Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
R G Kar Hospital Incident

দলের দুই ‘স্তম্ভ’ নড়েছে, চিন্তায় রয়েছে শাসক শিবির

ঘটনার পর থেকেই দলের দীর্ঘদিনের নির্ভরযোগ্য দুই ‘ভাঁড়ার’-এ টান পড়েছে। দুই অংশের মনোভাবে দলকে কতটা সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে, তা নিয়ে হিসেবও শুরু করেছেন দলীয় নেতৃত্ব।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।

রবিশঙ্কর দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:২৭
Share: Save:

রাস্তায় নেমে আসা নাগরিক সমাজের বিক্ষোভ এবং সংস্কৃতি জগতের অসন্তোষ, আর জি কর হাসপাতালের ঘটনায় এই দুই-ই তৃণমূল কংগ্রেসের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। এই ঘটনার পর থেকেই দলের দীর্ঘদিনের নির্ভরযোগ্য এই দুই ‘ভাঁড়ার’-এ টান পড়েছে। দুই অংশের এই মনোভাবে দলকে কতটা সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে, তা নিয়ে হিসেবও শুরু করেছেন দলীয় নেতৃত্ব।

তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সরকারের দিকে আঙুল তুলেছে নাগরিক সমাজ। প্রাক্তন আমলা, চিকিৎসক ও শিক্ষকদের একটা বড় অংশ সরকার ও প্রশাসনের ভূমিকায় প্রকাশ্যেই নিজেদের অসন্তোষ স্পষ্ট করেছেন। এই অংশের প্রতিবাদে কিছুটা ভিন্ন মাত্রা দেখছেন শাসক নেতাদের একাংশ। বিশেষ করে, জহর সরকারের মতো অবসরপ্রাপ্ত আমলা যে ভাবে তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেছেন, তা নিছকই ‘দলত্যাগ’ বলে মনে করছেন না তাঁরা। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘এই রকম অনেকেই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছেন। বিচার চেয়েছেন ঠিকই কিন্তু তাঁরা যে রাজ্য সরকারের উপরে আর আস্থা রাখতে পারছেন না, নানা ভাবে সেই ইঙ্গিতই মিলেছে মাস দেড়েকের মিছিল, জমায়েত ইত্যাদিতে।’’

প্রকাশ্যে অবশ্য এই অংশ সঙ্গ-ছাড়া হয়েছে বলে স্বীকার করছে না তৃণমূল। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘এই রকম ভয়ঙ্কর ঘটনায় মানুষের প্রতিক্রিয়া হওয়া স্বাভাবিক। যাঁরা বিচার চেয়ে পথে নেমেছেন, তাঁরা পুরোপুরি সরকারের বিরোধী হয়ে গিয়েছেন, তা মনে করি না।’’ তবে বিভিন্ন সময়ে এই অরাজনৈতিক ব্যক্তি ও শিল্পীদের জনপ্রিয়তা ভোটের পরীক্ষায় ব্যবহার করে সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল। জয়প্রকাশের কথায়, ‘‘যে দু-এক জন দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন, তাঁদের উদ্দেশ্য, লক্ষ্য বোঝা কঠিন!’’

শিল্প-সংস্কৃতি জগতও এ বার সরকার সম্পর্কে নিজেদের ‘অসন্তোষ’ সামনে নিয়ে এসেছে। যে হুমকি-সংস্কৃতি নিয়ে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে তোলপাড় হয়েছে, তা নিয়ে সরব টালিগঞ্জের বাংলা সিনেমা জগতের একটা বড় অংশও। মেডিক্যাল কলেজের মতো এখানেও শাসক দলের নিয়ন্ত্রণে থাকা সংগঠন ও নেতাদের দিকে আঙুল উঠেছে। ক্ষমতায় আসার আগে থেকে যে জনপ্রিয় শিল্পীদের গত তিন দশকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে-পিছনে দেখা গিয়েছে, তাঁরাও পথে নেমে মন-বদলের আভাস দিয়েছেন। সেই সূত্রেই শাসক-বিরোধী অংশের সঙ্গে এক সুরে তাঁরা মুখ খুলেছেন। এবং সিনেমা জগৎ থেকে আসা অভিনেতা সাংসদ, বিধায়কেরা পর্যন্ত সঙ্কটের সময়ে দলকে কোনও ‘সাহায্য’ করতে পারেননি। টালিগঞ্জের ভিতরে দলের একাংশের ‘ভূমিকা’ নজরে এসেছে শীর্ষ নেতৃত্বের। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এই রকম কয়েকটি ক্ষেত্রে সক্রিয় রয়েছে। তাদের কাজকর্মের ফল ভুগতে হচ্ছে দলকে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে। সতর্ক না-হলে পদক্ষেপ করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC R G Kar Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy