কৃপাময় ঘোষ।
কড়া নিরাপত্তায় তখন অনুব্রত মণ্ডলকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেই নিরাপত্তার বেষ্টনী ‘পেরিয়ে’ তাঁর কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন বীরভূমের তৃণমূল ছাত্র নেতা কৃপাময় ঘোষ। এই কৃপাময়ের নামে এ বারে অভিযোগ উঠেছে, বীরভূম এবং পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম দুই ভোটার তালিকাতেই নাম রয়েছে তাঁর। তৃণমূলের দাবি, এটা দলের নয়, নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। প্রশাসনের দাবি, বিষয়টি অবিলম্বে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃপাময়ের গ্রামের বাড়ি আউশগ্রামের রামনগর পঞ্চায়েতের মালিয়ারায়। পরিজনেরা এখনও সেখানেই থাকেন। তবে ২০-২৫ বছর আগে বাবা-মায়ের সঙ্গে বোলপুরে চলে যান কৃপাময়। আউশগ্রামেও তাঁর যাতায়াত রয়েছে। বিরোধীদের দাবি, কৃপাময় এখন বোলপুরের বাঁধগোড়ার বাসিন্দা এবং বোলপুর বিধানসভার ভোটার তালিকার ২৫০ অংশের ২৬ ক্রমিক নম্বরে তাঁর নাম রয়েছে। ১৮০ বাঁধগোড়া কালীকৃষ্ণ হাইস্কুলের ৩ নম্বর কক্ষের বুথের ভোটদাতা তিনি। বিরোধীদের অভিযোগ, একই সঙ্গে আউশগ্রাম বিধানসভার ২৩ নম্বর অংশের ১২১ নম্বর ক্রমিক নম্বরেও তাঁর নাম রয়েছে। মালিয়ারা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বুথের ভোটদাতা তিনি। বিষয়টি নিয়ে কৃপাময়ের সঙ্গে বারবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরেননি তিনি। মেসেজেরও কোনও উত্তর দেননি। তাঁর কাকা, মালিয়ারার বাসিন্দা সুনীল ঘোষ বলেন, ‘‘ওঁরা ২০-২৫ বছর আগেই গ্রাম থেকে বোলপুর চলে গিয়েছেন। ভোটার তালিকায় কেউ নাম না কাটায় হয়তো নাম থেকে গিয়েছে। তবে এখানে ওঁরা ভোট দিতে আসেন না।’’ বছর দুয়েক আগে পরিবারের একজনের অন্ত্যেষ্টিতে যোগ দিতে শেষ বার তাঁরা এসেছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি।
ওই দিন অনুব্রতের সঙ্গে কৃপাময় ও তুফান মির্ধার কথোপকথন পরিকল্পনা করেই আয়োজন করা হয়েছিল বলে দাবি বিরোধীদের। জানা গিয়েছে, কৃপাময় ওই দোকানে আগে থেকেই হাজির ছিলেন। প্রাতরাশের বিলও তিনি মেটান বলে দাবি। মৎস্য বিভাগের কর্মী কৃপাময়ের গাড়ির ব্যবসা রয়েছে। বোলপুরের তৃণমূল কার্যালয়ের দেখাশোনার দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। অনুব্রতের নানা সম্পত্তির দেখভাল করতেন বলেও জানা যায়। বিজেপি নেতা দেবব্রত মণ্ডল, সিপিএম নেতা সুদীপ্ত দত্তদের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের লোক বলেই ভোটার তালিকা থেকে নাম কাটা হয়নি ওঁর।’’ যদিও তৃণমূলের আউশগ্রাম-২ ব্লক সভাপতি রামকৃষ্ণ ঘোষের দাবি, ‘‘কী করে কৃপাময় ঘোষের নাম দু’জায়গায় রয়েছে, আমরা বলতে পারব না। এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। এটা নির্বাচন কমিশনের কর্মীদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।’’ বিডিও (আউশগ্রাম-২) গোপাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy