বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (বাঁ দিকে), তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাবা অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়ের করা মানহানির মামলায় আগামী ১ ডিসেম্বর রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে হাজির হতে হবে আলিপুর আদালতে। শুক্রবার এমনই নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
শুক্রবার রাত পর্যন্ত শুভেন্দু এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে দেখার, তিনি ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আবেদন জানান কি না।
মামলাকারী অমিতের অভিযোগ, গত ২০ জুন সংবাদমাধ্যমের সামনে শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, তিনি (অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়) এক হাজার কোটি টাকার মালিক। তাতেই আপত্তি অমিতের। তাঁর দাবি, শুভেন্দু অসত্য এবং মিথ্যা অভিযোগ করছেন। অমিতের আরও দাবি, এর আগে তিনি তাঁর আইনজীবী মারফত শুভেন্দুকে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলে নোটিস পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু শুভেন্দু সেই নোটিস অগ্রাহ্য করেছেন। এই অবস্থায় শুভেন্দুর ‘মিথ্যা’ অভিযোগের প্রেক্ষিতে সমাজে তাঁর মানহানি হয়েছে। কারণ অমিতের দাবি, তাঁর পরিবারের অনেকে রাজনীতিতে থাকলেও তিনি সম্পূর্ণ ভিন্ন জগতের মানুষ। রাজনীতির সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। শুভেন্দু উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁর মানহানি করেছেন, এই অভিযোগে তিনি আলিপুর মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলায় আগামী ১ ডিসেম্বর শুভেন্দুকে সশরীরে আদালত কক্ষে হাজির থাকার নির্দেশ জারি করেছেন বিচারক।
প্রসঙ্গত, ২০২১-এর ভোটের আগে শুভেন্দুর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই অভিষেক ও তাঁর মধ্যে সম্পর্ক অন্য পর্যায়ে পৌঁছে যায়। দু’তরফেই আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ চলতে থাকে। সেই সময় শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, কালীঘাটেও পদ্ম ফোটানোর। কিন্তু ভোটের ফলে দেখা যায়, তৃতীয় বারের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। সেই লড়াইয়ে একে বারে সামনের সারিতে থেকে দলকে নেতৃত্ব দেন অভিষেক। অন্য দিকে, নন্দীগ্রামে মমতাকে হারানোর সুবাদে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হন শুভেন্দু। তার পর বাগ্যুদ্ধের মাত্রাও লাফিয়ে লাফিয়ে চড়েছে। গরু, কয়লা পাচারকাণ্ডে একে অপরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। রাজনীতির গণ্ডি পেরিয়ে সেই লড়াই ঢুকে পড়েছে দুই বাড়ির অন্দরেও।
গত রবিবার অভিষেকের ছেলে আয়াংশের জন্মদিন পালন নিয়ে একটি টুইট করেছিলেন শুভেন্দু। দাবি করেছিলেন, দক্ষিণ কলকাতার বিলাসবহুল হোটেলে নাকি বিপুল পুলিশি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত হয়েছে অভিষেকের ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে। সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূল থেকে শুভেন্দুর দাবিকে নস্যাৎ করে জানানো হয়, তেমন কোনও অনুষ্ঠানই সে দিন ছিল না আলিপুরে। ওই হোটেলে অনুষ্ঠান ছিল একটি ফুটবল ক্লাবের। অভিষেক যে ক্লাবের অন্যতম প্রধান পৃষ্ঠপোষক। পাশাপাশি, শুভেন্দু ‘এবি (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) ফোবিয়া’য় ভুগছেন বলেও দাবি করেন তৃণমূল মুখপাত্র তথা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। বিরোধী দলনেতার মানসিক সুস্থতা কামনা করে তাঁকে অভিষেকের ছবি দেওয়া ‘গেট ওয়েল সুন’ কার্ড দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে যুব তৃণমূল। সোমবার তা নিয়ে যুব তৃণমূল কর্মীরা পৌঁছে যান শুভেন্দুর কাঁথির বাড়ি ‘শান্তিকুঞ্জ’-এর সামনে। তা নিয়ে শুভেন্দু কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন, সিবিআই তদন্তও চান। আদালতের নির্দেশে এখন ‘শান্তিকুঞ্জ’-এর সামনে তৃণমূলের জমায়েত নিষেধ। সেই আবহেই আবার একটি নতুন মামলার কথা প্রকাশ্যে এল শুক্রবার। জানা গেল, অভিষেকের বাবার দায়ের করা মানহানির মামলায় আগামী ১ ডিসেম্বর আলিপুর আদালতে হাজির হতে হবে শুভেন্দুকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy