সংসদীয় দলে গোলমালের জেরে বাতিলই হয়ে গেল বিধানসভায় তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠক। মঙ্গলবার বিধানসভায় বৈঠকে বসার কথা ছিল তৃণমূল পরিষদীয় দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির। চেয়ারম্যান শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বৈঠকের বার্তাও পাঠিয়েছিলেন কমিটির অন্য সদস্যদের। কিন্তু মঙ্গলবার তিনিই সদস্যদের ফোনে জানিয়ে দেন, বৈঠক হচ্ছে না। তাই বৈঠকের কারণে তাঁদের বিধানসভায় আসার প্রয়োজন নেই।
কেন বাতিল বৈঠক? তৃণমূলের মুখ্যসচেতক প্রবীণ বিধায়ক নির্মল ঘোষ বলেন, ‘‘আপাতত বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। যখন বৈঠক হবে, তখন আবার জানানো হবে।’’ কেন শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকটি অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত করা হল, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি প্রবীণ বিধায়ক। তবে তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, দিল্লিতে তৃণমূলের সাংসদদের যে লড়াই বেধেছে এবং যে ভাবে তা প্রকাশ্যে এসেছে, যে ভাবে প্রবীণ সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দলের দুই সাংসদ এবং এক মহিলা সাংসদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন বা সাংসদ সৌগত রায় যে ভাবে প্রকাশ্যে কল্যাণের বিরুদ্ধে অভিমত প্রকাশ করেছেন, তাতে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ‘অস্বস্তিতে’। দলের একাংশের বক্তব্য, তৃণমূল সাংসদেরা যে ভাবে প্রকাশ্যে পরস্পরবিরোধী মন্তব্য করে দলের শৃঙ্খলাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন, তার নজির সাম্প্রতিক কালে বড় একটা নেই। এমতাবস্থায় বিধায়কদের বিরুদ্ধে ‘শৃঙ্খলাভঙ্গ’ করার কারণে কড়া পদক্ষেপ করা সমীচীন হবে না। তাঁরা তখন সাংসদের ‘শৃঙ্খলা’ নিয়ে পাল্টা ‘অস্বস্তিকর’ প্রশ্ন তুলতে পারেন। তাই এখন পরিষদীয় দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠক স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।
বাজেট অধিবেশনের শেষ দু’দিন বিধায়কদের অধিবেশনে হাজিরা ‘বাধ্যতামূলক’ করেছিল তৃণমূল পরিষদীয় দল। কিন্তু তৃণমূল পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক নির্মল হুইপ জারি করার পরেও বিধানসভার অধিবেশনে অনুপস্থিত ছিলেন ৩০ জনেরও বেশি বিধায়ক। ওই তালিকায় ছিলেন মনোজ তিওয়ারি-সহ কয়েক জন মন্ত্রীও। তাঁদের বিরুদ্ধে ‘কঠিন পদক্ষেপ’ করার ইঙ্গিত দিয়েছিল তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। কিন্তু দিল্লিতে উদ্ভূত পরিস্থিতির সাপেক্ষে সেই বৈঠক অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে বলেই তৃণমূল পরিষদীয় দল সূত্রে খবর।