— প্রতীকী চিত্র।
আদালত আগেই বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাওয়ের কর্মসূচিতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের সেই নির্দেশ আসার পর কর্মসূচির ধরন বদলের ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। এ বার সেই কর্মসূচির দিন বদল করে দিল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। বুধবার বিধানসভায় এই সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, “৫ তারিখে আমাদের যে কর্মসূচি ছিল সেটা ৬ তারিখে হবে। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে অবস্থান হবে। সব ব্লকেই হবে, কেন্দ্রীয় সরকার যে বঞ্চনা করছে। তার প্রতিবাদে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা প্রতিবাদে শামিল হব।” এই কর্মসূচি এক দিন পিছিয়ে যাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দলগত ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রবিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব।” বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, আদালতের হস্তক্ষেপের কারণেই কর্মসূচির ধরন-সহ দিন বদল করতে বাধ্য হয়েছে তৃণমূল। জবাবে ফিরহাদ বলেছেন, “কোর্টের নির্দেশের সঙ্গে আমাদের এই কর্মসূচির কোনও সম্পর্ক নেই। গণতান্ত্রিক দেশে গণতন্ত্র মেনে আমরা যদি কোনও কর্মসূচি করি, তা হলে কোর্টের কী সম্পর্ক আছে?” বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, ৬ অগস্ট ব্লক স্তরে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবে তৃণমূল।
গত ২১ জুলাই ধর্মতলার শহিদ দিবসের জনসভা থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, ৫ অগস্ট বুথ থেকে রাজ্য স্তরের বিজেপি নেতাদের বাড়ি ৮ ঘণ্টা ঘেরাও করার কথা। যদিও ওই সভাতেই নিজের বক্তৃতার সময় তা সংশোধন করে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন, কর্মসূচি হবে ব্লক স্তরে। ঘেরাও শব্দটি ব্যবহার করা হবে না বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে বলেছিলেন, কাউকে ঘেরাও করা যাবে না। বরং ১০০ মিটার দূরে বসে শান্তিপূর্ণ ভাবে অবস্থান করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে নিয়ে আদালতে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চে শুনানি হয়। আদালত ওই কর্মসূচিতে স্থগিতাদেশ দেয়। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘কেউ যদি বলেন, কাল হাই কোর্ট ঘেরাও করা হবে, তবে কি সরকার বা পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করবে না? কেউ যদি কোথাও বোমা রাখা হবে বলে, তবে কি সরকার বা পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করবে না?’’ রাজ্যের আইনজীবীকে তিনি প্রশ্ন করেন, এই ঘেরাও নিয়ে রাজ্য সরকার বা পুলিশ প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করেছে কি না। কিন্তু প্রধান বিচারপতির সে প্রশ্নের কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি রাজ্যের আইনজীবী। তখনই কর্মসূচিতে স্থগিতাদেশ দেয় আদালত।
ওই দিনই তৃণমূলের তরফে বর্ষীয়ান নেতা তাপস রায় সাংবাদিক বৈঠক করে কর্মসূচির ধরন বদলানোর কথা বলেছিলেন। কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের নির্দেশের পরেই বিধানসভা ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, ‘‘কারও অসুবিধা না করে, দলীয় সংস্কৃতি এবং শৃঙ্খলা মেনে আমাদের কর্মীরা বাংলার প্রতিটি ব্লকে বাংলার প্রতি বঞ্চনার বিরুদ্ধে, অর্থনৈতিক অবরোধের বিরুদ্ধে আগামী ৫ অগস্ট সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সেই কর্মসূচি পালন করবে।’’ ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে অভিষেকের ঘোষণার পরেই মমতা বলেছিলেন, ‘‘কর্মসূচি হবে ব্লক স্তরে।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টা হবে প্রতীকী। ঘেরাও শব্দটা বলছি না।’’ সেই কথা স্মরণ করিয়ে সোমবার তাপস বলেন, ‘‘হাই কোর্টের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এটা বলতে চাই, কারা পিটিশন করেছিলেন এটা জানার দরকার নেই। সে দিনই অভিষেকের কর্মসূচি ঘোষণার পরে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী সেটিকে সংশোধন করেছেন।’’ এ বার সেই কর্মসূচির দিন বদল হয়ে গেল। কর্মসূচির দিন বদলের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে গোঘাটের বিজেপি বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক বলেন, “রাজ্য জুড়ে বিজেপি নেতা-কর্মীদের ঘেরাও করবে বলে উস্কানি দিয়েছিলেন ওদের নেতা। জানি না ওদের কর্মসূচি কী ভাবে হবে, তবে আমাদের বাড়ি ঘেরাও করতে এলে আমরাও পাল্টা ওদের ঘেরাও করব। কারণ, রাজ্যের বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে তৃণমূল নেতারা রাজ্যের মানুষের টাকা যে ভাবে অবাধে চুরি করেছেন, তার হিসাব আমরা পাল্টা ঘেরাও করে চাইব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy