গিয়ে মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে মেমারি থানার পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর সঙ্গে আগেই তরজায় জড়িয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির তৃণমূল নেতা মহম্মদ ইসমাইল। এ বার সিদ্দিকুল্লার এক অনুগামীর উপর দলবল দিয়ে হামলা করানোর অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। সোমবার এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ইসমাইল।
দিন তিনেক আগে মেমারি ২ নম্বর ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইলের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন গ্রন্থাগারমন্ত্রী তথা মন্তেশ্বরের বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। তাঁর বক্তৃতা সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর পর ময়দানে নামেন ইসমাইল। তাঁর নেতৃত্বে সাতগাছিয়া বাজারে সিদ্দিকুল্লার বিরুদ্ধে মিছিল হয়। রবিবার পাল্টা সভা হয় মেমারি ২ নম্বর ব্লকের বিলবাড়ি এবং ঝিকরা গ্রামে। ওই সভায় নিজের ভাষণে রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন সিদ্দিকুল্লা। বলেছিলেন, ‘‘পুলিশ কি ভাবছে উনিও দল, ইনিও দল? পুলিশ কী নাবালক নাকি! পুলিশকে সাবালক হতে হবে। এ সব ভণ্ডামি আমি শুনব না।’’ তাঁর অভিযোগ ছিল, ইসমাইলের হয়ে কাজ করছে পুলিশ। সিদ্দিকুল্লার দাবি ছিল, ‘‘বাবু দাপাদাপি করে বেড়াচ্ছে। দক্ষ প্রশাসকের ভূমিকা পালন করুক পুলিশ। আমি পুলিশের সঙ্গে বসি। কিন্তু ফিসফিস করি না। পুলিশকে তেল লাগাতে যাই না। যাদের পয়সা আছে, পুলিশকে তারা তেল দেবে। আমি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। প্রয়োজনে রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব কিংবা ডিজিকে বলব।’’ পরে সিদ্দিকুল্লাকে কটাক্ষ করে ইসমাইল বলেছিলেন, ‘‘আমি তো ওঁর বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। আসলে উনি মানসিক অবসাদে ভুগছেন। তাই এ সব বলছেন।’’
রবিবারের সভা শেষে ফেরার পথে মেমারি ২ নম্বর ব্লকের বড়পলাশন ২ নম্বরের অঞ্চল সভাপতি গফর মল্লিকর উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ইসমাইলের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, গফরকে মারধর করা হয়েছে। গফর এলাকায় সিদ্দিকুল্লার অনুগামী হিসাবে পরিচিত। অন্য দিকে, মেমারি ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মহসিন মণ্ডলের দাবি, ‘‘পঞ্চগ্রাম সমবায়ের টাকা নয়ছয় হয়েছে। সমবায়ের সম্পাদক এবং সভাপতি গফর মল্লিকের নাম জড়ায়। এ নিয়ে রবিবার গ্রামের লোকজন বলতে গেলে তাঁদের মারধর করে গফরের লোকজন।’’
খবর পেয়ে এলাকায় গিয়ে মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেফতার করে মেমারি থানার পুলিশ। সোমবার তাঁদের বর্ধমান আদালতে হাজির করানো হয়েছে।
ধৃতেরা সকলে ইসমাইলের অনুগামী বলে পরিচিত। যদিও এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি ইসমাইল। তবে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘‘দল গোটা বিষয়টি দেখছি। মঙ্গলবার জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় একটি বৈঠক ডেকেছেন। সেখানে এ নিয়ে নিশ্চয় আলোচনা করা হবে।’’
মেমারিতে মারধরের ঘটনাকে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের তকমা দিয়েছেন জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের এখন শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থা। সমস্যায় পড়ছেন এলাকার বাসিন্দারা। শাসকদলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে এলাকায় অশান্তি হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy