শোক: মৃত পূর্ণেন্দুবাবুর স্ত্রী সন্ধ্যাদেবী। নিজস্ব চিত্র
‘কাটমানি’ ফেরত চেয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে ‘চড়াও’ হয় কয়েকজন। অভিযোগ, সে সময় পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় নামে ওই প্রৌঢ়ের স্ত্রী-ছেলেকে বার করে দিয়ে তালা ঝোলানো হয় তাঁদের বাড়িতে। বুধবার সকালে বর্ধমান শহর থেকে কিছুটা দূরে চৈত্রপুর গ্রামে ঝুলন্ত দেহ মেলে পূর্ণেন্দুবাবুর (৫৩)। পরিবারটি মৌখিক দাবি করেছে, বিজেপির লোকেরা তাঁকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছে। যদিও রাত পর্যন্ত খুনের লিখিত অভিযোগ হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে কোনও ‘সুইসাইড নোট’ মেলেনি। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। পাঁচ জনকে আটকও করা হয়েছে।
জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে।’’
ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন সকালে বর্ধমান সদর থানা ঘেরাও করে তৃণমূল। ‘দোষী’দের শাস্তি চেয়ে কার্জন গেট চত্বরে অবরোধও করা হয়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের অভিযোগ, “বিজেপি সন্ত্রাস চালাচ্ছে। বাড়িতে ঢুকে হামলা করছে। জনগণের কাছে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরব।’’ বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দীর পাল্টা দাবি, “যাঁরা কাটমানি দিয়েছেন, আর যিনি নিয়েছেন—এটা তাঁদের মধ্যের ঘটনা। দুঃখজনক ঘটনা নিয়েও তৃণমূল রাজনীতি করছে।’’
বেচারহাট কলোনির বাসিন্দা পূর্ণেন্দুবাবু পেশায় পুরোহিত। তাঁর একমাত্র ছেলে তন্ময় পুরসভার অস্থায়ী সাফাই-কর্মী। বিজেপির স্থানীয় নেতাদের দাবি, এলাকার এক তৃণমূল নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল পূর্ণেন্দুর। সেই সুবাদে তিনি সরকারি প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে স্থানীয় কিছু বাসিন্দার কাছ থেকে ১৮ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশও সে দাবি সমর্থন করেছেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের নেতা-কর্মীদের ‘কাটমানি’ ফেরত দেওয়ার কথা বলতেই পূর্ণেন্দুর বাড়িতে টাকা চাইতে হাজির হন অনেকে। পূর্ণেন্দুবাবুর স্ত্রী সন্ধ্যাদেবী স্বামীর টাকা নেওয়ার কথা মানেননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘উনি নির্বিরোধী মানুষ বলে এলাকার কিছু বিজেপির লোক ওঁকে বিপদে ফেলতে চাইছিল। অশান্তি এড়াতে তাদের কিছু টাকা দিতেও রাজি ছিলাম আমরা।’’ সে টাকা দেওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার। কিন্তু পূর্ণেন্দুবাবু সে সময় ছিলেন কলকাতায় মেয়ের বাড়িতে। সন্ধ্যাদেবী বলেন, ‘‘ফের কিছু লোক টাকা চেয়ে হুজ্জতি করেছে, আমাদের বাড়ি থেকে বার করে দিয়েছে শুনে উনি ফিরে আসছিলেন। কিন্তু রাতে না ফেরায় চিন্তা বাড়ে। এ দিন সকালে খবর পাই, সব শেষ। আমার ধারণা, ওই সব লোকেরাই ওঁকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy