Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
R G Kar Hospital Incident

ডাক্তার, প্রতিবাদীদের কটাক্ষ শাসক নেতাদের

প্রতিবাদীদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁদের কটাক্ষ করে বিতর্কে জড়িয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুণাল ঘোষ, দেবাংশু ভট্টাচার্যেরাও।

Representative Image

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:০৬
Share: Save:

আলোচনা প্রক্রিয়ার মধ্যেই আন্দোলনরত চিকিৎসকদের চড়া সুরে আক্রমণ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ও শাসক নেতারা। পাঁচ দফা দাবি নিয়ে চিকিৎসকদের সরাসরি কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। আর আন্দোলনের ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শাসক দলের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশিই, প্রতিবাদীদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁদের কটাক্ষ করে বিতর্কে জড়িয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুণাল ঘোষ, দেবাংশু ভট্টাচার্যেরাও।

কর্মবিরতি ঘিরে তৈরি অচলাবস্থা কাটাতে সোমবার বিকালে জুনিয়র ডাক্তারদের ফের বৈঠকে ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রস্তুতির মধ্যেই এ দিন চিকিৎসকদের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করে বহরমপুরে রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা বলেন, ‘‘তাঁদের (আন্দোলনকারী) পিছনে কোনও রাজনৈতিক শক্তি আছে। অনেক রাজনৈতিক দলের হাতে তামাক খাচ্ছেন! রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উপরে তাঁদের বিশ্বাস নাই। মাসে যখন মাইনে পান, তখন তো বিশ্বাস হয়!’’ সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কিচ্ছু হবে না সরকারের। সরকার আছে, থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী আছেন, থাকবেন। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে রাজ্য সরকার চাইলে ব্যবস্থা নিতে পারে, কিন্তু ধন্যবাদ জানাচ্ছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে, তিনি কোনও রকম ব্যবস্থা নেননি জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে।’’

চিকিৎসকদের আন্দোলনকে কটাক্ষ করেছেন রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘হাততালি দিয়ে, ডিস্কো ডান্স করে আন্দোলন সফল করা যায় না!’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘এক জন মুখ্যমন্ত্রী দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করলেন, বললেন, ‘এক কাপ চা খেয়ে যাও’।’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা এর আগে দলের মন্ত্রী-নেতাদের আর জি কর-কাণ্ড এবং চিকিৎসকদের নিয়ে মন্তব্য করতে নিষেধ করেছিলেন।

তবে জলমগ্ন ঘাটালে এ দিন পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে তৃণমূল সাংসদ ও অভিনেতা দেব মনে করিয়েছেন, বন্যার সময়ে চিকিৎসকদের প্রয়োজন। কেশপুরে সাংসদের মন্তব্য, ‘‘জুনিয়র ডাক্তার ছাড়া একটা হাসপাতাল চলতে পারে না, এটা আমরা সবাই বুঝে গিয়েছি। গত ৪০ দিন ধরে আন্দোলন চলছিল। এর একটাই লক্ষ্য, যাতে আর কোনও নির্ভয়া না হয়। আমি চাই, এই আন্দোলনটা শেষ হোক। দোষীরা শাস্তি পাক।’’

বিতর্ক শুরু হয়েছে সমাজমাধ্যমে তৃণমূল নেতা কুণালের একটি পোস্ট ঘিরেও। একটি ‘ভিডিয়ো ক্লিপ’ পোস্ট করেছেন তিনি। তাতে তৃণমূলের সমাজমাধ্যম শাখার ভারপ্রাপ্ত দেবাংশু ভট্টাচার্য ও কুণালের নাম উল্লেখ করে টালিগঞ্জের এক অভিনেত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘এই যে কুণাল ঘোষ আর দেবাংশু, পাবলিক যে দিন ওদের হাতে পাবে, আমি দেখব, ওদের কে বাঁচাবে..।’ এই ক্লিপের সঙ্গেই কুণাল লিখেছেন, ‘হ্যাঁ রে দেবাংশু, তোর পাত্রী দেখার কাজ এগোব..।’ তার প্রেক্ষিতে আবার ওই অভিনেত্রীকে নিয়ে নানা মন্তব্য করেছেন দেবাংশু। যার জেরে তাঁদের বিরুদ্ধে নারী-বিদ্বেষমূলক মনোভাবের অভিযোগ এনে বিরোধীদের দাবি, এই সংস্কৃতিই ধর্ষণকে প্রশ্রয় দেয় এবং প্রতিবাদীদের কাঠগড়ায় তোলে। এই নিয়ে প্রশ্ন উঠলে কুণাল অবশ্য বলেছেন, ‘‘মারার হুমকি দিচ্ছেন অভিনেত্রী। তা নিয়ে তো থানায় অভিযোগ করিনি। হাল্কা রসিকতা করেছি মাত্র! মহিলারা আমাকে জানেন, চেনেন।’’

মালদহে তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী সাগরিকা সরকারও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে সতর্ক করে দিয়েছেন। দলের কর্মী-সদস্যদের প্রতি তাঁর আহ্বান, ‘‘যারা আমাদের দিদির নামে কুৎসা করে, অপপ্রচার করে... আমার মহিলাদের আমি বলব, কোমরে কাপড় বেঁধে ঝাঁটা হাতে কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপিকে তুলোধোনা করবেন!’’

অন্য দিকে, প্রতিবাদীদের কটাক্ষের পাশাপাশি সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে তৃণমূল থেকে। দলের মুখপাত্র ঋজু দত্ত টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের গ্রেফতার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এক্স হ্যান্ড্‌লে তাঁর বক্তব্য, ‘‘টালা থানার ওসি-কে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

R G Kar Hospital siddikullah choudhury TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE