Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Sisir Adhikari

প্রকাশ্য মঞ্চে শিশিরের পা ছুঁয়ে প্রণাম, তাঁকে ‘গুরুদেব’ বলায় শো-কজ় তৃণমূল পুরপ্রধানকে

তৃণমূল সূত্রে খবর, বেশ কিছু দিন ধরেই সুবল নিজেও দলের ভিতরে কোণঠাসা। তাঁকে পুরপ্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলেও দলের অন্দরে জোর চর্চা চলছে।

sisir adhikari

শিশির অধিকারী। —ফাইল চিত্র।

কেশব মান্না
কাঁথি শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:২৭
Share: Save:

তিনি নাম-কা-ওয়াস্তে তৃণমূল সাংসদ। বরং তাঁকে দেখা যায় তাঁর মেজো ছেলে শুভেন্দু অধিকারীর দল বিজেপির অনুষ্ঠানে বা মঞ্চে। তাঁর সাংসদ পদ বাতিলের জন্য লোকসভার স্পিকারের কাছে আবেদনও জানিয়েছে তৃণমূল। প্রকাশ্য মঞ্চে এ হেন শিশির অধিকারীর পা ছুঁয়ে প্রণাম করে নতুন বিতর্কে ইন্ধন দিলেন কাঁথির পুরপ্রধান, তৃণমূলের সুবল মান্না। শিশিরকে নিজের ‘গুরুদেব’ বলেও সম্বোধন করেন সুবল। বৃহস্পতিবার বিকেলের এই ঘটনার কথা জানাজানি হয় ২৪ ঘণ্টা পরে, শুক্রবার বিকেলে। তার কিছু ক্ষণের মধ্যে রাতেই সাংবাদিক বৈঠক করে জেলা সভাপতি পীযূষ পন্ডা জানান, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে শো-কজ় করা হয়েছে সুবলকে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। এর পরে সুবল আর ফোন ধরছেন না। তবে সূত্রের খবর, ঘনিষ্ঠমহলে তিনি জানিয়েছেন, এখনও শো-কজ়ের কোনও চিঠি পাননি।

তৃণমূল সূত্রে খবর, বেশ কিছু দিন ধরেই সুবল নিজেও দলের ভিতরে কোণঠাসা। তাঁকে পুরপ্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলেও দলের অন্দরে জোর চর্চা চলছে। তবে-কি পরিস্থিতি আঁচ করে তিনি নিজেই বিজেপিতে যাওয়ার রাস্তা খুলে রাখতে চাইছেন? আপাতত পুরপ্রধানের শিশির-প্রণাম ও স্তুতিতে সেই রকম আলাদা অঙ্ক দেখছে রাজনৈতিক মহল।

বৃহস্পতিবার বিকেলে কাঁথি-১ ব্লকের সাবাজপুট এলাকায় একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন শিশির এবং সুবল দু’জনেই। মঞ্চে শিশিরের পা ছুঁয়ে প্রণাম করে সুবল বলেন, ‘‘প্রথমে পূজ্যপাদ শিশির অধিকারীকে আমার প্রণাম। বাবা-মা জন্ম দিয়েছেন। তবে আজ এই জায়গায় যে পৌঁছেছি, তার জন্য পূজ্যপাদ আমার গুরুদেব শিশির অধিকারী।”

জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের অনেকেই তলে-তলে শুভেন্দুর সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন বলে শোনা যাচ্ছে। সেই তালিকায় তৃণমূল অলিখিত ভাবে সুবলকে রেখেছে বলেও অনেকের মত। যদিও সুবল এ দিন বলেন, ‘‘শিশির অধিকারীকে বর্ষীয়ান হিসেবে সম্মান জানাতে প্রণাম করেছি। এটা নিয়ে কেউ যদি ভুল বোঝেন, কিছু বলার নেই।’’ একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, ‘‘উনি দীর্ঘদিনের পরিচিত ঠিকই। তবে স্ত্রী বিয়োগের পরেও শিশিরবাবুকে আমন্ত্রণ জানাইনি। যদিও দিব্যেন্দু (শিশিরের আর এক পুত্র) খোঁজখবর নিয়েছিলেন।’’ এ বিষয়ে শিশিরের মন্তব্য, “সব জায়গায় রাজনীতি খোঁজা ঠিক নয়।”

পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের ভারপ্রাপ্ত নেতা কুণাল ঘোষ আবার বলেন, “সামাজিক অনুষ্ঠানে বয়সে প্রবীণ কাউকে প্রণাম করার মধ্যে খারাপ কিছু দেখছি না। তবে শিশির অধিকারীর রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে যে হেতু একটা প্রশ্ন আছে, তাই তাঁকে নিয়ে কেউ যদি মনের কথা বেশি করে প্রকাশ করে ফেলেন, সেটা একেবারেই অনুচিত।” সেই সঙ্গেই সুবলের উদ্দেশে কুণালের কটাক্ষ, “তাঁর ‘গুরুদেব’কে জিজ্ঞাসা করা উচিত ছিল, কেন উনি দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।”

পুরপ্রধানের আচরণকে সমর্থন করে স্থানীয় বিধায়ক তথা বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরূপ দাস বলেন, “শিশির অধিকারী দীর্ঘদিনের রাজনীতিবিদ। রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে তিনি শ্রদ্ধার মানুষ।”

অন্য বিষয়গুলি:

Sisir Adhikari TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy