ অগস্ট ভোরে আরজি করের চার তলার সেমিনার হলে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে। তার পাঁচ দিনের মাথায় ১৪ অগস্ট রাতে ‘রাত দখলে’র ডাক দিয়ে আন্দোলনে নামেন বাংলার মহিলারা। তার পর থেকে সেই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষ। মহিলা পুরুষ নির্বিশেষে সমস্ত ক্ষেত্রের মানুষ। টলিউডের আর্টিস্ট ফোরামের তরফেও প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। অভিনেতা সাংসদ দেব সেই অনুষ্ঠানেই উপস্থিত হয়েছিলেন শনিবার রাতে। পরে মঞ্চ থেকে নেমে তিনি জানান, আরজি কর আন্দোলন নিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। দেব বলেন, ‘‘এই আন্দোলন শুধু আরজি কর নিয়ে নয়। ভারতের প্রত্যেকটা মেয়ে যাতে নিরাপত্তা পায় তার জন্য আন্দোলন। এর একটাই লক্ষ্য হওয়া উচিত, সেটা হল যারা ধর্ষণ করবে, তাদের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু আমি দেখছি, এই আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে রাজনীতির শকুনেরা তাদের উদ্দেশ্যপূরণের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।’’

আরজি করের আন্দোলন নিয়ে বিজেপি এবং সিপিএম আলাদা আলাদা ভাবে পথে নেমেছে। তৃণমূলের সাংসদ দেব কি তাদেরই ‘রাজনীতির শকুন’ বলছেন? এ কথা বলে কি আদতে চিকিৎসকদের আন্দোলন নিয়ে দলের পক্ষেই কথা বলতে চাইছেন দেব? এ প্রশ্ন আসতে পারে বুঝেই দেব সঙ্গে সঙ্গে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘দশ এগারো বছর রয়েছি রাজনীতিতে। আমি কোনও দিন এমন কোনও কথা বলিনি, যাতে মনে হবে আমি শুধু আমার দলকে সাপোর্ট করেছি। বা অন্য দলের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। বরং যা হয়েছে সেটাই ঠিকঠাক বলেছি। আমি আজ এ কথা বলছি, তার কারণ, আমি দেখতে পাচ্ছি আন্দোলনটা গতি হারাচ্ছে, তার কারণ আমরা রাজনৈতিক ভাবে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ছি। তাই বলব, যাঁরা এই আন্দোলনকে কোনও রাজনৈতিক প্রভাব ছাড়া এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা দয়া করে আন্দোলনটা আরও এগিয়ে যান। আমি আপনাদের পক্ষে।’’

এ কথা সত্যি যে, দেব কখনও সখনও নিজের কথা বলার জন্য দলেরও পরোয়া করেননি। লোকসভা ভোটের আগেই এমন একটি ঘটনায় দেবকে নিয়ে বিতর্কও হয়েছে। দেবের সহ অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে পরোক্ষে ‘গদ্দার’ বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে দেব বলেছিলেন মিঠুন তাঁর পিতৃতূল্য। তাই তিনি এমনটা মনে করেন না। এ ব্যাপারে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষের সঙ্গেও পরোক্ষ কথা কাটাকাটি হয়েছিল দেবের। কুণাল প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতার কথার বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য কেন দেবের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের পদক্ষেপ হবে না। পাল্টা দেব বলেছিলেন, তিনি মনে করেন গদ্দার তারাই, যাঁরা দলের পদে থেকেও দলের ক্ষতি করে। সেই সময় সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নানা কথা বলেছেন কুণাল। আবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া তাপস রায়ের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। কিন্তু দেব সেই সময় দলের পরোয়া করে চুপ করে থাকেননি। এই দেবই ভোটে দাঁড়াবেন না বলে রাজনীতি থেকে সরতে চেয়েছেন। এই দেবই আবার ঘাটালের মানুষের কাছে নিরপেক্ষ ভোট দানের বার্তা দিয়ে দলে সমালোচিতও হয়েছেন। শনিবার যদিও দেব দলের অবস্থানের পথেই কথা বলেছেন।

দিন কয়েক আগেই দেশে প্রতি ঘণ্টায় চারটি ধর্ষণের পরিসংখ্যান দিয়ে কেন্দ্রকে ধর্ষণ বিরোধী আইন চালু করার ব্যাপারে চাপ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে নবান্নের তরফেও ওই একই দাবি তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে চিঠি দেওয়া হয়। শনিবার দেবও বললেন, ‘‘আমি ১১ বছরে কোনও রাজনৈতিক বিবৃতি দিইনি। তবে এখন এই প্রথম আমি রাজনৈতিক বিবৃতি দিচ্ছি। যে সরকার ১১ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে। যারা এক রাতে নোটবন্দি আনতে পারে। যারা কাশ্মীরে ৩৭০ ধারাকে দমন করতে পারে। যে ভারত সরকার যেখানে বাবরি মসজিদ হয়েছিল, সেখানে রামমন্দির করতে পারে। যে ভারত সরকার ২০০০ টাকার নোট আবার ফিরিয়ে নিতে পারে, সেই ভারত সরকার যারা ইডির নিয়ম বদলে দিতে পেরেছিল, সংবিধান বদলে আইন বদলেছিল, সেই ভারত সরকারকে আমার অনুরোধ এখনই এমন একটা বিল পাশ করুন সংসদে, যেখানে কোনও ধর্ষক যদি দোষী প্রমাণিত হয়, তবে এক মাসের মধ্যে ফাঁসি দিতে হবে। তবেই আমার দেশটা শুধরোবে। শুধরোবে শব্দটা ব্যবহার করছি। তার কারণ, মানুষ শুধরোচ্ছে না। এত আন্দোলন হচ্ছে তার মধ্যেও ধর্ষণ হয়ে যাচ্ছে। কারণ, কেউ ভয় পাচ্ছে না।’’

R G Kar Medical College And Hospital Incident Dev TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।