Advertisement
E-Paper

ভোটার তালিকায় ‘ষড়যন্ত্র’, আশঙ্কা রাজ্যপালকে নিয়েও, সতর্ক-বার্তা তৃণমূলে

সম্প্রতি দিল্লির ভোটের ফলপ্রকাশের পরে তালিকায় কারচুপির অভিযোগে সরব হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

রবিশঙ্কর দত্ত

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:১৭
Share
Save

রাজ্যে ভোটার তালিকা নিয়ে বড় রকমের ‘ষড়যন্ত্রে’র আশঙ্কা করছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সূত্রে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়েও গুরুতর আশঙ্কার কথা জানিয়ে দলের জনপ্রতিনিধি এবং নেতাদের সতর্ক করে বার্তা দেওয়া হয়েছে।

দেশের একাধিক জায়গায় ভোটার তালিকা নিয়ে বিরোধীরা ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে। তবে সম্প্রতি দিল্লির ভোটের ফলপ্রকাশের পরে তালিকায় কারচুপির অভিযোগে সরব হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তার পরেই এ ব্যাপারে দলের সব বিধায়ক, সাংসদ ও জেলার নেতৃত্বকে সতর্ক করেছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই সতর্ক-বার্তায় বলা হয়েছে, দিল্লির মতোই এ রাজ্যেও ভোটার তালিকায় রাজ্যের বাইরের বাসিন্দাদের নাম তুলতে একটি ‘মডিউল’ তৈরি করা হচ্ছে। এই কাজে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক অনিয়ম সংক্রান্ত তদন্তের দায়িত্বে থাকা সংস্থা ইডি-রও উল্লেখ আছে। বলা হয়েছে, ইতিমধ্যেই ইডি আধিকারিকদের রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। সতর্ক-বার্তায় কারও নাম না করলেও এই ‘কারচুপি’র আশঙ্কা যে বিজেপিকে ঘিরে, তা স্পষ্ট।

কী এই ‘মডিউল’? দলীয় নেতৃত্বের বার্তায় বলা হয়েছে যে, রাজ্যের ভোটার তালিকায় ভিন্ রাজ্যের মানুষের নাম তোলার এই পরিকল্পনা খুব নির্দিষ্ট। একেবারে ওয়ার্ড ধরে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এবং গোটা ওয়ার্ডের ভোটার তালিকা বদলে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে বাইরে থেকে ভোটারদের নাম ইত্যাদি এনে। এই বার্তায় দলের নীচের তলায় ভোটার তালিকা সংক্রান্ত কাজের সঙ্গে যুক্তদের আরও দু’টি তথ্য দিয়ে সতর্ক থাকতে বলেছে তৃণমূল। তাতে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকারের অফিসারদের মধ্যে অনুগামী একটি অংশ তৈরি করে এই ‘ভোট- পরিকল্পনা’ রূপায়িত করা হতে পারে।

দিল্লি ও মহারাষ্ট্র নিয়ে তৃণমূল যে অভিযোগ তুলেছিল, তা মূলত অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে ভোটার তালিকায় নাম তোলার প্রক্রিয়া নিয়ে। তাদের সন্দেহ, ওই প্রক্রিয়াতেই গোলমাল করে প্রকৃত ভোটারদের বদলে নতুন নাম তোলা হচ্ছে। কিন্তু অনলাইনে আবেদন করা হলেও এ ব্যাপারে আবেদনকারীকে সশরীরে সরকারি শুনানিতে হাজির হতে হয়। রাজ্য প্রশাসনের সেই আধিকারিকেরা নথিপত্রে সন্তুষ্ট হলেই সেই আবেদনকারীর নাম ভোটার তালিকায় ওঠে। তাই এই কাজে রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের একাংশ সম্পর্কেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

তৃণমূল নেতৃত্বের এই বার্তার একেবারে শেষে বলা হয়েছে, কয়েক মাসের মধ্যেই ‘ভোট-পরিকল্পনা’ কার্যকর করতে সক্রিয় হয়ে উঠবেন রাজ্যপালও। দীর্ঘ বিবাদের পরে সম্প্রতি কয়েকটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ও রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের উপস্থিতিকে দু’তরফের সম্পর্ক নিয়ে নুতন চর্চা শুরু হয়েছিল। কিন্তু তাঁর ভবিষ্যৎ কর্মসূচি নিয়ে শাসক দলের সর্বোচ্চ স্তরের ধারণা যে একেবারে বিপরীত, তা স্পষ্ট হয়েছে এই বার্তায়। প্রসঙ্গত, দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত আপের হয়ে কিছু কাজ করেছিল তৃণমূলের পরামর্শদাতা সংস্থা। ফল প্রকাশের আগে ও পরে তারা সেখানকার নির্বাচন বিশ্লেষণ করে তৃণমূল নেতৃত্বকে দু’টি বিস্তারিত রিপোর্ট দিয়েছে।

শীর্ষ নেতৃত্বের পাঠানো এই বার্তা সম্পর্কে দলের এক রাজ্য নেতা বলেন, ‘‘এই আশঙ্কার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। নানা ফাঁক তৈরি করে অনলাইনের আবেদনকারীদের নাম তোলা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে নজরদারিই একমাত্র রাস্তা। সেই কাজ করতে আমরা আপাতত বিধায়কদের সঙ্গে কথাবার্তা বলা শুরু করেছি।’’ বিজেপি-সহ বিরোধীদের অবশ্য প্রশ্ন, ভোটার তালিকায় সংশোধন বা সংযোজন স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা ছাড়া সম্ভব নয়। তা হলে কি রাজ্য প্রশাসনেই শাসক দলের অনাস্থা প্রকট হচ্ছে?

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC CV Ananda Bose

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}