—ফাইল চিত্র।
ভিড়ে ঠাসা কর্মিসভায় দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর সামনেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ লোকসভা ভোটে পরাজয়ের দায় স্বীকার করে নিলেন। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনে হেরে গিয়েছি এটা আমার দোষ হতে পারে। কিন্তু নতুন করে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’’ এ দিনের সভায় তিনি বলেন, ‘‘আমার ভুল হয়ে থাকলে আমাকে ক্ষমা করবেন।’’
লোকসভা ভোটে রবীন্দ্রনাথবাবুর ভূমিকা নিয়ে আগেই অনেক প্রশ্ন উঠেছিল। লোকসভার প্রার্থী নির্বাচনে তাঁর ভূমিকা ছিল বলে তৃণমূলের অন্দরে খবর। তৃণমূলেরই একটি অংশ জানাচ্ছে, পার্থপ্রতিম রায়ের বদলে পরেশ অধিকারীকে প্রার্থী করার ক্ষেত্রেও রবীন্দ্রনাথবাবুর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। পার্থপ্রতিমবাবুর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথবাবুর এক সময় ভাল সম্পর্ক ছিল। পরে তা কিছুটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত, তৃণমূল থেকেই বহিষ্কৃত নিশীথ প্রামাণিকের কাছেই পরাজিত হন পরেশবাবু। তার পরেই কথা ওঠে, রবিবাবুর জন্যই দল হারল। রবিবাবুকে দলের জেলা সভাপতির পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।
এ দিন সুব্রতবাবুর সামনেই তিনি সব রকম বিভেদ ভুলে দলীয় কর্মীদের নতুন করে এক সঙ্গে চলার আবেদন জানান। রবিবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূলের নতুন পুরনো কর্মীরা সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে চললে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহারের নয়টি আসনই দলনেত্রীর হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হবে।’’
লোকসভা নির্বাচনের পরে দিনহাটায় সভা করতে এসে কোচবিহার কেন্দ্রে দলের প্রার্থীর পরাজয়ের কারণ নিয়ে নেতাকর্মীদের নানা ভাবে সতর্ক করে দিলেন বক্সীও। সোমবার দিনহাটা শহরের সাহেবগঞ্জ রোডে স্থানীয় একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের মাঠে ২১ শে জুলাই শহিদ স্মরণ সভাকে সার্থক করে তুলতে এই কর্মিসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাকে ঘিরে পুলিশ মোতায়ন ছিল চোখে পড়ার মতো।
গত ২৪ শে জুন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি কোচবিহারের সন্ত্রাস কবলিত বিভিন্ন এলাকায় গেলে সে সময় তাঁর সামনেই নেতাকর্মীদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এরপর দিন কয়েক আগে দিনহাটার নয়ারহাট এলাকায় বিধায়ক উদয়ন গুহর উপরে হামলার ঘটনা ঘটে। সে কারণেই এ দিন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতির সভাকে ঘিরে যাতে কোনও বিক্ষোভ না হয়, সে দিকে লক্ষ্য রেখে আগে থেকেই পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল যথেষ্ট। বিধায়ক উদয়নবাবুর সভাপতিত্বে এ দিনের সভায় বক্সী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, দলের কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়, বিধায়ক মিহির গোস্বামী প্রমুখ।
ভিড়ে ঠাসা এদিনের সভায় বক্সী বলেন, ‘‘কোথায় কোথাও আমাদের আচার আচরণ ও ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে মানুষ আমাদের শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।’’ তিনি বলেন, ‘‘বহু সহকর্মী আমাদের রয়েছেন, তাঁরা কিন্তু আপনার কাছে কোন পদ চান না, টিকিট চান না। শরীরের ঘাম ঝরিয়ে দল করবেন, শুধু একটু সম্মান চাইবেন। সেই সম্মানটা তাঁদের দিতে হবে। শুধু মাত্র আমি থাকব, আর কেউ থাকবে না, আমি যা বলব তাই করব, এটা হতে পারে না।’’
বক্সী এ দিন ওই সব কর্মীদের উদ্দেশে বলেন ‘‘সেই সব কর্মীদের বা নেতাদের সময় হয়তো শেষ হয়ে এসেছে। বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের শেষ কথা যদি কেউ বলেন, তিনি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন আমরা যাঁরা মঞ্চে কিংবা দর্শকাসনে বসে আছি, তাঁরা কিন্তু কেউ আমাদের দেখে দল করেন না। আমরা সকলে দল করি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy