কাটমানি ফেরত পেয়ে খুশি গ্রামবাসীরা। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভের মধ্যেই ‘কাটমানি’ ফেরত দিলেন বীরভূমের এক তৃণমূল নেতা। একশো দিনের কাজের জন্য বরাদ্দ শ্রমিকদের টাকা থেকে নেওয়া ‘কাটমানি’ ফেরত দিলেন তিনি। তৃণমূলের ওই নেতা দলের বুথ সভাপতি। নাম ত্রিলোচন মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সিউড়ির ছাতরা গ্রামে ১৪১ জন শ্রমিককে ডেকে খাতায় সই করিয়ে টাকা ফেরত দেন তিনি। অভিযোগ, একশো দিনের টাকা শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরকার থেকে সরাসরি জমা পড়লেও সেই টাকা পেতেন না গ্রামের মানুষ।
সম্প্রতি দলের যে সব জনপ্রতিনিধি এবং নেতা ‘কাটমানি’ নিয়েছেন, তাঁদের তা ফেরানোর নির্দেশ দেন তৃণমূল নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে যদিও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিবৃতি দিয়ে দাবি করেন, তাঁদের দলনেত্রীর মতে, তৃণমূলের কর্মী এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ৯৯.৯৯%-ই সৎ। কিন্তু মমতার ওই মন্তব্যের পর রাজ্য জুড়ে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। এ দিন ছাতরার বাসিন্দা কমল মাল ছাতরা বলেন, ‘‘আমরা একশো দিনের কাজ করতাম। কিন্তু ব্যাঙ্কের খাতা থাকত বুথ সভাপতির কাছে। তিনি আমাদের ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার ফর্মে সই করিয়ে নিতেন।” অভিযোগ, সরকার থেকে টাকা জমা পড়লেই সই করে রাখা উইথড্রল স্লিপ দিয়ে টাকা তুলে নিতেন শাসক দলের ওই নেতা। তার পর সেখান থেকে একটা নির্দিষ্ট অংশ কেটে রেখে বাকিটা দেওয়া হত শ্রমিকদের। সোমনাথ মাল নামে অন্য এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘ন্যায্য টাকা চাইলেই আমাদের হুমকি দেওয়া হত। মারধরের হুমকি দেওয়া হত। পুলিশের ভয় দেখাত। কাউকে কিছু বলেও সুরাহা হত না। তাই আমরা চুপ করে থাকতাম।”
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, লোকসভা নির্বাচনের ফল বেরোতেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর ‘কাটমানি’ বার্তার পর থেকেই রাজ্যের অন্য প্রান্তের মতো বিক্ষোভ শুরু হয় ওই গ্রামেও। গ্রামের বাসিন্দারা ত্রিলোচন মুখোপাধ্যায়য়ের কাছে টাকা ফেরত চান। এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘গত কয়েক দিন ধরেই টাকা ফেরত দেবে বলছিল। শেষ পর্যন্ত চাপে পড়ে দিয়েছে।”
আরও পড়ুন: জয় শ্রীরাম নিয়ে ক্যানিং লোকালে ধুন্ধুমার, না বলায় যুবককে মারধর, ট্রেন থেকে ফেলার অভিযোগ
আরও পড়ুন: চার নব্য জেএমবি জঙ্গি গ্রেফতার শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশন থেকে, উদ্ধার আইএস নথি
এ দিন সকালে একশো দিনের কাজে যুক্ত থাকা ১৪১ জন গ্রামবাসীকে খাতায় সই করিয়ে প্রত্যেককে ১ হাজার ৬৫০ টাকা করে ফেরত দেন ত্রিলোচন। কেন তিনি ওই টাকা নিয়েছিলেন তা নিয়ে প্রথমে মুখ খুলতে চাননি ওই নেতা। পরে তিনি দাবি করেন, দলের সব নেতাই জানেন ওই টাকা নেওয়ার কথা। তবে তিনি স্বীকার করেন, গ্রামের মানুষের ক্ষোভের কথা মাথায় রেখেই ফেরত দিয়েছেন টাকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy