Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

মমতার মামার বাড়ির গ্রামে পিছিয়ে তৃণমূল

শুধু ওই গ্রামই নয়, কুশুম্বা গ্রাম পঞ্চায়েতেরও অধিকাংশ বুথে বিজেপি ‘লিড’ পেয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের ফল অনুযায়ী, এই পঞ্চায়েতে এ বার তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়ের থেকে তিন হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন বিজেপি প্রার্থী দুধকুমার মণ্ডল।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৯ ০৫:৫২
Share: Save:

বীরভূমে দু’টি লোকসভা আসনেই তৃণমূল জয়ী হলেও বিজেপি এগিয়ে আছে বহু জায়গায়। এমনকি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামার বাড়ি, রামপুরহাট থানার কুশুম্বা কুশুম্বা গ্রামেরই চারটি বুথে তৃণমূল পিছিয়ে।

শুধু ওই গ্রামই নয়, কুশুম্বা গ্রাম পঞ্চায়েতেরও অধিকাংশ বুথে বিজেপি ‘লিড’ পেয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের ফল অনুযায়ী, এই পঞ্চায়েতে এ বার তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়ের থেকে তিন হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন বিজেপি প্রার্থী দুধকুমার মণ্ডল। কুশুম্বা গ্রামের ২৯ নম্বর বুথে বিজেপি যেখানে পেয়েছে ৩৬০টি ভোট, সেখানে তৃণমূলের ঝুলিতে ২৩৮টি ভোট। ৩০ নম্বর বুথে বিজেপি পেয়েছে ৩৭৬টি ভোট। আর তৃণমূল পেয়েছে ১৮৪টি ভোট। ৩১ নম্বর বুথে বিজেপি পেয়েছে ৩৫৪টি ভোট। তৃণমূল ২১৩টি। একই ভাবে ৩২ নম্বর বুথে বিজেপি পেয়েছে ৪৩৮টি ভোট, তৃণমূল পেয়েছে ২২৬টি ভোট।

কুশুম্বা গ্রামের সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্কের বিষয়টি বীরভূমে একাধিক প্রশাসনিক বৈঠক এবং ভোটের প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছে। নিজের লেখায় কুশুম্বার কথা উল্লেখ করেছেন বহুবার। দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল থেকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বা জেলার অন্য নেতারাও ভোট চাইতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর জন্মস্থান হিসেবে কুশুম্বার কথা বলেন। লোকসভা নির্বাচনের কিছু আগেই একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে কুশুম্বায় ঘুরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রীর মামাতো ভাই নীহার মুখোপাধ্যায় এখন বীরভূম জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ। তাঁর স্ত্রী পম্পাদেবী রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য। এর আগে তিনি ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন। জেলার এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর মামাবাড়ি হওয়ার সুবাদে বীরভূম জেলা পরিষদ বা তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের সৌজন্যে কুশুম্বা গ্রামে উন্নয়ন হয়েছে যথেষ্ট। কিন্তু, তাতেও লাভ হল না। এর পরে নেত্রী এখানে এলে তাঁর কাছে কী জবাব দেব, তা ভেবে পাচ্ছি না।’’ নীহারবাবুও বলছেন, ‘‘জেলা পরিষদ থেকে পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েত এবং উন্নয়ন পর্ষদ— প্রত্যেকটি বিভাগ থেকে এখানকার সার্বিক উন্নয়ন করা হয়েছে। নতুন রাস্তা, নিকাশি নালা, সাংস্কৃতিক মঞ্চ কোনটা হয়নি! তার পরেও এই ফল? এর কোনও উত্তর আমরা পাচ্ছি না।’’

কুশুম্বা যে বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত, সেই রামপুরহাটেও এ বার লোকসভা ভোটের ফল অনুযায়ী বিজেপি এগিয়ে রয়েছে তৃণমূলের চেয়ে। রামপুরহাটের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘শুধু কুশুম্বা গ্রাম পঞ্চায়েত নয়, আমার বিধানসভা এলাকাতেও সার্বিক ফল কেন খারাপ হয়েছে, সে ব্যাপারে পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।’’

রামপুরহাটের বাসিন্দা তথা বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি শুভাশিস চৌধুরীর অবশ্য দাবি, ‘‘আসল কারণটা তৃণমূল নেতারা বেশ ভালই জানেন। তাঁদের ঔদ্ধত্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন না দিতে দেওয়া থেকে দুর্নীতির জন্যই এলাকার মানুষ তৃণমূলের প্রতি ক্ষুব্ধ। সেই ক্ষোভই ভোটের ফলে দেখা গিয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Rampurhat Satabdi Roy Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy