প্রতীকী ছবি।
প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার অভিযোগ দায়ের হল ‘বনগাঁর চন্দন’-এর বিরুদ্ধে।
গোপাল মাহাতো ওরফে সুকান্ত নামে ওই নেতা তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার তফসিলি সেলের সভাপতি। বনগাঁ হাইস্কুলে পড়ান তিনি। স্ত্রী পঞ্চায়েত সদস্য। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ শহরের শিমুলতলার বাসিন্দা প্রশান্ত কুণ্ডু মঙ্গলবার বনগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, সুকান্ত তাঁর মেয়েকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ৬ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। চাকরি পায়নি মেয়ে। সুকান্ত ফেরত দিয়েছেন মাত্র ১০ হাজার। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সুকান্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। বার বার ফোন করা হলেও রিং বেজে গিয়েছে। এ বিষয়ে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘উনি দোষী না নির্দোষ, তা আদালতে বিচার হবে। এ বিষয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই। তবে চাকরি পেতে যাঁরা বেআইনি পথে টাকা দিয়েছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও তদন্ত হওয়া উচিত। তাঁরাও দোষী।’’
দিন কয়েক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় সুকান্তের নাম না করে ‘বনগাঁর চন্দন’ অ্যাখ্যা দিয়ে কয়েক জন টাকা নেওয়ার অভিযোগ তোলেন। তার আগে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাসের যে ভিডিয়ো সামনে এসেছিল, সেখানে জনৈক রঞ্জনের নাম করে তিনি অভিযোগ করেন, স্কুলে চাকরি দেওয়ার নাম করে বহু লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন বাগদার বাসিন্দা রঞ্জন। টাকা নিয়ে তিনি কারও সঙ্গে প্রতারণা করেননি বলে দাবি করে উপেন ভিডিয়োর নাম দিয়েছিলেন, ‘রঞ্জন সৎ।’শিক্ষকতার চাকরিতে দুর্নীতির অভিযোগে তখন রাজ্য রাজনীতি সরগরম। হাই কোর্ট কিছু দিনের মধ্যেই জানায়, প্রাথমিকে নিয়োগ-দুর্নীতি তদন্ত করে দেখুক সিবিআই। উপেন যাঁকে ‘রঞ্জন’ বলে অভিহিত করেছিলেন, সেই চন্দন মণ্ডলকে প্রয়োজনে জেরা করতে পারেন তদন্তকারীরা, জানায় আদালত। চন্দন অবশ্য অধরাই।
এ দিকে, এর কিছু দিনের মধ্যেই অন্য ভিডিয়োটি সামনে আসে (তার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার)। সুকান্ত সে সময়ে দাবি করেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি আদিবাসীদের নিয়ে কাজ করেন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি অপপ্রচার করছে।
মঙ্গলবার বনগাঁ থানায় দায়ের করা অভিযোগে প্রশান্ত দাবি করেছেন, তাঁর মেয়ে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষিকার চাকরির জন্য আবেদনপত্র পূরণ করেছিলেন। পেট্রাপোলের বাসিন্দা সুকান্ত তাঁদের জানান, চাকরি পাইয়ে দেবেন। এ জন্য তাঁকে ৬ লক্ষ টাকা দিতে হবে। প্রশান্তের দাবি, ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সুকান্ত তাঁর বাড়িতে গিয়ে স্ট্যাম্প পেপারে চুক্তিপত্র করে ৬ লক্ষ টাকা নেন। কথা ছিল, চাকরি দিতে না পারলে ৩১ মে, ২০২২ তারিখের মধ্যে সুকান্ত টাকা ফেরত দেবেন।
প্রশান্ত জানান, চাকরি হয়নি মেয়ের। চলতি বছরের ১০ মে সুকান্ত মোবাইল ওয়ালেটের মাধ্যমে দু’দফায় ১০ হাজার টাকা ফেরত দেন। বাকি টাকার চেক দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই অ্যাকাউন্টে টাকা ছিল না। প্রশান্তের দাবি, বাকি টাকা ফেরত চাইলে সুকান্ত তাঁদের বিষয়টি চেপে যেতে বলেন।
সিপিএমের বনগাঁ শহর এরিয়া কমিটির সদস্য পীযূষকান্তি সাহা জানান, সুকান্তের বিরুদ্ধে স্কুলে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার অভিযোগ অনেক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল। তবে লিখিত কোনও অভিযোগ ছিল না এত দিন। বিজেপি নেতা তথা বনগাঁ পুরসভার কাউন্সিলর দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘সবে এক জন অভিযোগ করেছেন। শীঘ্রই আরও যাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পাননি, তাঁরাও অভিযোগ করবেন।’’ বনগাঁ শহর কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি সাধন ঘোষ বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের উচিত ওঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা। তা হলে শিক্ষক-নিয়োগে দুর্নীতির আরও গোপন তথ্য সামনে আসবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy